১ বছরে জার্মান নাগরিকত্ব পেলেন ২ লাখের বেশি বিদেশি

জার্মান পাসপোর্ট। প্রতীকী ফাইল ছবি: ডয়চে ভেলে
জার্মান পাসপোর্ট। প্রতীকী ফাইল ছবি: ডয়চে ভেলে

২০২৩ সালে ১৫৭ দেশের দুই লাখ ১০০ বিদেশিকে দেয়া হয়েছে জার্মানির নাগরিকত্ব৷ সংখ্যাটি তার আগের বছরের তুলনায় অন্তত ১৯ শতাংশ বেশি৷

জার্মানিতে বসবাসরত এক কোটি ২০ লাখ অভিবাসীর বা ১৪ শতাংশের জার্মান পাসপোর্ট নেই৷ এদের মধ্যে আবার ৫৩ লাখ মানুষ অন্তত দশ বছর ধরে জার্মানিতে বসবাস করছেন৷

গতকাল মঙ্গলবার দেশটির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দপ্তর জানিয়েছে, ২০০০ সালের পর এবার রেকর্ড সংখ্যক বিদেশি জার্মানির নাগরিকত্ব পেয়েছেন৷

জার্মানির পাসপোর্ট

জার্মান পাসপোর্ট পাওয়ার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সিরিয়া, তুরস্ক, ইরাক, রোমানিয়া এবং আফগানিস্তানের নাম৷ সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার পাঁচশ সিরীয় নাগরিক গত বছর জার্মানির নাগরিক হয়েছেন৷ এসব সিরীয় নাগরিকরা গড়ে ছয় বছর নয় মাস ধরে জার্মানিতে ছিলেন৷ তাদের ৬৪ শতাংশ পুরুষ৷

২০১৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে অসংখ্য সিরীয় গৃহযুদ্ধ থেকে পালিয়ে জার্মানিতে আশ্রয় নিয়েছেন৷ এ কারণেই নাগরিকত্ব অর্জনের তালিকায় তারা এগিয়ে রয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷

দ্বিতীয় অবস্থানে আছে তুরস্ক ও ইরাকের নাম৷ গত বছর এ দুটি দেশ থেকে ১০ হাজার সাতশ জন করে জার্মানির পাসপোর্ট পেয়েছেন৷ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নাগরিকত্ব অর্জনের ক্ষেত্রে ইরাকিদের সংখ্যা আগের চেয়ে ৫৭ ভাগ বেড়েছে৷ আর তুরস্কের ক্ষেত্রে তা ২৫ ভাগ কমেছে৷

ইউরোপীয় ইউনিয়নের শেনজেন জোনে সম্প্রতি আংশিক অন্তর্ভুক্তি পাওয়া রোমানিয়ার সাত হাজার ছয়শ নাগরিক ২০২৩ সালে জার্মান পাসপোর্ট পেয়েছেন৷ আগের চেয়ে তাদের সংখ্যা বেড়েছে আট শতাংশ৷ আর আফগানদের নাগরিকত্ব অর্জনের হার ৫৫ শতাংশ বেড়েছে৷ আফগানিস্তান থেকে আসা সাড়ে ছয় হাজার অভিবাসী গত বছর জার্মানির নাগরিকত্ব পেয়েছেন৷

কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে জার্মান নাগরিকত্ব পাওয়া ব্যক্তিদের গড় বয়স ২৯ দশমিক তিন বছর৷ জার্মানির নতুন নাগরিকরা দেশটির মোট জনসংখ্যার আনুমানিক গড় বয়স ৪৪ দশমিক ৬-এর তুলনায় তরুণ৷

এর আগের বছর, অর্থাৎ ২০২২ সালে এক লাখ ৬৮ হাজার ৫৪৫ জন বিদেশিকে জার্মান নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছিল৷

অভিবাসন আইনের আধুনিকায়ন

সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, জার্মানিতে বসবাসরত এক কোটি ২০ লাখ অভিবাসীর বা ১৪ শতাংশের জার্মান পাসপোর্ট নেই৷ এদের মধ্যে আবার ৫৩ লাখ মানুষ অন্তত দশ বছর ধরে জার্মানিতে বসবাস করছেন৷

বার্ধক্যসহ বিভিন্ন কারণে তৈরি হওয়া শ্রম ঘাটতি মেটাতে জার্মানি তার নাগরিকত্ব আইনের আধুনিকায়ন করেছে৷

গত জানুয়ারিতে অভিবাসীদের জন্য নাগরিকত্ব অর্জনকে আগের তুলনায় সহজ করে এবং দক্ষ কর্মীদের জন্য দেশটিকে আরো আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করতে অভিবাসন আইন সংস্কার করেছে জার্মানি৷

নতুন নিয়মে যারা জার্মানির নাগরিকত্ব চেয়ে আবেদন করবেন, তাদের আগের দেশের নাগরিকত্ব ছাড়তে হবে না৷ দুই দেশের আইনি কাঠামোকে বিবেচনায় নিয়ে দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ রাখা হয়েছে নতুন নিয়মে৷ নাগরিকত্ব অর্জনের সময়সীমা আট বছর থেকে কমিয়ে করা হয়েছে পাঁচ বছর৷

'অতিথি কর্মী' প্রজন্মের জন্য বিশেষ সুযোগ

'অতিথি কর্মীদের' অবদানের প্রতি সম্মান জানিয়ে তাদের প্রজন্মের জন্য জার্মান নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ আরো সহজ করা হয়েছে৷

এই প্রজন্মের অভিবাসীদের যারা জার্মান ভাষায় দক্ষতা দেখাতে পারবেন তারা নাগরিকত্ব অর্জনের পরীক্ষায় অংশ না নিয়েই সরাসরি পাসপোর্ট চাইতে পারবেন৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অর্থনীতি পুনর্গঠনের জন্য শ্রমিকের অভাব দেখা দেয় জার্মানিতে৷ ওই সময় কয়েক হাজার অতিথি কর্মীদের জন্য দরজা খুলে দেয় দেশটি৷ এসব অতিথি কর্মীদের বেশিরভাগই তুরস্ক ও ইটালির নাগরিক এবং তাদের বেশিরভাগই ছিলেন পুরুষ৷

রয়টার্স, ডিপিএ

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

4h ago