ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের পাল্টাপাল্টি হামলাকে যেভাবে দেখছেন মুসলিম বিশ্বের নেতারা
ইসরায়েলে আজ শনিবার সকাল থেকে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস। ইসরায়েলও ফিলিস্তিনের গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে।
দ্য জেরুজালেম পোস্ট বলছে, ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। আলজাজিরার প্রতিবেদন বলছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের অন্তত ২৩২ জন নিহত হয়েছেন।
এই হামলার ঘটনায় অন্যান্য দেশের পাশাপাশি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মুসলিম বিশ্বের নেতারা। আজ আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে তা তুলে ধরা হয়েছে।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, 'দখলদার সন্ত্রাসী ও দখলকারীদের' বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার পূর্ণ অধিকার রয়েছে ফিলিস্তিনি জনগণের।
মিশর
মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার এই উত্তেজনা বৃদ্ধির 'গুরুতর পরিণতি' সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে।
দেশটি 'সর্বোচ্চ সংযম' দেখাতে এবং 'বেসামরিক নাগরিকদের আরও বিপদের সম্মুখীন হওয়া এড়াতে' আহ্বান জানিয়েছে।
মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শউকরিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান জোসেপ বোরেলের সঙ্গে এক আলোচনায় বলেছেন, গুরুতর ঝুঁকি এড়াতে উভয়পক্ষের 'সংযম দেখানো উচিত'।
ইরান
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী হোসেইনি খামেনির এক উপদেষ্টা বলেছেন, ইরান ফিলিস্তিনিদের হামলাকে সমর্থন করছে।
ইরানি বার্তা সংস্থা আইএসএনএ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, খামেনির উপদেষ্টা রহিম সাফাভি বলেছেন, 'আমরা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের অভিনন্দন জানাই। ফিলিস্তিন ও জেরুজালেমের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের পাশে থাকব।'
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের মিত্র হামাসের এই হামলা প্রমাণ করেছে যে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব প্রতিরোধে ফিলিস্তিনিরা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএকে দেশটির সরকারের মুখপাত্র আলি বাহাদোরি-জাহরোমি বলেছেন, 'এই হামলা প্রমাণ করেছে যে ইহুদিবাদী সরকার আগের চেয়ে অনেক বেশি দুর্বল এবং এখন পরিস্থিতি ফিলিস্তিনি যুবকদের হাতে রয়েছে।'
কুয়েত
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে চলমান পরিস্থিতি বিষয়ে 'গভীর উদ্বেগ' প্রকাশ করে কুয়েত এ ঘটনায় ইসরায়েলকে দায়ী করেছে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে 'দখলদারদের উস্কানি দেওয়া বন্ধ' করতে এবং 'বসতি সম্প্রসারণ নীতি' বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কাতার
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে চলমান সহিংসতার জন্য ইসরায়েল একাই দায়ী।
দেশটি উভয়পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযমের আহ্বান জানিয়েছে এবং হামাসের এই হামলার অযুহাতে গাজায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় বাধা দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
সৌদি আরব
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়েছে, তারা অবিলম্বে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
সৌদি সরকারের ভাষ্য, 'আমরা বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনি গ্রুপ এবং ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর মধ্যকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি, যা বেশ কয়েকটি ফ্রন্টে অনেক বেশি সহিংসতার দিকে এগোচ্ছে।'
তুরস্ক
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, 'আমরা সবপক্ষকেই সংযমের আহ্বান জানাই। তাদের অবশ্যই আক্রমণাত্মক কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।'
সংযুক্ত আরব আমিরাত
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারি বার্তা সংস্থা দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, 'সংযুক্ত আরব আমিরাত সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে এবং গুরুতর পরিস্থিতি এড়াতে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে।'
হিজবুল্লাহ
লেবাননের সংগঠন হিজবুল্লাহ তাদের বিবৃতিতে বলেছে, তারা গাজার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং 'ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের নেতৃত্বের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ' রাখছে।
ইসরায়েলে রকেট হামলার বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি 'ইসরায়েলের অব্যাহত দখলদারিত্বের একটি নিষ্পত্তিমূলক প্রতিক্রিয়া এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে যারা চাইছে তাদের জন্য একটি বার্তা'।
Comments