‘বুদ্ধিমত্তার দিক থেকেও অশ্বিন সর্বকালের সেরাদের একজন’

ছবি: এএফপি

ভারতের অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বয়স ৩৮ বছর। এই বয়সেও তিনি নিজের দক্ষতাকে আরও শাণিত করে চলেছেন। প্রতিটি বলেই যেন নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা থাকে তার। গতকাল চেন্নাইয়ে সিরিজের প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের ব্যাটার মুমিনুল হককে যে অসাধারণ ডেলিভারিতে তিনি পরাস্ত করেন, তা এতটাই দুর্ধর্ষ ছিল যে ব্যাখ্যা করা কঠিন।

বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের বিশাল জয়ের পথে টাইগারদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট শিকার করেন অশ্বিন। তার আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকরা যখন ধুঁকছিল, তখন সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে ব্যাটিং বিপর্যয় থেকে রক্ষা করেন তিনি। গোটা ম্যাচই আপন আলোয় রাঙিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন অশ্বিন। শুধু তাই নয়, এই সংস্করণে ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫ উইকেট নেওয়ার রেকর্ডে (৩৭ বার) তিনি বসেন প্রয়াত শেন ওয়ার্নের পাশে।

চেন্নাই অশ্বিনের ঘরের মাঠ। চেনা আঙিনায় এটি তার শেষ পারফরম্যান্স কিনা তা নিয়ে কৌতুক করে তিনি বলেছেন, 'যদি এটা আমার (নিজের মাঠে) শেষ পারফরম্যান্স হয়, তবে সেটাই হোক।' আর শেষমেশ যদি তা হয়েও থাকে, তাহলে বারবার এই টেস্টের দিকে ঘুরে তাকাবেন অশ্বিন। কী স্মরণীয় একটি ম্যাচ খেললেন তিনি!

ছবি: সংগৃহীত

অশ্বিনের পরিপক্বতা ও উজ্জ্বল গতিপথের সুর বেঁধে দিয়েছিল চেন্নাইয়ে তার বেড়ে ওঠার প্রক্রিয়া। বয়সভিত্তিক স্তর থেকে সিনিয়র দল পর্যন্ত তিনি সুনীল সুব্রামানিয়ামের দিকনির্দেশনা পেয়েছিলেন। সুব্রামানিয়াম একজন প্রাক্তন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার, যিনি তামিলনাড়ু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (টিএনসিএ) বিভিন্ন পদে এবং ২০১৯ সাল পর্যন্ত ভারত ক্রিকেট দলের ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছেন।

সুব্রামানিয়াম সব সময়ই ছিলেন অশ্বিনের ধারণাগুলোকে যাচাই-বাছাই করে তীক্ষ্ণ করার জন্য আস্থার জায়গা। গতকাল রোববার দ্য ডেইলি স্টারকে সুব্রামানিয়াম বলেছেন, 'প্রাদেশিক একাডেমি (টিএনসিএ) পরবর্তী প্রজন্মের জন্য স্পিনার খুঁজছিল এবং তখন আমি প্রথমবার তাকে (অশ্বিন) দেখেছিলাম। তার উচ্চতা, বাউন্স ও টার্ন ছিল। আর আপনি সারা বিশ্বের দিকে তাকালে দেখবেন, সবচেয়ে দুর্দান্ত স্পিনাররা লম্বা, কারণ তারা বাউন্স তৈরি করতে পারে।'

তবে এসব দক্ষতার পাশাপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সুব্রামানিয়ামের চোখে পড়েছিল, যা অশ্বিনকে বাকিদের চেয়ে আলাদা করে তুলেছে, 'এগুলোই সব না, কারণ তার এমন একটি মস্তিস্ক ছিল যা অন্য কারো মতো নয়। (বয়সভিত্তিক) সেই স্তরে কাজ করার পর আমি এমন বাচ্চাদের দেখেছি যারা অনুসন্ধানী কিন্তু অশ্বিনের মতো বুদ্ধিমান নয়। তার বুদ্ধি তখনও তীক্ষ্ণ ছিল এবং আমি সেসময় যা দেখেছি তা থেকে এখন আরও বেড়েছে। বুদ্ধিমত্তার দিক থেকেও সে সর্বকালের সেরাদের একজন।'

সুব্রামানিয়াম বলেছেন, বয়সভিত্তিক পর্যায়ের নির্বাচকরা ভেবেছিলেন, অশ্বিন একজন দুর্দান্ত ব্যাটার হবেন, 'তার সব সময় ভিভিএস লক্ষ্মণের মতো ঢঙে খেলার ক্ষমতা ছিল। আমি তাকে বলেছিলাম ব্যাটিংকে উপেক্ষা না করতে। তবে এটাও বলেছিলাম যে, তার স্পিনার হওয়ার জন্য দক্ষতা আছে। সে বোলিং পছন্দ করত এবং আমি দেখেছিলাম যে, ফিল্ডিং সাজানো ও কীভাবে বোলিং করতে থেকে শুরু করে বিভিন্ন কৌশলের দিক থেকেও সে খুব ভালো।'

চেন্নাইয়ের ২২ গজে ছড়ি ঘোরাতে দেখে বিশ্বের আরও অনেক অশ্বিন ভক্তের মতো শৈশবের কোচ সুব্রামানিয়ামেরও নিশ্চয়ই ভীষণ আনন্দ হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

CEC Nasir Uddin pays courtesy call on chief adviser

The meeting was held at the state guest house Jamuna

23m ago