সচিবদের নিয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা সচিবদের নিয়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ ধরনের বৈঠককে 'সচিব সভা' বলা হয়। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি সভার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত এ সচিব সভাটি অনুষ্ঠিত হলে এটি হবে বর্তমান সরকারের আমলে প্রথম সচিব সভা। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সর্বশেষ সচিব সভা হয়েছিল ২০২২ সালের ২৭ নভেম্বর। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে জানান, সচিব সভায় উপস্থিত থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রী মৌখিক সম্মতি দিয়েছেন। বৈঠকটি কোথায় অনুষ্ঠিত হবে শিগগিরই জানা যাবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সচিব সভা সাধারণত সচিবালয়েই হতো। কিন্তু সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী গত কয়েক বছর ধরে কম যাচ্ছেন। মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকগুলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে হচ্ছে, যেগুলো সাধারণত সচিবালয়ে হতো। তাই এবার সচিবালয়ে সচিব সভা হওয়ার সম্ভাবনা কম। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সভা হওয়া সম্ভাবনা আছে। তবে এর আগে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়েও সচিব সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এবারের সচিব সভায় অন্তত আটটি বিষয়ে এজেন্ডাভুক্ত হতে পারে বলে জানা গেছে। যদিও এজেন্ডা চূড়ান্ত হবে আরও কয়েকদিন পর। দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে, এবারে সচিব সভায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেতে পারে আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের ভূমিকার বিষয়টি। এর বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, আগের সচিব সভার সিদ্ধান্ত অগ্রগতি, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করবেন সচিবরা।

সচিব সভা আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এমন এক কর্মকর্তা (বর্তমানে সচিব) নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে বলেন, সচিব সভায় নির্ধারিত এজেন্ডা থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর তাৎক্ষণিক বক্তব্যই মূল বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ সরকার প্রধান বছরে একবার সচিবদের সঙ্গে আলাদাভাবে বসেন। তাই বৈঠকে কিছু দিকনির্দেশনা দেন তিনি। যা বছরজুড়ে সরকারের নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণে মেনে চলেন সচিবরা।

এবারের সচিব সভায় দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে কড়া বার্তা দিতে পারেন সরকার প্রধান, এমন তথ্য জানিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের চাহিদার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়ে থাকেন। কিন্তু সরকারি সেবা পেতে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। দিন দিন এ সমস্যা বাড়ছে বলে খোদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারাও উপলব্ধি করছেন। তাই দুর্নীতি প্রতিরোধে সর্বাত্মক উদ্যোগ নেওয়ার ব্যাপারে সচিবদের প্রতি নির্দেশ আসতে পারে।

শুধু সচিবদের নিয়ে এমন বৈঠকে সচিবরা নিজেদের পক্ষ থেকে কিছু আবদার করবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে এক সচিব বলেন, 'বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন কোনো সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে দাবি জানানোর সুযোগ নেই।'

তিনি বলেন, সংকটের সময়টাকে সফলভাবে মোকাবিলা করে একটা ভালো অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে উত্তরণই সবার মূল টার্গেট। সচিবরা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা হওয়ায় এই অবস্থান থেকে নতুন কিছু, বিশেষ করে নিজেদের সুযোগ সুবিধার বিষয়ে কিছু চাওয়া সমীচীন হবে না।

সচিব সভায় প্রধানমন্ত্রী প্রধান অতিথি এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব সভাপতিত্ব করেন। এতে দেশের ৫৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের সঙ্গে বিভিন্ন দপ্তর বা সংস্থায় কাজ করা সচিবরাও উপস্থিত থাকেন। বর্তমানে নিয়মিত ও চুক্তিভিত্তিক মিলিয়ে ৮৭ জন সচিব ও সিনিয়র সচিব দায়িত্ব পালন করছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

7h ago