প্রত্যাশিত সংস্কার সবাই মিলে আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করব: তারেক রহমান

তারেক রহমান | ছবি: সংগৃহীত

মতভিন্নতা থাকলেও যেকোনো মূল্যে ঐক্য ধরে রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আজ শনিবার রাজধানীর মালিবাগে ১২ দলীয় জোট আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।

তারেক রহমান বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি, আমরা আমাদের অবস্থান থেকে বলতে পারি, বিএনপির অবস্থান থেকে আমি বলতে পারি, যেই গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো বিগত স্বৈরাচারের সময় আমাদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন, আন্দোলন করেছেন, তাদের হয়েও বলতে পারি আমি কিছুটা, আমাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশ এবং দেশের জন্য।

'দেশ ও দেশের জনগণের এই ক্ষতিগুলো যখন হয়েছে, এই ক্ষতিগুলো অবশ্যই রাজনীতিবিদ বা রাজনৈতিক দলগুলোর সুযোগ আসলে সেখানে পরিবর্তন করতে হবে এবং এই পরিবর্তনটাকেই আমরা রাষ্ট্র কাঠামোর মেরামত বলেছিলাম সেদিন। কারণ এগুলো রাষ্ট্রের অংশ, উদাহরণস্বরূপ যে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের কথা বলেছি... আমরা সেই রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, আমরা দুই-আড়াই বছর আগে সংস্কার প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। আমরা উল্লেখ করেছিলাম যে এই ক্ষেত্রে পরিবর্তিত হওয়া উচিত', বলেন তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দুঃখজনকভাবে আমরা দেখছি একটি পরিস্থিতির উদ্ভব হচ্ছে, সংস্কার এবং নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে। এখানে উপস্থিত আমরা প্রত্যেকেই রাজনীতিবিদ। এখানে একজন বক্তা উল্লেখ করে গিয়েছেন, খুব সম্ভবত বোধহয় মান্না ভাই বলেছেন, উনার বক্তব্যে যে গণতন্ত্র বলতে একজন সাধারণ মানুষের কাছে কী বোঝা যায়? গণতন্ত্র বলতে একজন সাধারণ মানুষের কাছে এক কথায় নির্বাচনে নিরপেক্ষ-নির্ভয় ভোট দেওয়ার যে সিস্টেম, সেটিকেই গণতন্ত্র বলি আমরা... সারা পৃথিবীতে সেটি গণতন্ত্র হিসেবে প্রচলিত বা স্বীকৃত। কিন্তু সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি করে দেওয়া হচ্ছে।

'আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি যে সংস্কার যেটা শেষ হয়ে যায়, সেটা তো সংস্কার হতে পারে না। এটা একটা কন্টিনিয়াস প্রসেস। সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া। যদি সে কোনো একটি বিষয়ে শেষ হয়ে যায়, সেটি সংস্কার নয়। কাজেই সংস্কার শেষ হয় না। সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া। আমরা একটি জায়গায় আসব। একটি জিনিসের ভালো কিছু করব। ভালো পরিবর্তন করব। পরবর্তীতে আরও বেটার কিছু করার চেষ্টা করব।'

তারেক বলেন, আমাদের রাজনৈতিক ভিন্ন মত আছে। আদর্শ সবার এক নয়। কিছু কিছু ভিন্নতা আমাদের আছে। কিন্তু একটি জায়গায় আমরা সকলে এক। বাংলাদেশ, বাংলাদেশের মানুষ, গণতন্ত্র। এখানে কিন্তু কোনো বিভেদ নেই। বেসিক বিষয়টিতে আমরা সকলে একত্রিত।

'প্রায় সব রাজনৈতিক নেতারা আছেন, সব দলের বাংলাদেশের মোটামুটি সবাইকে আমি আহ্বান জানাব, অনুরোধ করব আমার দলের পক্ষ থেকে, বিগত ১৫ বছর আমরা প্রত্যেকটি বিরোধী দল রাজপথে থেকে গণতন্ত্রের পক্ষে ছিলাম। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল এই দেশের মানুষের অধিকারকে, রাজনৈতিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমাদের বহু সহকর্মীকে হারিয়েছি। জুলাই-আগস্টে যে জনতার অভ্যুত্থান হয়েছে, সে অভ্যুত্থানে আমরা বহু আপনজনকে হারিয়েছি, সহকর্মীদের হারিয়েছি, পরিচিতজনদের হারিয়েছি। আসুন যেই ঐক্য নিয়ে আমরা স্বৈরাচারকে বিদায় করেছিলাম, সেই ঐক্যকে আমরা ধরে রাখি।'

তারেক রহমান বলেন, আজকের এই সফল অনুষ্ঠানের মতো আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে আগামী দিনে ঐক্য বজায় রেখে দেশের মানুষের প্রত্যাশিত গণতন্ত্রকে আমরা প্রতিষ্ঠিত করব। এই দেশের মানুষের প্রত্যাশিত সংস্কার প্রক্রিয়াকে আমরা সবাই মিলে আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করব।

'আমাদেরকে যেকোনো মূল্যে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। মতভিন্নতা থাকবে। আমরা বসবো, আলোচনা করব। এমন কিছু আমরা বলব না, এমন কিছু করা থেকে আমরা বিরত থাকার চেষ্টা করব, যাতে করে কোনোভাবেই স্বৈরাচার বা তার প্রেতাত্মারা আবার এদেশের মানুষের কাঁধে চেপে বসতে পারে। এই হোক আমাদের প্রত্যাশা।'

Comments

The Daily Star  | English

Disrupting office work: Govt employees can be punished within 8 days

The interim government has moved to amend the Government Service Act-2018 to allow swift disciplinary action against its employees who will be found guilty of disrupting official activities.

7h ago