কর্মবিরতিতে লোকোমাস্টাররা, চলছে না ট্রেন

প্রতীকী ছবি

দাবি পূরণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হওয়ায় দেশব্যাপী কর্মবিরতি শুরু করেছেন রেলওয়ের লোকোমাস্টার ও তাদের সাপোর্ট স্টাফরা।

সোমবার দিবাগত রাতে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির নির্বাহী সহসভাপতি সাইদুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, 'রাত ১২টার এক মিনিটে আমাদের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। নতুন করে আর কোনো ট্রেন চলবে না। তবে যেসব ট্রেন রাত ১২টার আগে ছেড়ে গেছে, সেগুলো যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেবে।'

তিনি আরও বলেন, 'যাত্রীবাহী এবং মালবাহী ট্রেন এই কর্মসূচির আওতায় থাকবে।'

এর আগে সোমবার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির নেতাদের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

নেতারা জানান, তাদের দাবি না মানা হলে কর্মবিরতি পালন করা হবে।

বৈঠকে রেলওয়ের পক্ষে নেতৃত্ব দেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক আহমেদ মাহবুব চৌধুরী। বৈঠক শেষে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সমিতির নেতারা তাদের কর্মসূচি নিয়ে "অনড়" এবং মাঝপথে সভা ত্যাগ করেছেন।'

এদিকে বাংলাদেশ রেলওয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।

২০২১ সাল পর্যন্ত লোকোমাস্টার, সহকারী লোকোমাস্টার, গার্ড এবং ভ্রমণকারীর টিকিট পরীক্ষকরা তাদের নির্দিষ্ট কাজের সময়ের বাইরেও দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এর জন্য অতিরিক্ত বেতন পেয়েছেন। বাড়তি কাজের পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে পেনশন সুবিধাও পেতেন তারা। কিন্তু ওই বছরের নভেম্বরে আওয়ামী লীগ সরকার বাড়তি কাজের ওপর ভিত্তি করে পেনশন সুবিধা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

২০২২ সালের এপ্রিলে ধর্মঘটের পর রেল মন্ত্রণালয় হস্তক্ষেপ করে পেনশন সুবিধা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে ২০২১ সালের নভেম্বরের আদেশ বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

এছাড়া ২০২২ সালে যাদের নিয়োগ হয়েছে, এই সহকারী লোকোমাস্টাররা এই সুবিধা পাচ্ছেন না। কারণ তাদের নিয়োগপত্রে বলা হয়েছে যে, তারা তাদের চাকরির সময় বা অবসর গ্রহণের পরে অতিরিক্ত বেতন পাবেন না।

গত বছরের ডিসেম্বরে নিয়োগ পাওয়া লোকোমাস্টাররাও ২০২১ সালের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জানান।

সে সময় রেল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে তারা বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত করেন। গত ২৩ জানুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জানায়, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী লোকোমাস্টাররা রানিং অ্যালাউন্স পাবেন, তবে তা তাদের মাসিক মূল বেতনের বেশি হবে না। তবে তাদের অবসর পরবর্তী সুবিধা সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।

এর প্রতিক্রিয়ায় গত ২২ জানুয়ারি চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে ২৮ জানুয়ারি থেকে দেশব্যাপী অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি কর্মসূচি ঘোষণা করে সমিতি।

গত কয়েকদিন ধরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে আলোচনা করলেও সমিতির নেতাদের কর্মসূচি প্রত্যাহারে ব্যর্থ হন। এর আগে রোববার রেল সচিবের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠকও বয়কট করেন নেতারা।

পরবর্তীতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ভিআইপি গেস্ট রুমে আহমেদ মাহবুব চৌধুরীর নেতৃত্বে রেলওয়ের একটি প্রতিনিধি দল সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

সভায় সমিতির নির্বাহী সহসভাপতি সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ অংশ নেয়।

বৈঠকে রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী লোকোমাস্টারদের বিষয়ে তাদের একটি দাবি পূরণ হয়েছে, তারা তাদের অন্যান্য চাহিদা পূরণে কাজ করছেন।

'তারা চেয়েছিল আমরা যেন লিখিতভাবে আশ্বাস দেই। যেহেতু বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের, আমরা কীভাবে তাদের লিখিত আশ্বাস দিতে পারি? এ সময় তারা বৈঠক ছেড়ে চলে যান,' বৈঠকে উপস্থিত রেলওয়ের এক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান।

বাংলাদেশ রেলওয়ে বর্তমানে প্রতিদিন ১০০টিরও বেশি আন্তঃনগর ট্রেনসহ ৩৫০টিরও বেশি যাত্রীবাহী ট্রেন পরিচালনা করে। এছাড়া, এটি প্রতিদিন তিন ডজনেরও বেশি মালবাহী ট্রেন পরিচালনা করে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi migrants workers rights in Malaysia

Migrants in Malaysia: Worker faces deportation after speaking up

Nearly 200 workers then began a strike on Friday, he said, requesting not to be named for fear of backlash.

7h ago