ঘূর্ণিঝড় মোখা

বগুড়ায় অর্ধেক ও গাইবান্ধায় ১৮ শতাংশ ধান এখনো মাঠে

পর্যাপ্ত শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। তাই কৃষকরা সব ধান এখনো কাটতে পারেননি। ছবি: স্টার

ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে পাকা ধানের ক্ষতি হতে পারে জানিয়ে কৃষকদের সতর্ক করলেও বগুড়া জেলার প্রায় অর্ধেক ধান এখনো মাঠে আছে। এ ছাড়া, গাইবান্ধায় মাঠে আছে ১৮ শতাংশ পাকা ধান।

কৃষকরা জানান, এখনো ধান পুরোপুরি পাকেনি। তাছাড়া পর্যাপ্ত শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না, তাই তারা সব ধান কাটতে পারেননি। 

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মতলুবর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বগুড়ায় এবার ১ লাখ ৮৭ হাজার ১৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫০ শতাংশ জমির ধান কাটতে পেরেছেন কৃষক।'

ঘূর্ণিঝড় মোখা ধানের কোনো ক্ষতি করবে কি না, জানতে চাইলে এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, 'ঘূর্ণিঝড়ে পাকা ধানের ক্ষতি হবে বিধায় আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সতর্ক করেছি, যাতে তাদের ধান ৮০ শতাংশ পাকলেই ঘরে তোলেন। এ বিষয়ে আমাদের মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের সতর্ক করা হয়েছে।'

আজ শনিবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ এবং বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ জমির ধান ৯০ শতাংশের বেশি পেকে গেছে, কিন্তু কৃষক এখনো সব ধান কাটেননি। কোনো কোনো গ্রামে দু-চার জন কৃষক ধান কাটছেন।

এ বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলার পদ্মপুকুর গ্রামের কৃষক মোকসেদ আলী মণ্ডল বলেন, 'এখন পর্যন্ত আমি ১ বিঘা জমির ধান কেটেছি। মাঠে আছে ৬ বিঘা জমির ধান। সেগুলো ঠিকমতো পাকেনি।'

একই গ্রামের কৃষক আব্দুস সোবহান বলেন, 'আমাদের এলাকায় প্রায় ৯৫ শতাংশ ধান মাঠে আছে। প্রায় সব ধান পেকে গেছে। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে এখনো সবাই ধান কাটা শুরু করেননি। এখানে প্রতি একর জমির ধান কাটার মজুরি ১০ হাজার টাকা। দু-চার দিনের মধ্যে শ্রমিকের ব্যবস্থা না করতে পারলে পাকা ধান মাঠেই ঝরে যাবে।'

ঘূর্ণিঝড় মোখা সম্পর্কে কোনো সতর্কবার্তা পেয়েছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'টিভিতে দেখেছি ঘূর্ণিঝড় আসবে, তবে আমাদের এখানে এর প্রভাব তেমন পড়বে না। এর আগেও কখনো তেমন ক্ষতি হয়নি।'

ঘূর্ণিঝড় মোখা সম্পর্কে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের কোনো সতর্কবার্তা দেননি বলেও জানান এই কৃষক।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবার জেলায় ১ লাখ ২৮ হাজার ২০৫ হেক্টর জমির মধ্যে প্রায় ৮২ শতাংশ ধান ইতোমধ্যে ঘরে তুলেছেন কৃষক।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজস গ্রামের কৃষক আব্দুর রউফ বলেন, 'আমাদের জমিতে আলু চাষ করার কারণে ধান পরে লাগানো হয়েছে। যে কারণে বোরো ধান এখনো ভালোমতো পাকেনি। তবে বাড়িতে খাওয়ার জন্য যেটুকু ধান লাগে, সেটুকু কেটেছেন কৃষক।'

একই উপজেলার পণ্ডিতপুর গ্রামের কৃষক মো. হজরত আলী রুবেল বলেন, 'আমি ৭০ শতক জমিতে ব্রি-২৯ জাতের ধান লাগিয়েছি। ধান পাকতে আরও ৫-৬ দিন সময় লাগবে।'

ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে এই কৃষক বলেন, 'ঘূর্ণিঝড় মোখা আমাদের মাথায় নেই। আমরা জানি যে, এটা চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে যাবে।'

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. খোরশেদ আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গাইবান্ধায় প্রায় সব ধান কাটা হয়েছে। তবে যে সামান্য ধান মাঠে আছে, তা শক্ত জাতের এবং সহজে বাতাসে ক্ষতি হবে না। তবুও ঘূর্ণিঝড়ের কথা মাথায় রেখে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে ধান ৮০ শতাংশ পাকলেই তারা কেটে ঘরে তোলেন।'

Comments

The Daily Star  | English

Rampal fouling 2 Sundarbans rivers

The Rampal power plant began operation in late 2022 without an effluent treatment plant and has since been discharging untreated waste into the Pasur and Maidara rivers next to the Sundarbans.

4h ago