বিদ্যুতে ভর্তুকি বাড়তে পারে ৮৩ শতাংশ

বিদ্যুৎ সরবরাহের উন্নতি নেই
প্রতীকী ছবি

অন্তর্বর্তী সরকার বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদকদের সব বকেয়া পরিশোধের পরিকল্পনা করায় চলতি অর্থবছরে বিদ্যুৎখাতে ভর্তুকি ৮৩ শতাংশ বাড়তে পারে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুসারে, বকেয়া পরিশোধের জন্য সংশোধিত বাজেটে অতিরিক্ত ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা রাখা হতে পারে।

ফলে চলতি অর্থবছরের শেষে মোট ভর্তুকি দাঁড়াবে ৬৬ হাজার কোটি টাকা। প্রাথমিকভাবে বাজেটে বরাদ্দ ছিল ৩৬ হাজার কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এই বরাদ্দ বাড়তে পারে। আগামী মার্চের মধ্যে এর পরিমাণ চূড়ান্ত হবে।

সরকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেক দূরে থাকায় বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার (এডিপি) বাজেট বরাদ্দ থেকে টাকা সরিয়ে নেওয়া হতে পারে।

মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে বার্ষিক উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা থাকলেও সংশোধিত বাজেটে সেখান থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা কমতে পারে।

তিনি আরও বলেন, 'বিদ্যুৎখাতে বরাদ্দ দিতে পারলে চলতি অর্থবছরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ করা যাবে। ফলে আগামী অর্থবছরে বিদ্যুৎখাতে ভর্তুকির বোঝা কমবে।'

বকেয়া যাতে না বেড়ে যায় এবং ভবিষ্যতে বকেয়ার বোঝা যাতে কিছুটা লাঘব হয় তা নিশ্চিত করতে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি।

গত ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সরকারকে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে বিদ্যুৎখাতে বকেয়া পরিশোধের কথা বলেছিল। ভর্তুকি কমাতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবও তারা দিয়েছে।

কিন্তু সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়াতে রাজি হয়নি এবং উৎপাদন খরচ কমানোর বিষয়ে কমিটি করে।

গতকাল শনিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফওজুল কবির খান বলেছিলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর জন্য তারা প্রচণ্ড চাপে আছেন।

অন্তর্বর্তী সরকার ছয় মাস ক্ষমতায় থাকলেও এখনো বিদ্যুতের দাম বাড়েনি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'এভাবে কতদিন চলবে জানি না।'

তার মতে, বকেয়ার চাপ মাথায় বন্দুক তাক করার মতো।

বর্তমানে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে বকেয়া ২১ হাজার কোটি টাকা।

এর মধ্যে নয় হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের পাওনা। সমিতির সদস্যরা বলছেন, সরকার দ্রুত বকেয়া পরিশোধ না করলে তারা আসন্ন গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে না।

অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতের আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রও প্রায় ৮৫০ মিলিয়ন ডলার বকেয়ার জন্য চাপ দেয়।

টাকার অভাবে কয়লা আমদানিতে বিঘ্ন ঘটায় স্থানীয় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ঝামেলায় পড়ছে।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সই করা চুক্তির ফাঁকফোকর ভর্তুকির বোঝা বাড়িয়েছে। এর পাশাপাশি বিদ্যুতের কেনাদাম নিয়ে নতুন করে দরকষাকষি করতে সরকার পৃথক কমিটি করেছে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকারের উচিত বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমানোর দিকে নজর দেওয়া।'

তার মতে, তাৎক্ষণিক সমাধান হচ্ছে অদক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ ও মাত্রাতিরিক্ত দাম নিয়ে নতুন আলোচনা করা।

তিনি মনে করেন, কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি বাংলাদেশের জন্য অন্যায্য ছিল। সেসব চুক্তিতে উৎপাদকদের অতিরিক্ত চার্জ করার সুবিধা দেওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Scorched at work: Global report revealed dire heat risks for workers

A joint report released by the World Health Organisation (WHO) and the World Meteorological Organisation (WMO) exposed the growing dangers of extreme heat on workers’ health and productivity worldwide.

34m ago