বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড টেস্ট

উইলিয়ামসন-ভোগান্তি কাটিয়ে লিডের আশায় বাংলাদেশ

বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড টেস্ট
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সিলেট টেস্টের আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে সাদা পোশাকে যে আট ইনিংস খেলেছেন কেইন উইলিয়ামসন, তাতে একটি ইনিংসে মাত্র থেমেছেন পঞ্চাশের আগে। নিউজিল্যান্ডের সেই ব্যাটারকে যখন দুবার জীবন দেয় বাংলাদেশ, কপালে শনির দশা থাকা অনিবার্যই হয়ে পড়ে। শেষমেশ তিনি সেঞ্চুরি করেই থেমেছেন। গলায় কাঁটা হয়ে থাকা উইলিয়ামসনকে ফিরিয়ে এরপর লিডের আশা জাগিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

বুধবার দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় সেশনে ৯৮ রান খরচ করে প্রতিপক্ষের চার ব্যাটারকে বিদায় করে দিয়েছে বাংলাদেশ। ২৬৬ রানে নিউজিল্যান্ডের ৮ উইকেট তুলে নিয়ে লিডের আশা নিয়ে তাই দিনশেষে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেছে তারা। সফরকারীরা এখনও পিছিয়ে আছে ৪৪ রানে।

১৬৮ রানে নিউজিল্যান্ডের ৪ উইকেট তুলে নিয়ে তৃতীয় সেশনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। পাঁচ ওভার পূর্ণ হওয়ার আগেই পেয়ে যায় উইকেট। নাঈম হাসানের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৬ রানেই আউট হয়ে ফেরেন টম ব্লান্ডেল। ১৭৫ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে ফেলে তখন কিউইরা।

কিছুক্ষণ পর বাংলাদেশের পথে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়ানো উইলিয়ামসনকেও একই গন্তব্যে পাঠিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল তারা। ৭০ রানে থাকা অবস্থায় নাঈমের খাটো লেংথের বলে পুল করতে যান উইলিয়ামসন। স্কয়ার লেগে শরিফুলের দিকেই সোজা চলে যায় বল। কিন্তু শরিফুল ইসলাম ক্ষণিকের জন্য 'রোবট' বনে গিয়ে জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকেই ক্যাচ নিতে যান। নিচু হয়ে আসা বলে সামান্য আগবাড়িয়েই নিতে পারতেন যে ক্যাচ! এর আগে ব্যক্তিগত ৬৩ রানে থাকাকালে নাঈমের বলেই মিডউইকেটে উইলিয়ামসনের ক্যাচ ফেলে দেন তাইজুল ইসলাম। সেই ক্যাচটিও ছিল সহজ! 

দুই-দুইটি জীবন পেয়ে যাওয়া ব্যাটারের নাম যদি হয় উইলিয়ামসন, তাহলে সেঞ্চুরি তো অবধারিতই হয়ে পড়ে! উইলিয়ামসনও থামেননি সেঞ্চুরির আগে। ১৮৯ বলে পেয়ে যান নিজের ২৯তম টেস্ট সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের বিপক্ষে যা তার ৭ টেস্টে চতুর্থ শতক।

এর আগে অবশ্য নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় জুটি ভেঙে স্বস্তিতে ফিরে আসে বাংলাদেশ। গ্লেন ফিলিপস এসে শুরু থেকেই আগ্রাসনের সাথে দৃঢ় রক্ষণ মিশিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। শেষমেশ ৭৮ রানের জুটিই কিনা ভেঙে দেন পার্টটাইমার মুমিনুল হক! ইনিংসের ৭৮তম ও নিজের প্রথম ওভারেই মমিনুল পেয়ে যান উইকেট। ৬২ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪২ রান করে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ফিলিপস। দারুণ কায়দায় বল লুফে নেন অধিনায়ক শান্ত।

এরপর সেঞ্চুরি পেয়ে যাওয়া উইলিয়ামসনকে একই পথ দেখিয়ে বাংলাদেশ চলে আসে ফ্রন্ট-ফুটে। নতুন বল নিতেই সাফল্য দেখা দেয়। তাইজুলের আর্ম ডেলিভারি মিস করে উইলিয়ামসন ২০৫ বলে ১১ চারে ১০৪ রানের ইনিংস খেলে থামেন। ৮১তম ওভারে তার ফেরার পর ৮৩তম ওভারে আরেকটি উইকেট শিকার করেন তাইজুল। ইশ সোধিকে শর্ট লেগের ক্যাচ বানিয়ে ফিরিয়ে দেন শূন্য রানেই।

দিনের প্রথম বলেই উইকেট হারিয়ে ৩১০ রানে অলআউট হওয়ার পর বোলিংয়ে বাংলাদেশ শুরু করে ভালো। প্রথম সেশনে নিউজিল্যান্ডের দলীয় ৪৪ রানেই ২ উইকেট তুলে নেয়। ৭৮ রানে প্রথম সেশন শেষ করে কিউইরা একশ পাড়ি দেওয়ার আগেই হারিয়ে ফেলে আরেকটি উইকেট। চতুর্থ উইকেট জুটিতে এরপর ড্যারিল মিচেল ও উইলিয়ামসন ভোগান্তিতে ফেলেন বাংলাদেশি বোলারদের।

যদিও মিচেলের আউটে রিভিউ না নিয়ে এবং উইলিয়ামসনের ক্যাচ ফেলে সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। শেষমেশ ৬৬ রানের জুটি ভাঙে মিচেল ৪১ রানে আউট হলে। শেষ বিকেলের সেশনে অবশ্য চারটি উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশর চোখেই এখন ভাসছে লিড!

দিনে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল। টেস্ট-স্পেশালিস্ট খ্যাত তারকার শিকার ৮৯ রানে ৪ উইকেট। এছাড়া, একটি করে উইকেট গেছে নাঈম, শরিফুল, মুমিনুল ও মেহেদী হাসান মিরাজের ঝুলিতে। অফ স্পিনার নাঈম অবশ্য নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন।

Comments

The Daily Star  | English

Eid meat: Stories of sacrifice, sharing and struggle

While the well-off fulfilled their religious duty by sacrificing cows and goats, crowds of people -- less fortunate and often overlooked -- stood patiently outside gates, waiting for a small share of meat they could take home to their families

13h ago