যে ৫ কারণে প্রতিদিন দুধ পান করা উচিত

প্রতীকী ছবি।

দুধ হচ্ছে সুষম খাদ্য। অর্থাৎ, দুধের মধ্যে খাদ্যের ছয়টি উপাদান—কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, স্নেহ, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি—সঠিক অনুপাতে পাওয়া যায়।

প্রকৃতি থেকে পাওয়া একটি সম্পূর্ণ খাদ্য হচ্ছে দুধ। শতাব্দী ধরে এটি মানুষের অন্যতম প্রধান খাদ্য হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে।

এটা শুধু একটি পানীয় নয়, বরং প্রয়োজনীয় প্রায় সকল পুষ্টির একটি উৎস। মানবদেহকে সুস্থ রাখতে এটি অতুলনীয়।

অন্তত পাঁচটি কারণে একজন মানুষের প্রতিদিন দুধ পান করা উচিত।

১. ক্যালসিয়ামের অন্যতম উৎস

হাড় ও দাঁত শক্তিশালী রাখতে ক্যালসিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুধ এই অত্যাবশ্যক খনিজের সেরা উত্সগুলোর মধ্যে একটি। হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়া ও ভাঙা যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হওয়া অস্টিওপরোসিস এবং দাঁতের নানা সমস্যা তৈরি হওয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে দুধ।

পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণ মানব দেহের জন্য জরুরি বিষয়। বিশেষ করে শৈশব ও কৈশোরে যখন হাড়ের বৃদ্ধি হয় তখন ক্যালসিয়াম গ্রহণ বেশি জরুরি। কেননা বেড়ে ওঠার সময় শরীরের হাড় মজবুত না হলে তা সারা জীবনের জন্য সমস্যার কারণ হতে পারে।

প্রাপ্তবয়স্করা নিয়মিত ক্যালসিয়াম গ্রহণ করলে হাড়ের ঘনত্ব ঠিক থাকে এবং হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি কমায়।

২. উচ্চ মানের প্রোটিন

মানবদেহের টিস্যু তৈরি ও মেরামত করতে, এনজাইম ও হরমোন তৈরি করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে প্রোটিন। এটি একটি অপরিহার্য ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট। দুধে থাকে নয়টি অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিড। এর কারণে, দুধ সম্পূর্ণ প্রোটিনের একটি উৎস।

প্রতিদিন দুধ পান করলে তা শরীরে প্রোটিনের চাহিদা পরিপূর্ণভাবে মেটাতে সাহায্য করতে পারে। প্রত্যাহিক কাজে এটি খুবই জরুরি।

৩. ভিটামিন ও খনিজের উৎস

দুধ ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ, যা ক্যালসিয়াম ধরে রাখে এবং হাড় মজবুত করে।

এ ছাড়া, দুধে রয়েছে ভিটামিন বি১২, যা লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন করে, শরীরের স্নায়বিক কার্যক্রম পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

দুধে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অপরিহার্য।

পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। দুধে এই উপাদানগুলোও পাওয়া যায়।

৪. ওজন নিয়ন্ত্রণ

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় দুধ রাখলে তা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। দুধের প্রোটিন ও স্নেহজাতীয় উপাদানের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে সেটা পেটে থাকে। ফলে ক্ষুধা কম থাকে। এতে করে অতিরিক্ত খাওয়া কমিয়ে সামগ্রিকভাবে ক্যালোরি গ্রহণ কমাবে।

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করেন, তারা স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখতে পারেন। এমনকি, সুষম খাদ্য ও নিয়মিত ব্যায়াম করলে তাদের ওজন কমার সম্ভাবনাও বেশি থাকে।

৫. শরীরে তরলের চাহিদা পূরণ

দুধের প্রায় ৯০ শতাংশ পানি। ফলে, শরীরে তরল বা পানির চাহিদা পূরণে এটি খুবই ভালো উত্স।

শরীরে পর্যাপ্ত পানি থাকা বা শরীর হাইড্রেটেড থাকা অত্যাবশ্যক। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, পুষ্টি পরিবহন এবং বর্জ্য বের করে দেওয়ার জন্য এটি জরুরি।

দুধের ইলেক্ট্রোলাইট—যেমন: পটাসিয়াম ও সোডিয়াম—শরীরে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

সুতরাং, সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

 

অনুবাদ: জান্নাতুল ফেরদৌস

Comments

The Daily Star  | English
Prof Yunus in Time magazine's 100 list 2025

Prof Yunus named among Time’s 100 Most Influential People of 2025

A tribute article on Prof Yunus was written by Hillary Clinton for the magazine

3h ago