‘এখন জনগণের ইস্যুগুলো নিয়ে আমাদের কথা বলা উচিত, এটাই রাজনীতি’

জনগণের চাহিদা পূরণকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানালেন তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
জনগণের চাহিদা পূরণকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানালেন তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, 'একটি পরিবর্তনের জন্য জনগণ রাজনৈতিক দলগুলোকে সমর্থন দিয়েছে বলেই স্বৈরাচার মাফিয়া বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছে। এখন জনগণের ইস্যুগুলো নিয়ে আমাদের কথা বলা উচিত। এটাই রাজনীতি। আসুন, জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সকলে মিলে কাজ করি।'

তারেক রহমান আজ রোববার রাজধানীর পুরনো পল্টনে ফারস হোটেলে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে লন্ডন থেকে 'ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে' প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'দেশের মানুষ যখন প্রচণ্ড সংকটের মধ্যে ছিলো তখন গণতন্ত্রের পক্ষের সকল দলগুলো পলাতক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে একসঙ্গে রাজপথে ছিলাম। সেই সকল গণতন্ত্রমনা দলগুলো একসঙ্গে মিলে দুই বছর আগে জাতির সামনে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছিলাম। কারণ, আমরা দেখেছিলাম পলাতক স্বৈরাচার কীভাবে দেশের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছিল। সবচেয়ে প্রথমেই যেটা ধ্বংস করেছিল সেটা হলো দেশের নির্বাচন ব্যাবস্থা।'

পলাতক স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশের সব খাতকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে উল্লেখ করে বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, 'রাষ্ট্রের যেসব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল; সেগুলো ফের মেরামত করতে হবে। কারণ, আমাদের রাজনীতির সবচেয়ে বড় পুঁজি হচ্ছে দেশের জনগণ। রাষ্ট্রের এই কাঠামোগুলো যদি আমরা মেরামত করতে না পারি দেশটাকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নিয়ে যেতে পারবো না। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী গড়ে তুলতে সক্ষম হবো না।'  

তিনি বলেন, 'আমাদের চারপাশে সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছে। সকলকে সম্মান রেখেই বলতে চাই; অনেকেই সংস্কার নিয়ে অনেক কিছুই বলছেন। বাংলাদেশের সবকিছুতে যে সংস্কার প্রয়োজন সেটি সবচেয়ে আগে আমাদের দল বিএনপি বলেছে।'

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল লাখো মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে। এরপর বিভিন্ন সময়ে গণতন্ত্রকে ব্যাহত করেছে অনেকেই। 'জুলাই-আগস্ট'র ছাত্র-জনতার যে অভ্যুত্থান, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জনমনের সমর্থন ছিল বলেই মাফিয়া স্বৈরাচারকে এ দেশ থেকে বিতাড়িত করা সম্ভব হয়েছে। এই যে জনগণ রাজপথে বেরিয়ে এসেছে, রাজনৈতিক দলগুলোর পাশে এসে দাড়িঁয়েছে, সবাই মনে করেছে একটা পরিবর্তন জরুরি, এটাই নতুন দেশ গঠনের স্বপ্নকে তরান্বিত করে।

সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে আলোচনা হচ্ছে এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমরা সংস্কার নিয়ে কথা বলছি। উচ্চকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট, ক্ষমতার ভারসাম্য, একজন ব্যক্তি কতোবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন এসব বিষয় নিয়ে কথা বলছি। সংস্কারের যে বিষয়গুলো নিয়ে গণমাধ্যমে উত্তপ্ত আলোচনা চলছে, সেই বিষয়গুলো পরিবর্তন বা পরিমার্জন হলে হয়তো রাজনৈতিক দলগুলো উপকৃত হবে। কিন্তু দিন শেষে যারা আমাদের রাজনীতির সবচেয়ে বড় পুঁজি, সেই জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলো নিয়ে আমাদের কি কথা বলা উচিৎ না? অবশ্যই উচিৎ। কারণ, তারাই (জনগণ) আমাদের রাজনীতির সবচেয়ে বড় পুঁজি।'

বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, 'নিশ্চয়ই বাংলাদেশের জনগণ জানতে চায়, হাসপাতালের ইমাজেন্সিতে পৌঁছানোর জন্য অসুস্থ আপনজনকে নিয়ে কতোক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য। সেই অ্যাম্বুলেন্স কত দ্রুত এসে ওই অসুস্থ মানুষটিকে হাসপাতালে পৌঁছে দেবে সেটা নিশ্চিত করাই রাজনীতিবিদদের দায়িত্ব। দেশের জনগণ এটাই প্রত্যাশা করে। তাই আসুন আমরা সংস্কারের পাশাপাশি জনগণের প্রত্যাশা নিয়ে আলোচনা শুরু করি।'

এ অনুষ্ঠানে বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, 'বিএনপিকে আওয়ামী লীগের মতো একই শিবিরে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশেষ করে একটি দল এটি করছে, কেন যে করা হচ্ছে আমার বুঝে আসে না।'

তিনি আরও বলেন, 'সবাই বিএনপি'র বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। বিএনপিকে ছোট করতে চাইছে। তবে বিএনপির নেতৃত্বে কোনো সংকট নেই। আর আওয়ামী লীগকে ছেড়ে দেয়ারও সুযোগ নেই। আমরা আওয়ামী লীগের প্রাতিষ্ঠানিক বিচার চাই। '

বিএনপি'র এই সিনিয়র নেতা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, 'বিদেশি কিছু এজেন্ট চাচ্ছে, কোনোভাবেই যেন এ দেশে শান্তি শৃঙ্খলা না আসে এবং সেজন্য তারা চেষ্টা করে যাচ্ছে।'

ইফতার ও দোয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেছেন জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়কারী ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। ইফতার মাহফিলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
tax collection target for IMF loan

Talks with IMF: Consensus likely on exchange rate, revenue issues

The fourth tranche of the instalment was deferred due to disagreements and now talks are going on to release two tranches at once.

10h ago