রাজাকার স্লোগান নিয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

রাজাকার স্লোগান নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই হচ্ছে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। লাখো শহীদ রক্ত দিয়ে গেছেন। লাখো মা বোন নির্যাতিতা। তাদের এই অবদান ভুললে চলবে না। এটা মনে রাখতে হবে।'

আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের রাজাকার নিয়ে স্লোগানের বিষয়ে তিনি বলেন, ৭১ এ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রাজাকারদের অত্যাচার, রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকা তারা দেখেনি। তাই নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জা হয় না।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আর রাজাকার বাহিনী যেভাবে এদেশের অত্যাচার করেছে। আমার খুব দুঃখ লাগে কালকে যখন শুনি, রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও বলে 'তারা রাজাকার'। তারা কি জানে ৭১ সালের ২৫ মার্চ কী ঘটেছিল সেখানে? ৩০০ মেয়েকে হত্যা করেছিল। ৪০ জন মেয়েকে রেইপ করেছিল এবং এদের ধরে নিয়ে পাকিস্তানি ক্যাম্পে নিয়ে গিয়েছিল। সে ক্যাম্পে কী অবস্থায় ছিল? অনেক মেয়ে শাড়ি বা ওড়না দিয়ে ফাঁসি দিয়েছিল বলে তাদের কাপড় পরতে দেওয়া হতো না। দিনের পর দিন তাদের ওপর পাশবিক অত্যাচার হতো। যখন তাদেরকে উদ্ধার করা হয়, এমনকি আমাদের একজন মিত্র শক্তি, ভারতীয় একজন শিখ সৈন্য তার মাথার পাগড়ি খুলে উদ্ধারকৃত মেয়েকে তার গায়ে পেঁচিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এটা একটা ঘটনা না। এরকম বহু ঘটনা।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'পিরোজপুরের যে মেয়েটা, তাকে ধরে নিয়ে যায় ক্যাম্পে। রান্না করত আবার তার ওপর পাশবিক অত্যাচার হতো। কিন্তু ওরই ফাঁকে সে ওদের খবর নিয়ে সেই নদী সাঁতরে পার হয়ে রাত্রেবেলা চিতলমারীতে যেয়ে সে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে খবর দিয়ে আসত। ধরা পড়ার পরে তাকে দুটো গাড়ির সঙ্গে তার দুই পা বেঁধে সেই গাড়ি দুই দিকে টেনে তাকে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়। এসব অত্যাচার, রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকা এরা দেখেনি। তাই নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জা হয় না।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'যে বাহিনীগুলি তারা তৈরি করেছিল। তাদের হাতে অস্ত্র দিয়েছিল, তাদেরকে দিয়ে মানুষের ক্ষতি করত, অত্যাচার করত। এবং লুটপাট করত, গণহত্যা চালাতো। তাদের বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। তাদেরকে বিচার করে অনেকের ফাঁসিও দিয়েছি। তাদের বিচার করে যারা তাদের দ্বারা নির্যাতিত তারা ন্যায়বিচার পেয়েছে।

'দুর্ভাগ্য যে এখন যখন শুনি সেই মেয়েরাও শ্লোগান দেয়। এইটা কোন দেশে আমরা আছি? এরা কী চেতনায় বিশ্বাস করে? কী শিক্ষা তারা নিলো? কী তারা শিখলো? সেটাই আমার এখন প্রশ্ন?'- বলেন প্রধানমন্ত্রী।

Comments

The Daily Star  | English
problems faced by Bangladeshi passport holders

The sorry state of our green passports

Bangladeshi passports are ranked among the weakest in the world.

5h ago