জানাজানি হওয়ার আগে তো তলে তলে, ভেতরে ভেতরে আমাদের সম্পর্কটা ঠিকই আছে: কাদের

জানাজানি হওয়ার আগে তো তলে তলে, ভেতরে ভেতরে আমাদের সম্পর্কটা ঠিকই আছে: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঠিকই আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'বিএনপির পক্ষ থেকে বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে যে, আমেরিকা আমাদের বিরুদ্ধে।'

তিনি বলেন, 'আমাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আসছে। ভিসা নীতি আসছে—বিএনপির মনে হয় জয় হয়ে গেছে।'

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'কথাটা হচ্ছে এই, আমেরিকা বলছে তারা অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। অন্য কিছু না। এই নির্বাচনে যারা বাধা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আসবে। তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নীতি। আমরা তো ইলেকশন চাই, আমরা কেন বাধা দেবো! আমরা ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন চাই, কাজেই বাধা দেওয়ার প্রসঙ্গ আমাদের বেলায় খাটে না।'

গত ৩ অক্টোবর ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'কোথায় স্যাংশন কোথায় ভিসা নীতি। তলে তলে আপস হয়ে গেছে।'

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বাইডেনের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যে কথা হয়েছে, এটা আপনি জানেন না তারা জানে? নিরাপত্তা উপদেষ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি আমেরিকান সরকারের। তার সঙ্গে কথাগুলো এক সপ্তাহ পরে এসে গেছে। সেখানে এই কথাগুলো হয়ে গেছে। জানাজানি হওয়ার আগে তো তলে তলে। জানাজানি হলো পরে, তাহলে ভেতরে ভেতরে সম্পর্কটা আমাদের ঠিকই আছে।

'জনসভায় যখন বক্তৃতা করব, সেখানে একটু রস-কষ লাগে। ওখানে কথা-বার্তা তলে তলে আর ভেতরে ভেতরে—ওই তলে তলে কথাটা পাবলিক আবার খায়। খেলা হবে যে বলি, এটা কেন বলি? পাবলিক খায়। জনগণ যেটা চায় সেটাই বলবো,' বলেন তিনি।

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের কনসার্ন চীন। আপনি বলছেন ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আছে। সে ক্ষেত্রে কি চীনের সঙ্গে আপনারা দূরত্ব বজায় রাখছেন বা রাখবেন—প্রশ্ন করা হলে কাদের বলেন, 'আমাদের সঙ্গে দূরত্ব তো নেই। আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়নে চীনের ভূমিকা আছে। সেটাকে তো আমরা বাইপাস করতে পারব না। তাদের সাহায্য আমরা নিচ্ছি।

'আমরা কারো সঙ্গে শত্রুতা চাই না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব; এটাই আমাদের নীতি। আর ফখরুল সাহেবরা যে অর্থে বলেন, সে অর্থে আমরা চিন্তা করিনি। এখানে ভারত আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হওয়ার অর্থ এই নয় যে, তারা আমাদের ইলেকশনে এসে ইন্টারফেয়ার করবে। আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। এমন উদ্ভট কল্পনা আমরা করি না। আমাদের ক্ষমতায় বসাতে পারে আমাদের দেশের জনগণ, অন্য কোনো দেশ নয়,' বলেন কাদের।

বিএনপি পরিষ্কারভাবে বলেছে নির্বাচন হতে দেবে না। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন নির্বাচন আদৌ হবে কি না—গণমাধ্যমকর্মীরা দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তিনি বলেন, 'নির্বাচন সময় মতো হবে, সংবিধান অনুযায়ী। কারো স্বার্থে বশীভূত হয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়া আসবে না।'

তিনি বলেন, 'ইলেকশনে আওয়ামী লীগ হেরে গেলে তখনই বিএনপির চোখে একমাত্র অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা হেরে গেলেই তাদের জন্য নির্বাচন ভালো। নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য। এখন আমরা সুইসাইড করব নাকি বিএনপির জন্য? তারা তো যে কোনো মূল্যে ইলেকশনে জিততে চায়, ওই সুবিধাগুলো চায়। এখন এই গ্যারান্টি তাদের কে দেবে? ইলেকশন কমিশন দেবে যে, ইলেকশনে তোমরাই জিতবে। এই গ্যারান্টি না দিলে তারা তো আসবে বলে মনে হয় না।'

বিএনপির বুলির বেলুন, ফাঁপানো বেলুন চুপসে যাবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'জনগণ ছাড়া তো কিছু হয় না। আন্দোলন করবেন, পাবলিক লাগবে। পাবলিক অংশগ্রহণ করেছে আন্দোলনে এমন কিছু দেখাতে পারেননি। নেতাকর্মীদের নিয়ে কিছু কর্মসূচি পালন করেছেন। এ দিয়ে বাংলাদেশে সরকারের ক্ষমতাচ্যুতি সম্ভব না।'

আরেক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমরা প্রস্তুত আছি, অশান্তি করলে অশান্তির জবাব আছে। তারা প্রস্তুত আমরাও প্রস্তুত। তারা নির্বাচনে বাধা দিতে প্রস্তুত, আমরা নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে করতে প্রস্তুত।'

Comments

The Daily Star  | English

Abdul Hamid returns home after treatment in Thailand

Two police officials were withdrawn and two others suspended for negligence in duty regarding the former president's departure from the country

2h ago