‘ভারত চাল রপ্তানি বন্ধ করলে বাংলাদেশে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই’

গতকাল ব্লুমবার্গ নিউজের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত বেশিরভাগ জাতের চাল রপ্তানি বন্ধের পরিকল্পনা করছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও চাল আমদানিকারক বলেছেন, সরকারি গুদামে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত আছে এবং গত দুই মৌসুমে ধানের ভালো ফলন হয়েছে। তাই ভারত চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সমস্যায় পড়ার সম্ভাবনা নেই বাংলাদেশের।

গতকাল ব্লুমবার্গ নিউজের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত বেশিরভাগ জাতের চাল রপ্তানি বন্ধের পরিকল্পনা করছে।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ভারত সরকার বাসমতি ছাড়া অন্য জাতের চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আলোচনা করছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শাখাওয়াত হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আপাতত আমরা কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছি না। এখন পর্যন্ত আমাদের পর্যাপ্ত মজুত আছে এবং গত দুই মৌসুমে উৎপাদনও ভালো হয়েছে।'

১২ জুলাই পর্যন্ত খাদ্য অধিদপ্তরের খাদ্যশস্য মজুত ছিল ১৯ লাখ টন।

আরেক খাদ্য কর্মকর্তা বলেন, এটি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ খাদ্য মজুত।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ২০২২-২৩ অর্থবছরের চাল উৎপাদনের প্রাক্কলন এখনো প্রকাশ করেনি।

তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বোরো মৌসুমের ধান উৎপাদনের হিসাব বিবেচনায় নেওয়া হলে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট উৎপাদন ৫ শতাংশ বেড়ে ৪ কোটি মেট্রিক টন হতে পারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বোরো উৎপাদনের অনুমান অনুযায়ী, চাল উৎপাদন হবে ২ কোটি ১৮ লাখ মেট্রিক টন, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ এবং গত বছরের চেয়ে ৮ শতাংশ বেশি। সাধারণত বোরো মৌসুমে দেশে সবচেয়ে বেশি চাল উৎপাদিত হয়।

দেশীয় বাজার থেকে ধান কেনার পাশাপাশি ভারত থেকে চাল আমদানি করে মজুমদার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক চিত্ত মজুমদার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কৃষকরা ভালো ফলন পেয়েছেন। আর আমদানির পাশাপাশি দেশের বাজারে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য আছে। তাই এখানে এখন দাম বাড়ার সম্ভাবনা কম।'

তিনি আরও বলেন, 'এছাড়া আমদানি শুল্ক এখন প্রায় ৬২ শতাংশ। এই হারে কেউ চাল আমদানি করবে না।'

বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা মূলত ভারত থেকে চাল আমদানি করে।

মজুমদার বলেন, 'সাম্প্রতিক সময়ে তারা যে চাল আমদানি করেছিল ভারতে তার দাম বেড়েছে।'

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার মূল্যের তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাস ধরে ঢাকা শহরে চালের খুচরা মূল্য অপরিবর্তিত আছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ আগের বছরের চেয়ে ৭ শতাংশ বেশি চাল আমদানি করেছে, যার পরিমাণ ১০ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন।

এর মধ্যে বেসরকারিভাবে আমদানি হয়েছে ৪ লাখ ২১ হাজার মেট্রিক টন। আর বাকিগুলো সরকার বিভিন্ন খাদ্য বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনায় মজুতের জন্য আমদানি করেছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, চাল ও গম আমদানির বিষয়ে ভারতের সঙ্গে তাদের এখন কোনো চুক্তি নেই।

তিনি জানান, খাদ্য অধিদপ্তর প্রতিবেশী দেশ থেকে ১ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করেছে।

Comments

The Daily Star  | English
quota reform movement,

Govt publishes preliminary list of those killed in July-August protests

The interim government today published a preliminary list of 726 people who died during the student-led mass protests in July and August.

1h ago