‘মুক্তিযুদ্ধের সিনেমায় যা যা দরকার সব আছে’
হৃদি হক পরিচালিত ও ড. ইনামুল হকের গল্প নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র '১৯৭১ সেই সব দিন' মুক্তি পেয়েছে ১৮ আগস্ট। এক ঝাঁক তারকা শিল্পী এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ৪ অভিনয়শিল্পী তারিন জাহান, ফেরদৌস, হৃদি হক ও সানজিদা প্রীতি।
সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টার অফিসে প্রাণবন্ত আড্ডায় মেতে ওঠেন এই ৪ গুণী শিল্পী। সেই আড্ডার উল্লেখযোগ্য অংশ আজকের লেখায় তুলে ধরা হলো।
১৯৭১ সেইসব দিন সিনেমাটি নিয়ে তারিন জাহান বলেন, 'বড় পর্দায় প্রথম দর্শকরা আমাকে দেখবেন। দর্শকরা এমন চরিত্রে আমাকে এর আগে কখনো দেখেননি। এখানে নির্মাতা নারী না পুরুষ, সেটা মুখ্য বিষয় নয়। এটা হৃদির প্রথম ছবি। এর সঙ্গে আমিও জড়িয়ে আছি, যা একটি ভালো দিক। ইনাম স্যারের গল্প। হৃদির স্বপ্নটা প্রপারলি ব্যবহার করেছে।'
তারিন আরও বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা মানেই বিশেষ কিছু। হৃদি তা অর্জন করতে পেরেছে। ডাবিং করেছি, স্ক্রিনের ভেতর হৃদির প্রেজেন্টেশন। গান বা ট্রেইলর থেকে যে সাড়া পেয়েছি, তাতে বলা যায় হৃদি সফল । এটা দায়সারা গোছের নির্মাণ নয়। দারুণ ও গোছানো একটি নির্মাণ।'
সিনেমার বাজেট নিয়ে তারিন বলেন, 'হিউজ আয়োজন ছিল। ১ হাজারের ওপর অভিনেতা অভিনয় করেছে। যুদ্ধের দৃশ্য বাস্তবসম্মত করা হয়েছে। সবাই শ্রম দিয়েছেন। আমার অনুভূতি সুখকর। কোনো নার্ভাসনেস কাজ করছে না। প্রত্যাশার জায়গা হচ্ছে, সুন্দর গল্পের ও সু-নির্মাতার কাজে করেছি।'
নায়ক ফেরদৌস বলেন, 'এই সিনেমায় অভিনয় করার অনুভূতি অসাধারণ। অনেক ভালোবাসার একটি সিনেমা। '১৯৭১ সেই সব দিন' আবেগের সিনেমা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের চরিত্রে অভিনয় করেছি। মুক্তিযুদ্ধ আছে সিনেমায়। বিনোদনের যতরকম উপকরণ, তার সবই আছে এতে।'
'মুক্তিযুদ্ধের সিনেমায় যা যা দরকার সব আছে। হৃদি দারুণ মমতা ও ভালোবাসা দিয়ে কাজটি করেছে। এদেশে মুক্তিযুদ্ধের একটি অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে সিনেমাটি', যোগ করেন তিনি।
অন্য অভিনেতাদের বিষয়ে ফেরদৌস বলেন, 'এত এত গুণী শিল্পী এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন, যা একটা রেকর্ড। আমার বিশ্বাস, সিনেমাটি দর্শকদের ভালো লাগবেই। ১৯৭১ সেই সব দিন একটি ভালো সিনেমা। শতভাগ ভালো সিনেমা বলতে যা বোঝায় এটি তাই। '
মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা বেছে নেবার বিষয়ে পরিচালক হৃদি হক বলেন, 'প্রথম বা দ্বিতীয় সিনেমা আমার কাছে বড় বিষয় না। স্ক্রিপ্টটি আমাকে গভীরভাবে আকর্ষণ করেছিল। এই গল্পটা অনেক দিন আগেই পড়া। এই গল্প নিয়ে মঞ্চে নাটক আছে। এরপর টেলিছবিও করেছি। এটা ৭১ এর গল্প। গল্পটা আকর্ষণীয়।'
'সংলাপ ও চিত্রনাট্য আমার। ভাবনাটা আগেই ছিল—কী ভাবে করব। ভালো অভিনেতাদের নিয়ে কাজটি করব, এটাও ভেবেছিলাম আগে থেকে। শতভাগ পেশাদার শিল্পী নিয়ে কাজটি করতে চেয়েছিলাম। সেভাবেই করেছি', যোগ করেন তিনি।
শুটিং করার পরের অভিজ্ঞতা নিয়ে হৃদি হক বলেন, 'চেয়েছিলাম কাজটা সুন্দর হোক। প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ভালো কাজ করেছেন সবাই। আমি এই সিনেমার সঙ্গে ইমোশনালি জড়িত। কাজটি সচেতন হয়ে করতে হয়েছে। সবকিছু প্রপারলি করতে হয়েছে।
সানজিদা প্রীতি বলেন, 'আমি সবার আগে হৃদি হকের সঙ্গে আড্ডায় জড়িত ছিলাম। নাটকে কাজ করেছি হৃদির সঙ্গে। মানসিকভাবে জড়িত ছিলাম। হঠাত করে সেকেন্ড লট থেকে যুক্ত হই এই সিনেমার সঙ্গে।
তিনি বলেন, কাজটি করার পর মনে হয়েছে খুব ভালো টিমের সঙ্গে কাজ করেছি। ভালো লেগেছে। নির্মাতা শতভাগ ভালো লেগেছে।'
হৃদি হক সম্পর্কে তারিন বলেন, হৃদির কাজের স্টাইলটাও দারুণ । প্রি প্রোডাকশনের জন্য যে পরিমাণ সময় ও শ্রম দিয়েছেন তা সত্যিই মনে রাখার মতো । যথেষ্ট সময় দিয়েছেন হৃদি । প্রতিটি শট, মেকআপ, আর্ট ডিরেকশন সব কিছু সুন্দরভাবে করেছেন। ১৯৭১ সালকে তুলে এনেছেন এটাও বিরাট কিছু ।
সবশেষে হৃদি হক বলেন, 'সিনেমার চরিত্রগুলো নিয়ে এখনই কেউ কিছু বলছি না। দর্শকদের কাছে চাওয়া সবাই হলে এসে ১৯৭১ সেই সব দিন দেখুক।'
তারিন বলেন, 'আমি প্রাউড ফিল করছি মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা ১৯৭১ সেই সব দিনে অভিনয় করে।'
Comments