আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির পাশাপাশি সাংস্কৃতিকভাবেও এগিয়ে যেতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

‘বিশ্ব প্রযুক্তি দ্বারা আঁকড়ে আছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম জাতিকে আধুনিক ও জ্ঞানভিত্তিক গড়ে তুলতে আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে প্রযুক্তিকে যুক্ত করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে বিশ্ব পরিমণ্ডলে প্রতিষ্ঠিত করতে পদক্ষেপ নেবে। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের চিন্তাধারার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের সংস্কৃতির বিকাশে জোরালো উদ্যোগ নেবে যাতে, এই নতুন প্রজন্ম তাদের সংস্কৃতির স্বাতন্ত্র্য ভুলে না যায়।

ছয়টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং আরেকটি উদ্বোধনের সময় শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা যেমন আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, তেমনি আমাদের সাংস্কৃতিকভাবেও এগিয়ে যেতে হবে। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব যাতে আমাদের সংস্কৃতি বিশ্ব অঙ্গনে একটি শক্তিশালী অবস্থান নিতে পারে।'

সরকার প্রধান আজ মঙ্গলবার তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

তিনি বলেন, তার সরকার সংস্কৃতির আরও উন্নতির জন্য প্রযুক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাবে আমাদের বাচ্চাদের চিন্তাভাবনা এবং বিশ্বাসগুলো সর্বদা পরিবর্তিত হচ্ছে। তাদের চিন্তাধারা অনুযায়ী আমাদের সংস্কৃতিকে উন্নত করতে হবে, যাতে তারা কখনই বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে ভুলে না যায়।'

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সংস্কৃতির উন্নতি ও বিকাশের জন্য অতীতের ন্যায় প্রয়োজনীয় যা যা কিছু করা দরকার, সে ব্যাপারে তার সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ইতোমধ্যে ১৮৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪১টি উন্নয়ন প্রকল্প সম্পন্ন করেছে এবং বাংলাদেশি সংস্কৃতির উন্নয়নে গত সাড়ে ১৪ বছরে আরও ১৪টি প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি অপর ৪১টি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

কেউ যদি কোনো দেশকে ধ্বংস করতে চায়, তাহলে সংস্কৃতির ওপর আক্রমণ করবে, এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশকে সাংস্কৃতিকভাবে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিল। কারণ, তাদের নিশ্চিত পরাজয় জেনেও তারা মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল।

সরকারপ্রধান বলেন, 'আমরা সবসময় আমাদের সংস্কৃতিকে ধারণ করার পাশাপাশি এটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি এবং এইভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ২০০৯ সাল থেকে বাঙালি জাতির ইতিহাস ও সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সাহিত্য ও গবেষণামূলক কাজকে রক্ষা ও সংরক্ষণ করে প্রযুক্তিগত জ্ঞানসম্পন্ন একটি শিক্ষিত জাতি গঠনে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, 'বিশ্ব প্রযুক্তি দ্বারা আঁকড়ে আছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম জাতিকে আধুনিক ও জ্ঞানভিত্তিক গড়ে তুলতে আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে প্রযুক্তিকে যুক্ত করতে হবে।'

প্রধানমন্ত্রী যে ছয়টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সেগুলো হলো—গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের জন্য নতুন বহুতল ভবন, পুরান ঢাকা শহরের রোজ গার্ডেন, ঢাকায় কবি নজরুল ইনস্টিটিউট ভবন, কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শিল্পকলা একাডেমি এবং আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং জাতীয় জাদুঘরে শিশু গ্রন্থাগার।

তিনি কপিরাইট ভবনের একটি নবনির্মিত ১২তলা ভবনও উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ।

Comments

The Daily Star  | English
quota reform movement,

Govt publishes preliminary list of those killed in July-August protests

The interim government today published a preliminary list of the people who died during the student-led mass protests in July and August.

2h ago