তীররক্ষা কাজ বন্ধ, বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকিতে ধরলাপাড়ের সহস্রাধিক পরিবার

প্রকল্পের কাজ বন্ধ আছে প্রায় দেড় বছর ধরে। ছবি: সংগৃহীত

তীররক্ষা প্রকল্পের কাজ সময়মতো শেষ না হওয়ায় বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের তিন গ্রামের গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার। গ্রামগুলো হলো হলোখানা, সারডোব ও চর কাগজীপাড়া।

এমন পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছে।

এক্ষেত্রে পাউবো বলছে ২০২১ সালের ৯মে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল গত বছরের ৩১মে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে আরও প্রায় দেড় বছর কেটে গেলেও মোট কাজ হয়েছে ৩৭ শতাংশ। অন্যদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি এ সময়ের মধ্যে কাজ হয়েছে ৬০ শতাংশ।

কুড়িগ্রাম পাউবোর প্রকৌশলীদের ভাষ্য, হলোখানা ইউনিয়নে  ধরলা নদীর ৪৫০ মিটার তীররক্ষা কাজের চুক্তি করা হয় ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাউন্ডেশন ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের (এফইএল) স্বত্বাধিকারী জিহান জেনিফার হাসানের সাথে। কাজের চুক্তিমুল্য ধরা হয় ১২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। চুক্তি অনুসারে ধরলাপাড়ে এক লাখ ৩০ হাজার ৯৮৪টি সিসি ব্লক নির্মাণ করে তা ডাম্পিং ও প্লেসিং করার কথা ছিল। তবে ঠিকাদার ২৫ হাজার ১২২টি সিসি ব্লক নির্মাণ করে ফেলে রেখেছে। সামান্য কিছু সিসি ব্লক ডাম্পিং করা হয়েছে। নদীতীরের মাটির কাজও অসম্পূর্ণ রাখা হয়েছে। কাজ বন্ধ আছে ২০২২ সালের মে মাস থেকে। সে অনুসারে ঠিকাদারকে ৩৩ শতাংশ কাজের বিলের অর্থ, অর্থাৎ ৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সারডোব এলাকাটি একইসঙ্গে বন্যা ও ভাঙনপ্রবণ এলাকা। কাজটি সময়মতো শেষ হলে তারা অনেকটা স্বস্তিতে থাকতেন।

এ ব্যাপারে জিহান জেনিফার হাসানের বক্তব্য, পাউবো তার সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছে। কাজের ভৌত অগ্রগতির বিল চেয়েও তিনি পাননি। ফলে আর্থিক সংকটে প্রকল্পের কাজ মাঝপথে থেমে গেছে।

জিহান জেনিফার হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কাজের শুরুতে আমাকে স্থানীয় চাঁদাবাজদের সামলাতে হয়েছে। পাশাপাশি ২০২২ সালের বন্যায় বিপুল পরিমানের সিসি ব্লক পানিতে ডুবে যায়, যার বেশিরভাগই উদ্ধার করা যায়নি।'

এই ঠিকাদারের দাবি, নদীতীরে মাটির কাজের সঙ্গে জিও টেক্সটাইলের কাজ শেষ করা হলেও পাউবো তা মূল্যায়ন করেনি। এ অবস্থায় প্রকল্পের মূল্য পুনর্নির্ধারণ করে কাজের সুযোগ দিলে তিনি দ্রুত কাজ শেষ করতে পারবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তবে পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইসমত ত্বোহা বলছেন, ঠিকাদার হাসান প্রকল্পের কাজ নিয়ে মনগড়া তথ্য দিয়েছেন। পাউবোর সঙ্গে কোনো ধরনের পরামর্শ ছাড়াই প্রকল্পের কাজ বন্ধ রেখেছেন তিনি। এ নিয়ে তাকে চিঠি দেওয়া হলেও তিনি তার জবাব দিচ্ছেন না।

প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেই কাজের অগ্রগতি মূল্যায়ন করা হয়েছে জানিয়ে এ প্রকৌশলী আরও বলেন, 'এই প্রকল্পের কাজে ঠিকাদারই নীতিবহির্ভূত আচরণ করেছেন। আর এখানে মূল্য পুনর্নির্ধারনের কোনো সুযোগও নেই। আগের দরেই তাকে কাজ শেষ করতে হবে।'

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান ইসমত ত্বোহা।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

3h ago