যশোরের পদ্মবিলা বাঁওড়ের মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ

এক্সকেভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে পদ্মবিলা বাঁওড়ের মাটি। ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিন ধরে যশোরের পদ্মবিলা বাঁওড়ের মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী চক্রের বিরুদ্ধে।

বাঁওড়ের ইজারাদার মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি বলছে, চক্রটিকে বাধা দিয়েও থামানো যাচ্ছে না। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কাজ হচ্ছে না।

ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মৎস্যজীবীরা। তবে তদন্তের নামে সময় ক্ষেপণ করে মাটিকাটা চক্রকে সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। 

গত ২০ ফেব্রুয়ারি যশোর সদর উপজেলার রাজাপুর নোঙ্গরপুর মৌজার ১০ একর ২৮ শতকের পদ্মবিলা বাঁওড়টি সরকারের কাছ থেকে তিন বছরের জন্য ইজারা নেন লাউখালী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান। পরে বাঁওড়ে মাছ চাষ করেন তিনি।

তবে মে মাস থেকে স্থানীয় একটি চক্র আধিপত্য খাটিয়ে বাঁওড়ের পাড়সহ বিভিন্ন অংশের মাটি এক্সকেভেটর দিয়ে কেটে বিক্রি করছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা।

আজিজুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত ৯ জুন বাঁওড় থেকে বিপুল পরিমাণ মাটি কেটে নিয়ে যায় চক্রটি। এতে বর্ষার পানির চাপে তাদের বিপুল সংখ্যক মাছ ভেসে যায়। এ ঘটনায় পরদিন ১০ জুন তারা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিপন বিশ্বাসের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগে বলা হয়, যশোর সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের কালাম ও জুলফিক্কার আজগর, নোঙ্গরপুরের আব্দুর রাজ্জাক এবং উপশহরের ফজলু এই মাটিকাটা চক্রের সঙ্গে জড়িত। তারা এক্সকেভেটর চালক আহম্মদের মাধ্যমে বিভিন্ন জনের কাছে বাঁওড়ের কেটে মাটি বিক্রি করছেন। ইজারাদার চক্রটিকে মাটি কাটতে বাধা দিলে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ পেয়ে ইউএনও রিপন বিশ্বাস ঘটনাটি তদন্তের জন্য সদরের এসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসানকে নির্দেশ দেন।

তবে গত ২৩ দিনেও বিষয়টি তদন্তে এসিল্যান্ড ঘটনাস্থলে যাননি বলে জানান ইজারাদার আজিজুর রহমান। 

তিনি জানান, এসিল্যান্ড অফিসে গেলেও তাকে দিনের পর দিন ঘোরানো হচ্ছে। 

তবে এসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসান ডেইলি স্টারের কাছে এই অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।

এরপর গত ২০ জুন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ইজারাদার আজিজুর রহমান। 

সেই অভিযোগটিও গত ১২ দিন ধরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পড়ে রয়েছে বলে জানান আজিজুর রহমান।
 
এসব অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও রিপন বিশ্বাস ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাঁওড়ের জমি সরকারি হলেও কিছু সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য কয়েক দফা তদন্ত ও স্থানীয়দের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত কেনো সমাধান হয়নি।'

তবে ইউএনও অফিসে দায়েরকৃত অভিযোগটি বর্তমানে তদন্তাধীন। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বাঁওড়ের মাটিকাটা চক্রের একাধিক সদস্যের সঙ্গে ডেইলি স্টারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়। তবে তারা কেউই এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

 

Comments

The Daily Star  | English

Tax corruption key barrier to business growth: CPD survey

Corruption among tax officials has emerged as the single biggest barrier to business growth, according to a survey by local think tank Centre for Policy Dialogue (CPD).

3h ago