আমার জন্য নেজাম বান্দরবানে বদলি হয়েছিল: অপহৃত ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী

ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ
মো. নিজাম উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দীন ২০১৭ সালে এই শাখায় বদলি হন। এর আগে তিনি কক্সবাজারে ছিলেন।

তার স্ত্রী মাইসুরা ইসফাত দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানান।

গত মঙ্গলবার রাতে রুমা উপজেলা প্রশাসন কমপ্লেক্স ভবনে হামলা চালিয়ে সোনালী ব্যাংক থেকে অস্ত্র ও টাকা লুট করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এ সময় তারা ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে অপহরণ করে।

অপহরণের প্রায় ৪৫ ঘণ্টা পর আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে র‍্যাব জানিয়েছে।

এর কিছু সময় আগে কথা হয় নেজাম উদ্দিনের স্ত্রী মাইসুরা ইসফাতের সঙ্গে। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত দুই দিন নেজামের সঙ্গে আমার কোনো কথা হয়নি। কোথায় আছে, কেমন আছে জানি না। শঙ্কা ও আতঙ্কে আমার সময় কাটছে।'  

'আমাদের সাড়ে চার বছরের একটা ছেলে আছে। ছেলেটা এখানে একটি কিন্ডারগার্ডেনে পড়ে। বাচ্চাটা গত দুইদিন ধরে বাবার জন্য কেঁদে কেঁদে অস্থির। কিছুই খাচ্ছে না। বাবাকে ছাড়া সে এক মুহূর্তও থাকতে পারে না। সব সময় বাবার কথা জানতে চাচ্ছে,' যোগ করেন তিনি।

এই দম্পতি দুজনই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী জানিয়ে ইসফাত বলেন, 'আমি ২০১৭ সালে বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দর্শন বিভাগে যোগ দেই। ওই বছর আমার জন্য নেজাম কক্সবাজার থেকে বান্দরবানে বদলি হয়ে আসে।'

তিনি জানান, ব্যাংক কর্মকর্তা নেজাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩তম ব্যাচের বন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। ইসফাতও একই ব্যাচের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।   

সবশেষ কখন কথা হয়েছিল, জানতে চাইলে ইসফাত বলেন, 'শেষ কথা হয়েছিল অপহরণের ঘটনার আগে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে। নামাজ শেষে বাসায় আসবে বলছিল। তার কিছুক্ষণ পরেই এ ঘটনা ঘটে।'

কেউ মুক্তিপণ চেয়েছিল কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'গতকাল বুধবার রাতে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন দিয়ে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিল। তবে আমার স্বামীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তাকে দিতে পারেনি। কথা বলে মনে হয়েছে ফেইক। কেউ হয়ত প্রতারণার জন্য ফোন দিয়েছিল।'

রুমা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা দিদারুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, নেজাম উদ্দীনের বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায়।

অপহরণের বিষয়ে তিনি বলেন, 'মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে দুবৃর্ত্তরা উপজেলা প্রশাসন কমপ্লেক্সের মসজিদে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। তখন নামাজের জন্য অনেক কর্মকর্তা সেখানে ছিলেন। তাদেরকে সবাইকে বন্দি করে সন্ত্রাসীরা প্রচণ্ড মারধর করে। তারা অস্ত্র হাতে ব্যাংক ম্যানেজারকে জিম্মি করে ব্যাংকে নিয়ে যায়।'

তিনি আরও বলেন, 'ডাকাতরা ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্রও লুট করেছে। তারা পুলিশের দুটি এসএমজি ও ৬০ রাউন্ড গুলি, আটটি চীনা রাইফেল ও ৩২০ রাউন্ড গুলি এবং আনসারের চারটি শর্টগান ও ৩৫ রাউন্ড গুলি লুট করেছে।'

ঘটনাটি কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Manu Mia, who dug thousands of graves without pay, passes away

He had been digging graves for 50 years and never accepted any payment for his service

1h ago