দেশ ভয়ংকর রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংকটে নিমজ্জিত: সিপিবি

সিপিবি

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, 'দেশ ভয়ংকর রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংকটে নিমজ্জিত। এখান থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে আমাদেরকে ৫২ ও ৭১ এর মূল চেতনাকে সমুন্নত রেখে এগিয়ে যেতে হবে। দেশে যে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়েছে তা মানুষের মৌলিক অধিকারকে হরণ করেছে। সেই স্বৈরশাসনের কালো থাবা থেকে দেশকে মুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। ৫২ আমাদেরকে এই শিক্ষাই দেয়।' 

আজ ২১ ফেব্রুয়ারি এক যুক্ত বিবৃতিতে তারা এ কথা বলেন।

শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সিপিবি আজ সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে ঢাকার পলাশী মোড় থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রভাতফেরি করে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা, কোষাধ্যক্ষ ডা. ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জলি তালুকদার, মানবেন্দ্র দেব, সংগঠক জাহিদ হোসেন খানসহ নেতাকর্মীরা প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণ করেন।

এ ছাড়া সারাদেশে সিপিবির নেতাকর্মীরা প্রভাতফেরি করে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

বিবৃতিতে সিপিবি নেতারা বলেন, 'স্বৈরশাসকরা আমাদের প্রভাতফেরির সংস্কৃতিকে রাতের অন্ধকারে নিয়ে গিয়েছিল। সেই অন্ধকার থেকে প্রভাতফেরিকে রক্ত পলাশ ও শিমুলের রাঙা প্রভাতে ফিরিয়ে আনাই আমাদের অঙ্গীকার। সেই কারণে আমরা নগ্ন পায়ে রাঙা প্রভাতে শহীদবেদিতে এসেছি এবং সারাদেশে আমাদের সহযোদ্ধারা প্রভাতফেরি করে স্থানীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।'

নেতারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের 'চরম অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলার' তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, 'এটি স্মরণকালের সবচাইতে অব্যবস্থাপনাপূর্ণ ও বিশৃঙ্খল আয়োজন হয়েছে। স্বৈরাচারী ও একদলীয় শাসনের প্রভাব সুস্পষ্ট পরিলক্ষিত এই আয়োজনে, যা কিনা ভাষা আন্দোলনের মূল চেতনার সঙ্গে কোনোভাবেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়। নিশ্চয়ই জনগণের সংগ্রাম ৫২ এর চেতনায় উদ্ভাসিত হয়ে মুক্তির পথ নির্দেশ করবে। শহীদ স্মৃতি অমর হোক।'

আজ এক বিবৃতিতে সিপিবি আরও বলে, 'উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কথা বলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সরকারের ভুলনীতি ও দুর্নীতির কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে। এর দায় সাধারণ জনগণ নেবে না।'

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, 'আমরা অনেকদিন ধরেই বলে আসছিলাম, সরকারের ভুলনীতির কারণেই বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে। সরকার এ কথায় কর্ণপাত করেনি, বরং খোঁড়া যুক্তি দেখিয়ে বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। আর এখন আইএমএফের শর্ত পূরণ করতে ভর্তুকি প্রত্যাহারের নামে জনগণের কাঁধে এই মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপানো হচ্ছে।'

তারা আরও বলেন, 'শুধু আমরা না, বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলেছেন দাম না বাড়িয়ে বরং দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব। সরকার সেদিকে এগোচ্ছে না। রেন্টাল, কুইক রেন্টাল এখনও বন্ধ করা হয়নি। বিদ্যুৎ খাতের দায়মুক্তি আইন বাতিল করা হয়নি। অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে হাজার হাজার কোটি টাকার বোঝা জনগণের কাঁধেই চাপানো হচ্ছে।'

বিবৃতিতে নেতারা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা থেকে সরে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। একইসঙ্গে মূল্য সমন্বয়ের নামে নিয়মিত বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা থেকেও সরে আসার আহ্বান জানান।

নেতারা বলেন, 'সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি অথচ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কষাঘাতে জনজীবন অতিষ্ঠ। এরপর বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি হলে বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়াবে। তারাও দাম বাড়িয়ে জনগণের কাঁধে ওই উৎপাদিত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির বোঝা চাপাবে।'

বিবৃতিতে সিপিবি নেতারা বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সচেতন দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

Comments

The Daily Star  | English

Central bank at odds with BPO over Nagad’s future

The discord became apparent after Faiz Ahmed Taiyeb, special assistant to the chief adviser with authority over the Ministry of Posts, Telecommunications and IT, sent a letter to the BB governor on May 12 and posted the letter to his Facebook account recently

1h ago