ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে

চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ থেকে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক পণ্যের রপ্তানি ৪৮ শতাংশ বেড়েছে বলে সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে।

পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি ও সরকারি সহায়তার কারণেই রপ্তানি বেড়েছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ১১৫ দশমিক ৩০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এর আগের বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৭৭ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন ডলার।

যদিও চলতি অর্থবছর শেষ হবে আগামী ৩০ জুন, তবে এর আগেই পুরো অর্থবছরের ১০৫ মিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়ে গেছে। এর আগের অর্থবছরে আয় ছিল ১০০ দশমিক ১০ মিলিয়ন ডলার।

বৈশ্বিক মন্দা ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সামগ্রিক রপ্তানি আয় কমে গেলেও ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক পণ্য থেকে এই ইতিবাচক আয় এসেছে। জুলাই থেকে মে পর্যন্ত সময়ে ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক পণ্যের সামগ্রিক চালানের পরিমাণ ৭ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়েছে।

বাংলাদেশ রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার ও টেলিভিশনের মতো ইলেকট্রনিক পণ্যের পাশাপাশি পাওয়ার ট্রান্সফরমার, ফ্যান, তার, সুইচ, সকেট, সার্কিট ব্রেকার ও ব্যাটারির মতো ইলেকট্রিক্যাল সামগ্রীও রপ্তানি করে।

এনার্জিপ্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ক্রমবর্ধমান রপ্তানির মাধ্যমেই বোঝা যায় যে বাংলাদেশ প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে।'

এনার্জিপ্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং ভারত, নেপাল ও মালয়েশিয়াসহ ২০টিরও বেশি দেশে বৈদ্যুতিক পণ্য রপ্তানি করে।

রবিউল আলমের মতে, উচ্চমান ও প্রতিযোগিতামূলক দামের কারণে ট্রান্সফরমারের মতো বৈদ্যুতিক পণ্যের রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে।

এনার্জিপ্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং ইতোমধ্যেই মুম্বাইয়ের আদানি ইলেকট্রিসিটিতে ট্রান্সফরমার রপ্তানি করছে।

রবিউল জানান, এনার্জিপ্যাক তাদের ট্রান্সফরমারের মান বিষয়ে ইতালি থেকে সনদ পেয়েছে। এর ফলে ইউরোপসহ অন্যান্য দেশে তাদের পণ্যের রপ্তানি সম্ভাবনা উন্মুক্ত হয়েছে।

ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির প্রধান বিপণন কর্মকর্তা দিদারুল আলম খান ডেইলি স্টারকে জানান, তাদের কোম্পানি আন্তর্জাতিক মানের বৈদ্যুতিক পণ্য উৎপাদন করছে।

'দক্ষ শ্রমিক থাকায় বাংলাদেশ এখন প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে মানসম্পন্ন ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন করতে সক্ষম।'

ওয়ালটন ৪০টিরও বেশি দেশে ফ্রিজ, এয়ার কন্ডিশনার ও টেলিভিশনসহ বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক পণ্য রপ্তানি করছে এবং ইউরোপ ও আমেরিকায় তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণে কাজ করছে।

রহিমআফরোজ রিনিউয়েবল এনার্জি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনাওয়ার মিসবাহ মঈন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মহামারির প্রভাব কাটিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকে ব্যাটারি রপ্তানি বেড়েছে।'

বাংলাদেশ মূলত পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোতে ব্যাটারি রপ্তানি করে।

মঈনের ভাষ্য, তাদের কোম্পানি প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পরিবেশবান্ধব ও মানসম্পন্ন ব্যাটারি সরবরাহ করতে পারে। সেই কারণেই তাদের ব্যাটারির চাহিদা বেড়েছে।

রহিমআফরুজের ব্যাটারিগুলো গাড়িতে ব্যবহৃত হয়। সেই কারণেই মহামারির প্রভাব কাটিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরে তাদের পণ্যের অর্ডার বেড়েছে।

এখাতে সরকারের ১৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা স্থানীয় নির্মাতাদের বিশ্ববাজারে ব্যবসার প্রসারে সহায়তা করছে।

তবে, এরপরেও কিছু বাধা রয়েছে। যেমন: ডলার সংকটের কারণে ব্যাটারি তৈরির প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানি করার জন্য সময়মতো ঋণপত্র খোলা যাচ্ছে না। ফলে সময়মতো পণ্যের সরবরাহও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।

Comments

The Daily Star  | English
chief adviser yunus confirms election date

Election in February

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night announced that the general election will be held before Ramadan in February 2026, kickstarting the process of handing over the power to an elected government.

7h ago