সর্বজনীন পেনশন: ৩১-৪০ বছর বয়সীরা বেশি আগ্রহী

সর্বজনীন পেনশন
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

সম্প্রতি চালু হওয়ার পর সর্বজনীন পেনশন স্কিম এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি নিয়েছেন ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সীরা।

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ৬ হাজার ১০৩ জন গ্রাহকের মধ্যে ২ হাজার ৬৫৪ জন এই বয়সী। তারা ১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা জমা করেছেন।

এরপরেই রয়েছেন ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী এবং ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা। তাদের সংখ্যা যথাক্রমে ১ হাজার ৮৩৭ এবং ১ হাজার ১৯৮।

এ ছাড়া, ৬১ বছরের বেশি বয়সী ২৫ জন এবং ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সী ৭৬ জন পেনশন স্কিমের জন্য নথিভুক্ত হয়েছেন।

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গতকাল সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত তাদের প্রগতি স্কিমের আওতায় গ্রাহকদের কাছ থেকে মোট ৩ কোটি ৫ লাখ টাকা পেয়েছে। এই স্কিমটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্য। এখন পর্যন্ত পেনশন স্কিম নেওয়া গ্রাহকদের মধ্যে ৫৩ শতাংশই প্রগতি স্কিম নিয়েছেন।

অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরতদের জন্য তৈরি সুরক্ষা স্কিম নিয়েছেন ১ হাজার ৮২৮ জন।

এ ছাড়া, দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য সমতা স্কিম এবং বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জন্য প্রবাসী স্কিম। এই ২টি স্কিম নিয়েছেন যথাক্রমে ৮৭৫ জন ও ১৪৮ জন।

গ্রাহকদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮৩৯ জন, চট্টগ্রামের ১ হাজার ৬৫৪ জন, খুলনার ৭৩১ জন, রাজশাহীর ৫৪৪ জন, রংপুরের ৩৯০ জন, বরিশালের ৩৮৮ জন, ময়মনসিংহের ৩৫২ জন এবং সিলেটের ২০৫ জন রয়েছেন।

এ পর্যন্ত সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিতে প্রায় ৫০ হাজার জন আবেদন করেছেন।

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য (অতিরিক্ত দায়িত্ব) গোলাম মোস্তফা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখন পর্যন্ত মানুষের খুব ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে এবং স্কিমের বিষয়ে কোনো প্রচার ছাড়াই এই গ্রাহকরা এসেছেন।'

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অপর এক কর্মকর্তা বলেন, 'নতুন ব্যবস্থার অধীনে ২টি আলাদা তহবিল তৈরি করা হবে। এর একটি পেনশন কর্তৃপক্ষের জন্য, অপরটি হবে গ্রাহকদের জমাকৃত অর্থ দিয়ে।'

তিনি বলেন, 'সরকার ওভারহেড খরচ হিসেবে পেনশন কর্তৃপক্ষের তহবিলের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেবে।'

এ ছাড়া, গ্রাহকদের জমাকৃত অর্থ লাভজনক উদ্যোগে বিনিয়োগ করা হবে এবং এ বিষয়ে শিগগির একটি নীতি প্রণয়ন করা হবে বলেও জানান তিনি।

বহুল প্রত্যাশিত সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প গত ১৭ আগস্ট চালু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

১৮ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকরা www.upension.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে স্কিমের জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন।

নিবন্ধন করার পর ব্যাংকের শাখায়, মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে কিংবা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা কার্ড থেকে অনলাইন ট্রান্সফারের মাধ্যমে পেনশনের জন্য চাঁদা জমা দিতে পারবেন।

প্রাথমিকভাবে চাঁদা জমা দেওয়া যাবে কেবলমাত্র সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে। পরবর্তীতে এই কার্যক্রমে আরও ব্যাংক অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সুরক্ষা স্কিম গ্রহীতা প্রতি মাসে ১ হাজার, ২ হাজার, ৩ হাজার বা ৫ হাজার টাকা চাঁদা দিতে পারবেন। সমতা স্কিমের মাসিক চাঁদা ১ হাজার টাকা। প্রবাস স্কিমের মাসিক চাঁদা ১ হাজার, সাড়ে ৭ হাজার বা ১০ হাজার টাকা।

এ ছাড়া, প্রগতি স্কিমের মাসিক চাঁদার পরিমাণ হবে ২ হাজার, ৩ হাজার বা ৫ হাজার টাকা।

জাতীয় পরিচয়পত্র ভিত্তি ধরে ১৮ বছরে থেকে শুরু করে ৫০ বছর বয়সী বাংলাদেশি নাগরিক সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তবে, বিশেষ বিবেচনায় ৫০ বছরের বেশি বয়সীরা সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ নিতে পারবে, সেক্ষেত্রে স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ থেকে থেকে টানা ১০ বছর চাঁদা দিতে হবে। তারপর যে বয়স হবে, সেই বয়স থেকে আজীবন পেনশন পাবেন।

পেনশনে থাকাকালে ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মৃত্যুবরণ করলে তার নমিনি বাকি সময়ের (পেনশন গ্রহীতার বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) জন্য মাসিক পেনশন পাবেন।

চাঁদাদাতা অন্তত ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগে মৃত্যুবরণ করলে জমা দেওয়া অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে।

পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে এবং মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়কর মুক্ত থাকবে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Drug smuggling via air, land routes on the rise

This grim picture emerges as Bangladesh, like other countries around the world, observes the International Day Against Drug Abuse and Illicit Trafficking today.

13h ago