‘এটি ছিল আমাদের আনন্দের সফর, এখন দুঃস্বপ্ন হয়ে রইল’

বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনার আকস্মিকতায় এখনো হতভম্ব যাত্রীরা। ছবি: স্টার

কুষ্টিয়ার পোড়াদহ থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে করে ঢাকায় আসছিলেন তানিয়া। হঠাৎ ট্রেনটিতে আগুন লেগে গেলে দুই মেয়েকে নিয়ে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন তিনি। ঘটনাস্থলে যখন তার সঙ্গে কথা হচ্ছিল, তখনো ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব ছিলেন তিনি। 

তানিয়া জানান, তাদের পাশের 'চ' বগিতে প্রথম আগুন দেখা যায়।

তিনি বলেন, 'সবাই বলছিল যে, এটা গ্যাস থেকে শুরু হয়েছে। হৈ-চৈ হচ্ছিল। কেউ চেন টেনে ট্রেন থামিয়ে দিলো। আমি দুই মেয়েসহ ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিলাম।'

একই স্টেশন থেকে আসা আতিয়ার জানান, 'চ' বগির পাশে একটি পাওয়ার কার রুম ছিল। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।

তিনি বলেন, 'আমি ছেলে ও নাতীসহ "জ" বগি থেকে লাফ দিয়েছিলাম। আমাদের দুটি লাগেজ ট্রেনের ভেতরেই রেখে আসতে হয়েছে।'

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে আসছিলেন কাঠমিস্ত্রি আশরাফুল হক। তারা 'ছ' বগিতে ছিলেন। ৯ জানুয়ারি আশরাফুলের দুবাই যাওয়ার কথা রয়েছে।

আগুনের বিভীষিকা এখনো তাড়া করছে যাত্রীদের। ছবি: স্টার

তিনি যখন তাদের বগিতে ধোঁয়া দেখতে পান, ট্রেন থামার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি তার তিন বছরের মেয়েকে ট্রেনের বাইরে একজনের দিকে ছুড়ে দেন।  এরপর তিনজন ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন।

আশরাফুল বলেন, 'আমার পাসপোর্ট, নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং লাগেজ ট্রেনের ভেতরেই ছিল। আমার চোখের সামনেই সেগুলো পুড়ে গেছে।'

লালমাটিয়া গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক এস এম জয় জানান, তিনি স্ত্রীকে নিয়ে কলকাতা থেকে আসছিলেন। তারা 'ছ' বগিতে ছিলেন।

'ট্রেনটি সায়েদাবাদ ছাড়ার কিছুক্ষণ পর হঠাৎ থেমে যায়। আমরা ভেবেছিলাম স্টেশনে পৌঁছেছি। কিন্তু হঠাৎ আগুন দেখে আমরা ভয় পেয়ে গেলাম। আমাদের সমস্ত লাগেজ রেখে ট্রেন থেকে লাফ দিলাম', বলেন তিনি।

এস এম জয় বলেন, 'এটি ছিল আমাদের আনন্দের সফর। কিন্তু এখন একটি দুঃস্বপ্ন হয়ে রইল।'

 

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

5h ago