‘বার্বি’র কারণে কি সত্যিই বিশ্বজুড়ে গোলাপি রঙের ঘাটতি হয়েছিল

ছবি: সংগৃহীত

সদ্য মুক্তি পেল মুক্তির আগেই আলোচনার শীর্ষে চলে আসা হলিউড সিনেমা 'বার্বি'। তবে এরও বহু আগে গত বছরেই গ্রেটা গারউইগের সিনেমাটি বিশ্বজুড়ে এক অন্যরকম আলোড়নের জন্ম দেয়। শোনা যেতে থাকে, এ সিনেমা নির্মাণ করতে এত গোলাপি রং লেগে যায় যে বিশ্বজুড়ে নাকি গোলাপি রঙের ঘাটতি তৈরি হয়! 

আসলেই কি তাই? সিনেমাটি বা অন্তত ট্রেলার যারা দেখে ফেলেছেন তারা ইতোমধ্যেই দেখেছেন বার্বির জন্য বানানো সুবিশাল গোলাপি সেটটি। এই নিখুঁত সেট বানাতে যে অনেক বেশি গোলাপি রঙের প্রয়োজন পড়েছে, সেটি সহজেই বোধগম্য। তবে এতে কি এত বেশি গোলাপি রং ব্যবহৃত হয় যে গোলাপি রঙেরই অভাব পড়ে যাবে? 

এর উত্তর স্পষ্ট করেছেন বার্বির প্রোডাকশন ডিজাইনার আর রোস্কোর ভাইস প্রেসিডেন্ট। তারা জানান, বার্বি নির্মাণ করতে গিয়ে আসলেই বিশ্বব্যাপী বিশ্বজুড়ে রোস্কো ফ্লুরোসেন্ট পেইন্টের ঘাটতি দেখা দেয়। 

রোস্কো হলো বিশ্বব্যাপী বিনোদনজগতে বিভিন্ন রঙের ফিল্টার, পেইন্ট ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহকারী অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান।

আর্কিটেকচারাল ডাইজেস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ছবিটির প্রোডাকশন ডিজাইনার ৬ বারের অস্কারজয়ী সারাহ গ্রিনউড বলেন, 'দুনিয়া থেকে গোলাপি রং ফুরিয়ে গিয়েছিল সে সময়।' 

রোস্কোর ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন প্রাউড লস অ্যাঞ্জেলস টাইমসে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'আমাদের যত গোলাপি রং ছিল তার সবই তারা ব্যবহার করে ফেলেছিল।'

ফলে ২০২২ সালে ছবিটি নির্মাণের সময় প্রতিষ্ঠানটির সাপ্লাই চেইন বেশ বড়সড় ধাক্কা খায়।

ছবি: সংগৃহীত

এমনিতেই আগের ২ বছরে করোনা মহামারির কারণে কোম্পানিটির সাপ্লাই চেইনে কিছু জটিলতা ছিল। তার ওপর ২০২১ সালের 'টেক্সাস ফ্রিজে'র (টেক্সাসে ঘটে যাওয়া সিরিজ তুষারঝড়) কারণে বিপুল পরিমাণ কাঁচামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর পরপরই যখন বার্বির জন্য এত বিপুল পরিমাণ গোলাপি রং প্রয়োজন পড়তে থাকে, তখন এই ঘাটতির সৃষ্টি হয়। তবে এতকিছুর পরেও রোস্কো সব চাহিদাই পূরণ করতে পেরেছে।

আর এত গোলাপি রং কোথায় খরচ হয়েছে তা নিয়ে নিশ্চয়ই কারো কোনো সন্দেহ থাকার কথা না। ছবিটির জন্য একটি সুবিশাল ৩ তলা বার্বি ড্রিমহাউজ এবং এর ভেতরের বিছানা, আলমারি ভরা পোশাক, সব ফার্নিচার সব তৈরি করেছিল ওয়ার্নার ব্রাদারস স্টুডিও। শুধু এই গোলাপি প্রাসাদ বানিয়েই ক্ষান্ত হয়নি তারা, একটি আস্ত কাল্পনিক শহর, তার রাস্তাঘাট, ল্যাম্পপোস্ট, দোকানপাট সবকিছু তৈরি করে ওয়ার্নার ব্রাদারস। আর সবখানেই যেন ছিল একটিই রং-উজ্জ্বল গোলাপি।

ছবিটির পরিচালক এবং সহ-গল্পকার গ্রেটা গারউইগের কাছে ছবিটিতে এই রং ব্যবহার করা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, 'আমি চেয়েছি সবখানেই থাকুক খুব উজ্জ্বল গোলাপি, আর সবকিছু হোক বেশি বেশি।' তিনি যে নিজেও ছোটোবেলায় বার্বি পুতুল অসম্ভব ভালোবাসতেন সেটি জানাতেও ভোলেননি। আর তাই তার চাওয়া ছিল একদম আক্ষরিক অর্থেই অবিকল একটা 'বার্বিল্যান্ড' সৃষ্টি করা।

গ্রেটা গারউইগ ছোটবেলা থেকে বার্বির ভক্ত হলেও, সারাহ গ্রিনউড কিংবা সেট ডেকোরেটর কেটি স্পেন্সারের কখনোই এই চমৎকার পুতুলটি ছিল না। তাই অনুপ্রেরণা নিতে তারা অনলাইনেই একটি বার্বি 'ড্রিম হাউজ' অর্ডার করে ফেলেন। আর সেই থেকে কী তৈরি হয়েছে তা তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি।

গত ২১ জুলাই মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মার্গট রবি এবং 'কেন' চরিত্রে অভিনয় করেছেন রায়ান গসলিং।

তথ্যসূত্র: এনপিআর, সিএনএন

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

5h ago