থাইল্যান্ড ভ্রমণ নিয়ে ৬ ভুল ধারণা

ছবি: রয়টার্স

বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের কাছে থাইল্যান্ড এক অনন্য আকর্ষণের নাম। আমাদের দেশ থেকে কাছে হওয়ায় বাংলাদেশিরাও থাইল্যান্ড ভ্রমণে খুব আগ্রহী। তবে থাইল্যান্ডে ঘোরাঘুরি নিয়ে রয়েছে কিছু ভ্রান্ত ধারণাও। যেমন 'থাইল্যান্ড পরিবার নিয়ে ঘোরার জন্য ভালো জায়গা না' কিংবা 'থাইল্যান্ডের পথেঘাটে কেবলই বাটপার লোকের আনাগোনা!' এমন সব প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা বা মিথের বিপরীতে চলুন দেখে আসি বাস্তবে থাইল্যান্ড পর্যটকদের জন্য কেমন? 

থাইল্যান্ডে সবকিছু পানির মতো সস্তা

অনেকেরই ধারণা, থাইল্যান্ডে খুব সস্তায় ভ্রমণ করা সম্ভব। এটা সত্যি যে, এক সময় এই দেশে ১০ ডলারেই ভালো গেস্টরুম পাওয়া সম্ভব ছিল। এখনও এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় হয়তো কম দামেই হোটেল পাওয়া যাবে। তবে পর্যটকদের জন্য সব কিছুর খরচই বেড়েছে। ব্র্যান্ডেড জিনিসপত্র কিনতে গেলে ভারি পকেটেই যাওয়া ভালো। কারণ দেশটির আমদানি শুল্ক বেশি। তবে স্থানীয়দের মতো থাকতে পারলে কম খরচে ঘোরাঘুরি করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে খাওয়া-দাওয়ায় স্ট্রিট ফুড, ঘোরাঘুরিতে গণপরিবহন আর কেনাকাটায় স্থানীয় বাজারের ওপর ভরসা করতে হবে।

থাইল্যান্ড পরিবার নিয়ে ঘোরার জায়গা নয়

অনেকের কাছেই থাইল্যান্ড মানেই প্রাপ্তবয়স্কদের ঘুরতে যাওয়ার জায়গা। প্রাপ্তবয়স্কদের উপভোগের জন্য সবই আছে দেশটির পর্যটন এলাকাগুলোতে। তাই অনেকেই পারিবারিক ভ্রমণে, বিশেষ করে বাচ্চাদের নিয়ে থাইল্যান্ড যেতে অনিচ্ছুক থাকে। অথচ থাইল্যান্ডে পরিবার ও শিশুদের নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর চমৎকার সব জায়গা রয়েছে। এমনকি পার্টির শহর পাতায়াতেও শিশুদের জন্য গো-কার্ট, ওয়াটার পার্ক, অ্যামিউজমেন্ট পার্কসহ নানা রকম আয়োজন আছে। অধিকাংশ হোটেলই পরিবার নিয়ে থাকার মতো এবং অনেক ক্লাবে বাচ্চাদের জন্য বেবিসিটিংয়েরও ব্যবস্থা পাবেন।

 

পানীয়তে বরফ নিলেই বিপদ

অনেক পর্যটকই ,মনে করেন থাই রেস্টুরেন্টে পানীয়তে দেওয়া বরফ তৈরি হয় সাধারণ ট্যাপের পানি থেকে, যা খাওয়ার জন্য নিরাপদ নয়। কিন্তু বেশিরভাগ রেস্টুরেন্ট যে বরফ দেওয়া হয় তা এমন পানি থেকে তৈরি নয়। বরং বিশুদ্ধ পানি দিয়েই বাণিজ্যিকভাবে এসব বরফ তৈরি করা হয়। তাই থাইল্যান্ড গিয়ে বরফ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থেকে গরম ড্রিংক খাওয়ার কোনো দরকার নেই।

সবাই আপনাকে ঠকানোর জন্য বসে আছে!

এটা সত্যি যে হোটেলে, পথেঘাটে, ট্যাক্সিতে পর্যটকদের থেকে নানাভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা হয় থাইল্যান্ডে। যখন কোনো টুকটুক ড্রাইভার আপনাকে বোকা বানিয়ে কোনো অতি দামি স্যুট শপে নিয়ে যেতে চাইবে তখন মনে হতেই পারে, 'এ কোন দেশে এসে পড়লাম!'

কিন্তু এই দৃশ্য কেবল পর্যটন এলাকার মধ্যেই। এর বাইরে গেলেই সাধারণ থাইদের আন্তরিকতা আপনাকে মুগ্ধ করবে। যেকোনো সাহায্য চাইলেই দেখবেন তারা যতটা সম্ভব আপনাকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে।

টাকা দিলেই নিয়ম ভঙ্গ করা যায়

অনেকের ধারণা, ট্রাফিক আইন বা অন্য কোনো নিয়ম ভেঙে পুলিশকে কিছু টাকা ঘুষ দিয়েই থাইল্যান্ডে পার পাওয়া সম্ভব। হয়তো কিছু ক্ষেত্রে এমনটা হয়েও থাকে। তবে বেশ কিছু বেআইনি কাজ আছে, যা করে ধরা পড়লে কোনো ছাড় নেই। নাইট ক্লাবের পার্টিগুলোয় এমন বেশ কিছু নিষিদ্ধ মাদক আছে, যা নিয়ে ধরা পড়লে যেতে হবে জেলে।  

পথশিশুদের টাকা দেওয়া মানেই তাদের উপকার করা

অর্থনৈতিকভাবে অনেক এগিয়ে থাকলেও থাইল্যান্ডের রাস্তাঘাটে, বিশেষ করে পর্যটক এলাকায় প্রচুর পথশিশুকে ভিক্ষা করতে কিংবা ফুল বিক্রি করতে দেখা যায়। অনেক পর্যটকই তাদের বেশি টাকা দিয়ে তৃপ্তি পায় ওদের জন্য কিছু একটা করতে পেরে। অথচ এই শিশুদের একটা বড় অংশই পাচার হয়ে আসা। আর এসব টাকার পুরোটাই চলে যায় পাচারকারীদের পকেটে। তাই সাহায্য করতে চাইলে স্থানীয় কোনো দাতব্য সংস্থায় দান করতে পারেন।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

 

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago