শিশুর স্কুলের টিফিন বক্সে দিতে পারেন মজাদার এই ৫ খাবার

শিশুর স্কুলের টিফিনে এমন খাবার রাখা উচিত, যা মুখরোচক হওয়ার পাশাপাশি পুষ্টিকরও হবে।
ছবি: সংগৃহীত

আদরের ছোট্ট সোনামণি স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে। হয়তো মা এখনও খাইয়ে না দিলে পেট ভরে খেতে খেতেও পারে না। খুব দীর্ঘ সময় স্কুলে না থাকলেও বাচ্চাদের জন্য সময়টা বেশ লম্বা। এই সময়টাতে পুষ্টির চাহিদা মেটাবার জন্য টিফিন দিয়ে দিলেন, কিন্তু দেখা যায় বাচ্চারা না খেয়ে বা অর্ধেক খেয়ে ফেরত নিয়ে আসে। এতে মায়ের মন তো একটু খারাপ হয়ই।

শিশুর স্কুলের টিফিনে এমন খাবার রাখা উচিত, যা মুখরোচক হওয়ার পাশাপাশি পুষ্টিকরও হবে। খাবার এমন হবে যেটা দেখতে সুন্দর, খেতে মজাদার, পুষ্টিকর এবং সেইসঙ্গে শিশু নিজের হাতে অন্যের সাহায্য ছাড়াই খেতে পারবে। 

বাচ্চাকে হরেক রকম টিফিন দেওয়ার জন্য হরেক রকম রেসিপিও চাই। আজ পাঁচটি টিফিন রেসিপি দেওয়া হলো, যা আপনার বাচ্চার জন্য মুখরোচক তো হবেই, সঙ্গে সে পাবে প্রয়োজনীয় পুষ্টি।

মিট চিজ বল

ছবি: সংগৃহীত

উপকরণ:

মুরগি-গরুর মাংসের কিমা, পেঁয়াজ কুঁচি, আদা বাটা, রসুন বাটা, লবণ, চিজ, গোল মরিচ গুঁড়ো, ডিম, বিস্কিটের গুঁড়ো, পাউরুটি, তেল বা বাটার।

তৈরির পদ্ধতি

প্রথমে মাংসের কিমায় সকল মশলা দিয়ে মিশিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। একটি প্যানে তেল দিয়ে তাতে পেঁয়াজ কুঁচি দিয়ে ভেজে উঠিয়ে নিন। সেই তেলে মাংস দিয়ে ভালো করে নেড়ে ঢেকে রাখতে হবে, মাংস সেদ্ধ হয়ে পানি শুকিয়ে যাবে। মাখামাখা হয়ে আসলে ভাজা পেঁয়াজ দিয়ে নেড়ে উঠিয়ে নিতে হবে।

এবার মাংস আর চিজ একসঙ্গে মিশিয়ে নিন ভালোভাবে। পাউরুটির শক্ত অংশ ফেলে দিয়ে নরম অংশগুলো কেটে নিয়ে পাউরুটি পানিতে ভিজিয়ে পানি নিংড়ে নিতে হবে। এবার পানি নিংড়ানো পাউরুটি হাতে নিয়ে ছোট্ট রুটির মত তৈরি করে মাংস ও চিজের মিশ্রণ মাঝে দিয়ে বল বানিয়ে নিতে হবে। বলটি ডিমে ডুবিয়ে নেওয়ার পর ব্রেড ক্রাম্বের গুঁড়োতে গড়িয়ে নিয়ে ডুবো তেলে ভেজে নিলেই তৈরি মিট চিজ বল। চাইলে ফ্রোজেন করে রাখা যাবে ২ মাস পর্যন্ত।

ব্লুবেরি পাফ পেস্ট্রি

ছবি: সংগৃহীত

উপকরণ

ব্লুবেরি, পেস্ট্রি শিট, ক্রিম চিজ, চিনি ও ডিমের কুসুম।

তৈরির পদ্ধতি

ব্লুবেরি পাফ পেস্ট্রি তৈরি করতে কম সময় লাগে, আর বেশ মজাদারও। প্রথমে পেস্ট্রি শিট নিয়ে নিজের পছন্দমতো কেটে নিতে হবে। পেস্ট্রির টুকরোয় ক্রিম চিজ, ব্লুবেরি, চিনির সঙ্গে হালকা ম্যাশ করে ছড়িয়ে দিয়ে ডিমের কুসুমের ওপরে ব্রাশ করে দিতে হবে। তারপর ১৮০° ফারেনহাইট প্রি হিটেটড ওভেনে ১২-১৫ মিনিটের জন্য বেক করে নিলেই ব্লুবেরি পাফ তৈরি। এটিও বানিয়ে সংরক্ষণ করা যাবে এক সপ্তাহ পর্যন্ত।

চিকেন ফিঙ্গার

ছবি: সংগৃহীত

উপকরণ

হাড়বিহীন মুরগির বুকের মাংস, ডিম, আধা কাপ ময়দা, লবণ, সয়াসস, সাদা গোলমরিচের গুঁড়ো, ব্রেড ক্রাম্ব, রসুন বাটা, আদা বাটা, ভাজার জন্য তেল।

তৈরির পদ্ধতি

মুরগির বুকের মাংস ভালো করে ধুয়ে লম্বা করে করে কেটে নিতে হবে, যেন বাচ্চা হাতে নিয়ে খেতে পারে। তারপর এতে আদা বাটা, রসুন বাটা, লবণ, গোল মরিচের গুঁড়ো, সয়াসস মাখিয়ে রেখে দিতে হবে ৩০ মিনিটের জন্য। ভিন্ন ভিন্ন পাত্রে ডিম, ময়দা ও ব্রেড ক্রাম্ব নিয়ে নিন। এবার মেরিনেট করা মুরগির টুকরোগুলো এক এক করে প্রথমে ডিমের মিশ্রণে দিন, তুলে সঙ্গে সঙ্গে ময়দার মিশ্রণে দিন, তারপর আবার ডিমের মিশ্রণে, তারপর আবার ময়দার মিশ্রণে দিয়ে সবশেষে ব্রেড ক্রাম্ব মাখিয়ে ছড়ানো প্লেট বা বাক্সে টুকরোগুলো পাশাপাশি রেখে ডিপ ফ্রিজে তুলে রাখুন। সকালে বাচ্চাকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার আগে ডুবো তেলে মাঝারি আঁচে দুই পাশ ভেজে টিফিন বক্সে দিয়ে দিন মজাদার চিকেন ফিঙ্গার। ফ্রোজেন চিকেন ফিঙ্গার সংরক্ষণ করা যাবে দুই মাস পর্যন্ত।

ডোরা কেক

উপকরণ

ময়দা, বেকিং পাউডার, লবণ, চিনি, ডিম, বাটার, লিকুইড মিল্ক, ভ্যানিলা এসেন্স, নিউটেলা।

তৈরি পদ্ধতি

প্রথমে ময়দা, বেকিং পাউডার আর লবণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর একটা বাটিতে ডিম, দুধ, চিনি আর ভেনিলা এসেন্স মিশিয়ে নিতে হবে। এখন ময়দার সঙ্গে দুধের মিশ্রণ দিয়ে আস্তে আস্তে মিশাতে হবে। এবার একটি প্যান গরম করে বাটার ব্রাশ করে মিশ্রণটি চামচ দিয়ে ঢেলে দিতে হবে। ২-৩ মিনিট সময় লাগবে। তারপর কেক ফুলে উঠলে উল্টে দিতে হবে এবং বাদামী রং হলে নামিয়ে ফেলতে হবে।

এরপর একটা প্লেটে একটা প্যান কেক রেখে তার উপর নিউটেলা ভালোভাবে লাগিয়ে তারওপর আরেকটা প্যান কেক রেখে একটু চাপ দিতে হবে। তৈরি হয়ে যাবে ডোরা কেক।

চিজ টসি

উপকরণ

স্লাইস করা পাউরুটি, পিজ্জা সস, চিজ, সসেজ।

তৈরির পদ্ধতি

সসেজ কেটে নিয়ে বাটার দিয়ে ভেজে নিতে হবে। তারপর পাউরুটিতে পিজ্জা সস, চিজ, ভেজে রাখা সসেজ দিয়ে আরেকটি পাউরুটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। একটা প্যানে ভেজে নিতে হবে যতক্ষণ না পর্যন্ত চিজ গলে না যায়। হয়ে গেলে প্যান থেকে উঠিয়ে কোণাকুণিভাবে কেটে টিফিন বক্সে দিয়ে দিতে হবে।

 

Comments