এবার পশ্চিম তীরেও ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা

পশ্চিম তীরের তুলকারেম শহরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযান। ছবি: এএফপি
পশ্চিম তীরের তুলকারেম শহরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযান। ছবি: এএফপি

গাজায় ১০ মাসেরও বেশি সময় ধরে নির্বিচার হামলার পর এবার অধিকৃত পশ্চিম তীরের দিকে নজর দিয়েছে ইসরায়েল। তাদের ভাষায়, 'সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে' এক দিনেই প্রাণ হারিয়েছেন ১০ ফিলিস্তিনি।

আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

বুধবার অধিকৃত পশ্চিম তীরের শহর জেনিনে দুই, কাছের এক গ্রামে চার ও তুবাস শহরের আশ্রয় শিবিরে আরও চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। রেড ক্রিসেন্টের মুখপাত্র আহমেদ জিবরিল এএফপিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, এসব হামলায় আরও ১৫ জন আহত হয়েছেন।

পশ্চিম তীরের তুবাস শহরে আইডিএফের অভিযান। ছবি: এএফপি
পশ্চিম তীরের তুবাস শহরে আইডিএফের অভিযান। ছবি: এএফপি

আজ বুধবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চলের শহর জেনিন ও তুলকারেমে 'সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান' চালাচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানান, 'গতকাল রাত থেকে সেনাবাহিনী পূর্ণ মাত্রায় অভিযান চালাচ্ছে। এই দুই শহরে ইরানের পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মিত জঙ্গি অবকাঠামো ধ্বংস করা হচ্ছে।'

তিনি দাবি করেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়তে ইরান পশ্চিম তীরে 'পূর্বাঞ্চলীয় ফ্রন্ট তৈরি করছে। তারা গাজা ও লেবানন মডেল অনুসরণ করছে। সন্ত্রাসীদের তহবিল দিচ্ছে এবং তাদের জন্য জর্ডান থেকে চোরাকারবার করে অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে আসছে।'

তিনি বলেন, 'গাজায় সন্ত্রাসীদের যেভাবে নির্মূল করা হচ্ছে, ঠিক সেভাবেই এই ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হবে। প্রয়োজনে গাজার মতো পশ্চিম তীরের বাসিন্দাদেরও সাময়িকভাবে সরে যেতে বলা হবে। সঙ্গে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নিতে হবে। এটি একটি যুদ্ধ এবং আমাদেরকে জিততেই হবে।'

৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাসের অপ্রত্যাশিত হামলার মাধ্যমে গাজার যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। তখন থেকেই বিচ্ছিন্নভাবে হলেও, পশ্চিম তীরে নিয়মিত সহিংসতার ঘটনা ঘটে আসছে। অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ দখলদারদের (সেটলার) হাতে ৬৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে এই তথ্য পেয়েছে এএফপি।

একই সময়ে ১৯ ইসরায়েলি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।

পশ্চিম তীরে নিয়মিত অভিযান চালালেও ১৯৬৭ সালের পর এতো বড় আকারে, একাধিক শহরে অভিযান চালায়নি ইসরায়েল।

দুই দিন আগে পশ্চিম তীরে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এই ঘটনায় পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হন।

পশ্চিম তীরের বিমানহামলায় নিহত ফিলস্তিনিদের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: এএফপি
পশ্চিম তীরের বিমানহামলায় নিহত ফিলস্তিনিদের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: এএফপি

ইসরায়েল এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলে, তারা যে ভবনে হামলা চালিয়েছ, সেটি জঙ্গি কার্যক্রমে ব্যবহার হচ্ছিল। 

৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায় হামাস। এই হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন এবং হামাসের হাতে জিম্মি হন ২৫১ জন। ধারণা করা হয়, গাজায় এখনো ১০৫ জিম্মি অবস্থান করছেন। এ ছাড়া আইডিএফ নিশ্চিত করেছে, হামাসের কাছে ৩৪ জনের মরদেহও রয়েছে। বাকিরা নভেম্বরের যুদ্ধবিরতির সময়য় বন্দি বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে মুক্তি পান।

হামলার পর, সেদিনই গাজায় নির্বিচার ও প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে ইসরায়েল, যা আজও অব্যাহত রয়েছে। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ মাসে নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজার ৫৩৪ আহত হয়েছেন ৯৩ হাজার ৭৭৮। হতাহতের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

ইসরায়েলের দাবি, যুদ্ধে ১৭ হাজার হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছেন এবং ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ৭ অক্টোবর আরও এক হাজার যোদ্ধার মৃত্যু হয়।

ইসরায়েল বলেছে, তারা বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্য করে হামলা করে না। তবে হামাস ফিলিস্তিনি নাগরিকদের 'মানব-ঢাল' হিসেবে ব্যবহার করে। তারা বাড়িঘর, হাসপাতাল, স্কুল ও মসজিদের ভেতর থেকে হামলা পরিচালনা করে বলে বারবার আইডিএফ দাবি জানিয়ে এসেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Gunfire and explosions were heard late Friday night from villages across the border in Myanmar opposite Whykong union in Teknaf upazila of Cox’s Bazar. Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

1h ago