সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ ৬৮ শতাংশ কমেছে

সুইস ব্যাংক, সুইস ফ্রাঁম, ফ্রাঁ, সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক, আহসান এইচ মনসুর, অর্থ পাচার,
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক। ছবি: রয়টার্স

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশি নাগরিক ও ব্যাংকগুলোর আমানত গত বছর ৬৮ শতাংশ কমে ১৭ দশমিক ৭১ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ-তে দাঁড়িয়েছে, যা এ যাবৎকালের সর্বনিম্ন।

গতকাল প্রকাশিত সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে বাংলাদেশি ব্যাংক ও ব্যক্তির আমানতের পরিমাণ ছিল ৫৫ দশমিক ২ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ।

এ নিয়ে টানা দুই বছর সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের রাখা অর্থের পরিমাণ কমেছে। তবে দুজন বিশ্লেষক মনে করেন, সুইস ব্যাংকে আমানত কমে যাওয়ার মানে এই নয় যে, দেশ থেকে অবৈধভাবে পুঁজি পাচার বন্ধ হয়ে গেছে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, 'অবশ্যই দেশের বাইরে অবৈধ অর্থ পাচার বেড়েছে ও পাচার হচ্ছে। কিন্তু সুইস ব্যাংক এখন আর পছন্দের গন্তব্য নয়। এটি এখন আর পরিচয় গোপন রাখার জায়গা নয়।'

'এখন দুবাই ও সিঙ্গাপুর সবচেয়ে কাছের গন্তব্য হিসেবে পছন্দের শীর্ষে আছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও ইংল্যান্ডের রিয়েল এস্টেট এবং ব্যবসায়ে অর্থ পাচার এবং বিনিয়োগ করা হয়,' বলেন তিনি।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, সেখানে যারা টাকা স্থানান্তর করেছেন সেখানে তাদের ব্যবসা আছে। সিঙ্গাপুর ও দুবাইয়ে তাদের নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, 'সুইজারল্যান্ড একসময় আমানতকারীদের তথ্য গোপন রাখত। কিন্তু এখন আর সেসব করছে না। কোনো দেশের সরকার খোঁজ নিলে তারা এখন তথ্য দিয়ে থাকে।'

সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশিরা সুইস ব্যাংকে ১৩ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ রেখেছেন, ১৯৯৭ সালের পর সর্বনিম্ন।

যা ১৭ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ফ্রাঁ বা ১৯ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন ডলারের মোট আমানতের ৭৮ শতাংশ। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশি মুদ্রায় আমানত ছিল ২৩৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশি নাগরিকদের আমানতের পরিমাণ ছিল ১৮৪ কোটি টাকা।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, সুইজারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশিরা হয়তো আমানতের একটি অংশ রেখেছেন। আর বাংলাদেশের রিজার্ভের একটি অংশ সেখানে রাখা আছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অবৈধ অর্থ স্থানান্তরের অনেক গন্তব্যের মধ্যে সুইজারল্যান্ড অন্যতম।

'এক সময় সুইজারল্যান্ড একটি প্রচলিত গন্তব্য ছিল। কিন্তু অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় যুক্ত হওয়ার পর থেকে দেশটি আকর্ষণ হারিয়েছে,' বলেন তিনি।

মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, 'অবৈধ অর্থ স্থানান্তরের জন্য আরও অনেক গন্তব্য তৈরি হয়েছে এবং সেগুলো আরও আকর্ষণীয়।'

'এছাড়াও, অর্থ রাখার জন্য অফশোর গন্তব্য রয়েছে। চাইলে কেউ যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় সম্পত্তি কিনতে পারে, যা সুইজারল্যান্ডের ক্ষেত্রে সহজ নয়।'

তিনি বলেন, 'তাই সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশি নাগরিক ও ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে বলে অবৈধভাবে পুঁজি পাচার কমে গেছে এমনটা ভেবে স্বস্তি পাওয়ার কোনো কারণ নেই।'

Comments

The Daily Star  | English
BDR protest Kakrail today

Cops use water cannons to disperse protesting dismissed BDR members in Kakrail

Police barred them when they were marching towards the chief adviser’s residence, Jamuna

51m ago