গাজীপুর সিটি নির্বাচন

আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত, আলোচনায় জাহাঙ্গীর

জাহাঙ্গীর যদি নির্বাচনে অংশ না নেন এবং কোনো মেয়র প্রার্থীকে সমর্থনও না দেন, তাহলেও আজমত উল্লাহর জিতে আসা কঠিন হবে।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে জাহাঙ্গীর ‘ফ্যাক্টর’
আজমত উল্লাহ খান ও জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাহ খানের জয়-পরাজয়ের সমীকরণ নির্ভর করছে বরখাস্তকৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তের উপর। আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনের বিষয়ে এমনই মত দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলটির স্থানীয় নেতারা।

এবারের সিটি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়া জাহাঙ্গীর যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আওয়ামী লীগ মুখোমুখি হতে পারে ২০১৩ সালের মতো নির্বাচনী পরিস্থিতিতে। ২০১৩ সালের গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লাহ বিএনপির প্রার্থী এম এ মান্নানের কাছে হেরে যান।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, জাহাঙ্গীর যদি নির্বাচনে অংশ না নেন এবং কোনো মেয়র প্রার্থীকে সমর্থনও না দেন, তাহলেও আজমত উল্লাহর জিতে আসা কঠিন হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের নেতা এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এক কাউন্সিলর বলেন, 'স্বতন্ত্র হিসেবে জাহাঙ্গীর আলম ২০১৩ সালের নির্বাচনে প্রায় ৩০ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। অথচ, ভোটগ্রহণের বেশ কয়েকদিন আগেই তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।'

তিনি জানান, জাহাঙ্গীর সেই নির্বাচনে আজমত উল্লাহকে সমর্থন করেননি। পরবর্তীতে দলীয় উচ্চপর্যায়ের চাপে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।

গতকাল মঙ্গলবার দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে জাহাঙ্গীর উল্লেখ করেন, গাজীপুর শহরবাসী চাইলে তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন।

তিনি বলেন, 'আমি জনগণের সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দেবো। ভোটাররা যদি আমাকে নির্বাচনে অংশ নিতে বলেন, তাহলে তাদের আদেশ আমি পালন করব।'

২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে গাজীপুরের মেয়র নির্বাচিত হন জাহাঙ্গীর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করা এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করায় ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

বহিষ্কারের ৭ দিন পর তাকে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করে সরকার। ক্ষমতাসীন দল অবশ্য গত ২১ জানুয়ারি তাকে সাধারণ ক্ষমা করে।

আওয়ামী লীগের সূত্র জানায়, জাহাঙ্গীর গত সোমবার দলের অন্তত ৩ জন কেন্দ্রীয় নেতা ও একজন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন এই আশ্বাস পেতে যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিলে তাকে হয়রানি করা হবে না।

জাহাঙ্গীরের বরাত দিয়ে গাজীপুর আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, 'তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের বলেছেন, আজমত উল্লাহ খান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হলে তার কোনো আফসোস থাকবে না। তিনি আরও বলেছেন, বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে ভোটার কম হবে এবং সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ নির্বাচন নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে পারে।'

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, আজমত জেলার সিনিয়র নেতাদের সমর্থন পেলেও তৃণমূল ও জুনিয়র নেতাদের ওপর শক্ত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে জাহাঙ্গীরের। টঙ্গী এলাকায় আজমতের শক্তিশালী সমর্থকগোষ্ঠী রয়েছে এবং জাহাঙ্গীর গাজীপুর সদর উপজেলার ভোটারদের মধ্যে জনপ্রিয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, 'জাহাঙ্গীরের নিজস্ব ভোটব্যাংক আছে। বিরোধী দলগুলো নির্বাচন বর্জন করলে হেফাজতে ইসলাম ও বিএনপি সমর্থকদের একটি অংশ তার সমর্থনেই থাকবে।'

অবশ্য আজমত বলেন, 'এই নির্বাচন যেকোনো ব্যক্তির চেয়ে দলের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই দলের সবাইকে নিয়ে এই নির্বাচনে অংশ নিতে চাই।'

জাহাঙ্গীরের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তার সঙ্গে যোগাযোগ করিনি। তিনি তো ইতোমধ্যেই গণমাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছেন যে নির্বাচনে প্রার্থী হবেন। প্রয়োজনে দলের নির্দেশনা অনুযায়ী তার সঙ্গে যোগাযোগ করব।'

 

Comments

The Daily Star  | English
Preparing for Ramadan's Price Shocks

Power price to go up 4 times a year

The government has drawn up a plan to increase the price of electricity four times a year for the next three years to withdraw all subsidies in the power sector, which the IMF recommends.

44m ago