এস আলম পরিবহনের বাসের চাপায় পা হারানো সন্তানের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি

পা হারানো সন্তানকে নিয়ে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে মায়ের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: স্টার

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম পরিবহনের বাসের চাপায় পা হারানো সাড়ে পাঁচ বছরের সন্তানের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন তার মা। আজ বুধবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বাস চাপায় তার ছেলের এক পা কেটে ফেলতে হয়েছে। ছেলের চিকিৎসায় সাত লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তারা আর চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে পারছেন না।

বাঁশখালীর বাসিন্দা পূর্ণিমা দে বলেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বাঁশখালীর নাপোড়া বাজার এলাকায় স্কুলের গেটে দাঁড়িয়ে ছিল তার ছেলে অগ্ররাজ সিকদার। চট্টগ্রাম অভিমুখী বাসটি একটি অটোরিকশাকে ওভারটেক করতে গিয়ে তার ছেলের পায়ের ওপর উঠে যায়। এই অবস্থায় বাসটি তাকে কিছুদূর টেনেও নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে তার বাম পা কেটে ফেলতে হয় এবং ডান পায়ে প্লাস্টার করা হয়।

অভিযোগ করে তিনি বলেন, 'আমার স্বামী একজন কাঠ মিস্ত্রি। আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহায়তা নিয়ে ছেলের চিকিৎসার চেষ্টা করেছি। ক্ষতিপূরণের দাবিতে এস আলম পরিবহন কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি। কিন্তু চিকিৎসার জন্য কোনো সহায়তা বা ক্ষতিপূরণ দেয়নি তারা।'

'ছেলের চিকিৎসায় ইতোমধ্যে সাত লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আমাদের পক্ষে আর চিকিৎসার খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছে না।'

এ ব্যাপারে গত ৮ মার্চ বাঁশখালী থানায় মামলার আবেদন করা হলেও পুলিশ ২১ মার্চ মামলা রেকর্ড করে বলে দাবি করেন পূর্ণিমা দে।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন বলেন, যে তারিখে মামলা করা হয়েছিল সেদিনই তা রেকর্ড করা হয়। আমরা বাসটি জব্দ করেছি।

আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে জানিয়ে ওসি বলেন, 'আমরা ঘটনা দিনই তাদেরকে মামলা করতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা এস আলম পরিবহনের সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়ার কথা জানান। তারা বলেন, মামলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে তাদের কিছু সময় প্রয়োজন।'

যোগাযোগ করা হলে এস আলম পরিবহনের ইন-চার্জ আবেদ হোসেন জানান, দুর্ঘটনার বিষয়টি জানার পরপরই তারা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

তিনি বলেন, 'আমাদের কর্মকর্তারা শিশুটিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা তাকে এভারকেয়ার হাসপাতাল এবং তারপরে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমরা সেদিন অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া পরিশোধ করে দিয়েছিলাম।'

ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, 'আমরা প্রথমে তাদের দুই লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা রাজি হননি। আড়াই লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও তারা প্রত্যাখ্যান করেন। তারা সাত লাখ টাকা ও শিশুটির মায়ের জন্য একটি ব্যাংকে চাকরি দাবি করেন।'

তিনি আরও বলেন, মানবিক কারণে আমরা তাকে বাড়ির পাশে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চাকরির আশ্বাস এবং ক্ষতিপূরণ বাবদ তিন লাখ টাকার প্রস্তাব দিয়েছিলাম, কিন্তু তারা তাতেও রাজি হননি।'

Comments

The Daily Star  | English

Drafting new constitution can take a long time: Asif Nazrul

He proposed that the next parliament can act as constitutional authority and amend the 1972 constitution until a new one is enacted

1h ago