দেশ মণিপুরের মানুষের সঙ্গেই আছে, স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে মোদি

স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য রাখছেন মোদি। ছবি: স্টেটসম্যান
স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য রাখছেন মোদি। ছবি: স্টেটসম্যান

আজ ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেশের ১৪০ কোটি মানুষের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বক্তব্যের শুরুতে দেশবাসীকে তার 'পরিবারের সদস্য' হিসেবে অভিহিত করেন এবং বেশ কয়েক মাস ধরে সংঘাতে বিপর্যস্ত মণিপুর রাজ্যের কথা উল্লেখ করেন।

আজ মঙ্গলবার ভারতের সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনমুক্ত হয়ে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট জন্ম নেয় স্বাধীন রাষ্ট্র ভারত। সে সময় থেকে এই দিনটি ভারতের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়।

এবারের বক্তব্যের মাধ্যমে টানা দশম বারের মতো স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য দিলেন মোদি।

আজ দিল্লির লাল কেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে তিনি তার বক্তব্য শুরু করেন।

বক্তব্যের শুরুতে মোদি বলেন, 'গত কয়েক সপ্তাহে মণিপুরে সহিংসতার ঢেউ বয়ে গেছে। অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং আমাদের মা ও বোনদের অসম্মান করা হয়েছে। কিন্তু এ অঞ্চলে ধীরে ধীরে শান্তি ফিরে আসছে। ভারত মণিপুরের পাশেই আছে।'

তিনি আরও জানান, কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শান্তি বজায় রাখার জন্য কাজ করছে।

'গত কয়েকদিনে শান্তি ফিরিয়ে আনা হয়েছে। মণিপুরের মানুষকে তা অব্যাহত রাখতে হবে। শান্তির মাধ্যমেই মণিপুরের সব সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে', যোগ করেন তিনি।

স্টেটসম্যান মোদির বরাত দিয়ে জানিয়েছে, দেশকে ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে হলে দুর্নীতি, পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি ও তোষামোদকে সমগ্র শাসন প্রক্রিয়া থেকে মুছে ফেলতে হবে।

লাল কেল্লার ঐতিহাসিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে মোদি জানান, ফলাফল ভিত্তিক সরকার থাকা খুবই জরুরি, বিশেষত, দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

তিনি বলেন, '২০১৪ সালে আমি যখন আপনাদের কাছে এসেছিলাম, তখন আপনাদেরকে একটি ফলাফল ভিত্তিক সরকার দেওয়ার অঙ্গীকার করি। ২০১৯ সালে ভাল ফলের কারণেই আমি আবারো নির্বাচিত হই। আর পরবর্তী ২৫ বছর হচ্ছে দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরের স্বপ্ন বাস্তবায়নের সময়। সুতরাং, আগামী বছরের স্বাধীনতা দিবসে আমি আপনাদের সামনে উন্নত দেশ হওয়ার রোডম্যাপ উপস্থাপন করবো, কারণ আমি আপনাদের জন্যই বেঁচে থাকি ও স্বপ্ন দেখি এবং আমি আপনাদের মধ্য থেকেই এসেছি। আমি চাই না আপনাদের স্বপ্নগুলো অপূর্ণ থাকুক। আমি আপনাদের একজন সেবক ও সহযোগী হিসেবে কাজ করে যেতে চাই।'

তিনি দুর্নীতিকে উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।

এছাড়াও, তিনি পারিবারিক রাজনীতির তীব্র সমালোচনা করেন।

কীভাবে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলো পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতিতে চলতে পারে? এসব দল শুধু পরিবারের জন্য কাজ করে, পরিবারে কথায় সেখানে সব কিছু নির্ধারণ হয়। আমাদেরকে এ ধরনের রাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

'একইভাবে, তোষামোদের বিরুদ্ধেও লড়তে হবে, কারণ এটি সামাজিক ন্যায়বিচারের ক্ষয় করে', যোগ করেন তিনি।

তার বক্তব্যের পরবর্তী অংশে আরও একবার মণিপুরের কথা উল্লেখ করেন মোদি। তিনি জানান, সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আঞ্চলিক আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান জানাতে হবে এবং সেগুলো পূরণের দিকে নজর দিতে হবে।

তিনি বলেন, 'আমি যখন একাত্মতার কথা বলি—মণিপুরে সহিংসতা দেখা দিলে মহারাষ্ট্রের মানুষও সেই বেদনা অনুভব করেন।'

বক্তব্যে মোদি সত্যাগ্রহ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মহাত্মা গান্ধীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি ভগত সিং, রাজগুরু, সুখদেব ও স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের কথা স্মরণ করে জানান, তাদের এই আত্মত্যাগ ছাড়া স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব হোত না।

 

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

11h ago