আইপিএল

অখ্যাত আকাশ মাধওয়ালে চড়ে টিকে রইল মুম্বাই

Akash Madhwal
উইকেট নিয়ে আকাশের উল্লাস। ছবি: আইপিএল

নড়বড়ে শুরুর পর ক্যামেরন গ্রিন, সূর্যকুমার যাদব ঝড় তুলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে এনে দিয়েছিলেন শক্ত পুঁজির ভিত। তারা ইনিংস টানতে না পারলেও তিলক বর্মা, নেহাল ওয়াধেরাদের ব্যাটে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহই এসে যায় স্কোরবোর্ডে। জুতসই পুঁজি নিয়ে পরে জ্বলে উঠলেন আকাশ মাধওয়াল। অখ্যাত এই মিডিয়াম পেসার এলিমিনেটের ম্যাচে দেখালেন ঝলক, নিলেন পাঁচ উইকেট। দুর্দান্ত বোলিংয়ে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টকে গুঁড়িয়ে মুম্বাইকে টিকিয়ে রাখলেন তিনি।

বুধবার চেন্নাইতে আইপিএলের এলিমিনেটর ম্যাচ হলো একপেশে। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের কাছে ৮১  রানে উড়ে বিদায় নিল লক্ষ্ণৌ। আগে ব্যাট করে কোন ব্যাটারের ফিফটি ছাড়াই ১৮২ রান করে ফেলে মুম্বাই। রান তাড়ায় আকাশ গর্জনে ১০১ রানে আটকে যায় লক্ষ্ণৌ।

এই জয়ে ফাইনালে উঠার পথে আরেকটি পরীক্ষা পেল মুম্বাই। শুক্রবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে রোহিত শর্মারা লড়বেন গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে।

বড় তারকাদের ভিড়ে মাথা উঁচু করে সব আলো কেড়ে মুম্বাইর নায় আকাশ। ৩.৩ ওভার বল করে মাত্র ৫ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন ডানহাতি পেসার। ২৯ পেরুনো উত্তরাখণ্ডের এই পেসার এবারই প্রথম আইপিএল খেলছেন। স্বীকৃতি টি-টোয়েন্টিতেও এটা তার সেরা ফিগার। কোন সংশয় ছাড়াই তার জন্য স্বপ্নের মত দিন। 

রান তাড়ায় নেমে বিপর্যয়ে পড়ে লক্ষ্ণৌ। দুই ওপেনার কাইল মেয়ার্স আর পেরেক মানকাড় বেশিক্ষণ টেকেননি। দ্বিতীয় ওভারেই আকাশের ছোবলে বিদায় নেন মানকাড়।

এবার লক্ষ্ণৌতে খেলে আলো কাড়া ক্যারিবিয়ান মেয়ার্স থিতু হয়েও এদিন এগুতে পারেননি। ১৩ বলে ৩ চারে ১৮ রান করে তার ইনিংস থামে ক্রিস জর্ডানের বলে।

২৩ রানে দুই উইকেট হারানো দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে তিনে নামেন অধিনায়ক ক্রুনাল পান্ডিয়া। তার সঙ্গে চারে যোগ দিয়ে ঝড় তুলতে শুরু করেন স্টয়নিস।

ক্রুনালকে এক পাশে রেখে দ্রুত রান আনতেন অজি অলরাউন্ডার। ৪৬রানের জুটির পর ৮ করে ফেরেন ক্রুনাল। স্টয়নিস বাঁচিয়ে রেখেছিলেন লক্ষ্ণৌর আশা, কিন্তু সমর্থন পাচ্ছিলেন না তিনি। মাধওয়ালের পর পর দুই বলে আয়ুশ বাদুনি আর নিকোলাস পুরানের বিদায়ে প্রবল চাপে পড়ে যায় লক্ষ্ণৌ। দিকহারা স্টয়নিস দীপক হুডার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটে কাটা পড়েন।

২৭ বলে ৪০ রান করে তার বিদায়ে ৮৯ রান ৬ উইকেট খুইয়ে ডুবন্ত অবস্থায় চলে যায় লক্ষ্ণৌ। আকাশ হানা দেন পরেও। লক্ষ্ণৌকে একদম দাঁড়াতেই দেননি তিনি। শেষ দিকেও দুই উইকেত নিয়ে ইনিংস মুড়ে দুহাত উঁচিয়ে আকাশেই যেন উড়তে থাকেন মাধওয়াল।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। পুরো আসরে অধারাবাহিকতার ধারা বজায় রেখে রোহিত শর্মা মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও ব্যর্থ। আফগান পেসার নাবিন-উল হক বলে সহজ ক্যাচে ফেরেন ১১ রান করে।

তিনে নেমেই একের পর এক বাউন্ডারিতে ম্যাচের নাটাই নিজেদের দিকে নিচ্ছিলেন গ্রিন। ইশান কিশানের পড়তি দিনে সূর্যকুমারকে জুটিতে পেয়ে যান তিনি। তৃতীয় উইকেটে দুজনে মিলে ৩৮ বলে যোগ করেন ৬৬ রান। মুম্বাইর বড় রানের ভিত পাওয়া তখনই।

নাবিন এদিন প্রতিপক্ষ ডানা মেলতে শুরু করলেই বারবার আঘাত হানছিলেন। এই জুটিও তার ভাঙা। পর পর বড় দুই উইকেট তুলে দলকে খেলায় ফেরান তিনি। নাবিনের গতির তারতম্য টের না পেয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় সূর্যকুমারের ২০ বলে ৩৩ রানের ইনিংস।

২৩ বলে ৪১ করা গ্রিন বোল্ড হয়ে যান নাবিনের একই ওভারের আরেক বলে। আচমকা তাল হারানো মুম্বাইকে পরে টেনে তুলেন তিলক বর্মা। টিম ডেভিড প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলেও ইম্পেক্ট বদলি নামা নেহাল ওয়াধেরা ১২ বলে ২৩ রানের ক্যামিওতে দলকে ১৮০ পার করে দেন।

এবার আইপিএলে শুরুটা ভালো ছিল না মুম্বাইর। গত আসরে তলানিতে পড়ে থাকার গ্লানি দূর করে দ্রুতই ঘুরে দাঁড়ায় তারা। ধাপে ধাপে এগিয়ে আরেকটি ফাইনালের একদম কিনারে আইপিএলের অন্যতম সফল দল।

Comments

The Daily Star  | English

Prisoners celebrate Eid in unity and harmony at Dhaka Central Jail

Eid prayers for inmates were held at 8:15am inside the prison premises

49m ago