বিজয় মিছিলে ফেসবুক লাইভ করছিলেন আল আমিন, ১২ দিন পর মর্গে মিলল মরদেহ

‘লাইভে আমরা দেখেছি মানুষ স্লোগান দিচ্ছে, “পলাইছে রে পলাইছে, শেখ হাসিনা পলাইছে”।’
আল আমিন। ছবি: সংগৃহীত

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাভারের বাইপাইলে বিজয় মিছিলে যোগ দেন ২৯ বছরের আল আমিন। বিজয় মিছিলে ফেসবুক লাইভ করছিলেন তিনি।

সেই লাইভ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন আল আমিন। ১২ দিন পর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তার গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া যায়।

আল আমিন শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার দক্ষিণ মগর গ্রামের ইসমাইল মীরমালত ও জিয়াসমিন বেগম দম্পতির ছেলে।

তারা তিন ভাই ও এক বোন। আল আমিন সপরিবারে সৌদি আরবে থাকতেন। এক বছর আগে তার পরিবার দেশে ফিরে আসে এবং আল আমিন দেশে আসেন চার মাস আগে।

দেশে ফিরে বাবার সঙ্গে বাইপাল এলাকায় একটি দোকান নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন তিনি।

আল আমিনের ছোট বোন আফলান সিনথিয়া তার ভাইয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিবরণ দিয়ে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '৫ আগস্ট দুপুরে আমার ভাই সরকার পতনের খুশিতে বিজয় মিছিলে যোগ দিয়েছিল। সে বিজয় মিছিলের ৬ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের একটি ফেসবুক লাইভও করেছিল। লাইভে আমরা দেখেছি মানুষ স্লোগান দিচ্ছে, "পলাইছে রে পলাইছে, শেখ হাসিনা পলাইছে"। মিছিলে অনেক মানুষের হাতে লাঠি ছিল। একপর্যায়ে অনেক গুলির শব্দ পাই। তার ভিডিওতে আমরা দেখেছি ভ্যানে করে হতাহতদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর কিছুক্ষণ পর ফেসবুক লাইভ বন্ধ হয়ে যায়। পরে আমার ভাইয়ের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাই।'

তিনি বলেন, 'ফেসবুক লাইভ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ভাইকে আর খুঁজে পাইনি। সাভার ও ঢাকার পাঁচটি বড় হাসপাতালে খুঁজেছি। এক সপ্তাহ ধরে ঢাকায় বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেছি। সেনাবাহিনী, র‍্যাবের কাছেও গিয়েছিলাম। আন্দোলনকারীরাও খোঁজ দিতে পারেনি। পরে একটি টিভি চ্যানেলের খবরে জানতে পারি, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে চারটি মরদেহ আছে। ১২ দিন পর মর্গে তার মরদেহ পেলাম। তার কপালে বুলেটের আঘাত ছিল। হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, আমার ভাই ৬ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।'

'আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই, শহীদের মর্যাদা চাই। এমন কিছু করা হোক যাতে আমার ভাইয়ের নামটা মানুষ মনে রাখে,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Army given magistracy power

The government last night gave magistracy power to commissioned army officers with immediate effect for 60 days in order to improve law and order.

4h ago