আম্মাজানের পর ভালো স্ক্রিপ্ট পাইনি বলেই নতুন সিনেমা করিনি: শবনম

শবনম। ছবি: সংগৃহীত

সাদাকালো যুগের সাড়া জাগানো নায়িকা শবনম। অনেক সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন। তোমারে লেগেছে এত যে ভালো—এটি তার অভিনীত 'রাজধানীর বুকে' সিনেমার তুমুল জনপ্রিয় একটি গান। সবশেষ অভিনয় করেছেন 'আম্মাজান' সিনেমায়। এই সিনেমায় নামভূমিকায় অভিনয় করে সব বয়সী দর্শকদের কাছে আম্মাজান হিসেবে পরিচিতি ও ভালোবাসা অর্জন করেছেন।

পাকিস্তানেও অসংখ্য সিনেমা করেছেন তিনি। সেখানে টানা ১৩ বার নিগার পুরস্কার পেয়েছেন। এই রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারেনি। টানা ১৩ বারের পরও তিনি কয়েকবার পেয়েছেন নিগার পুরস্কার।

শবনম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এখনো নিয়মিত বাজারে যাই, আমিই বাজার করি। বাজারে যাওয়ামাত্রই সবাই বলে, ওই যে আম্মাজান আসছেন। কোথাও গেলে সবাই বলে ওই যে আম্মাজান আসছেন। যেখানেই যাই সবাই আমাকে আম্মাজান বলে ডাকেন। খুব ভালো লাগে আমার। অনেক সম্মানিত বোধ করি।

'আমার শিল্পীজীবনের বড় পাওয়া এটা। কেননা ছোট-বড় সবাই আমাকে আম্মাজান বলে ডাকেন। একেবারে আপন করে নেন। আর কী চাইব? এটাই বড় পাওয়া', বলেন তিনি।

একসময়ের সাড়া জাগানো ও সফল নায়িকা শবনমের সময় কাটে বাসায়। খুব একটা বাইরে বের হন না। বাসার বাজার করা ছাড়াও পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তিনি বলেন, আমার শ্বশুরবাড়ি আগে ছিল হাটখোলা। এখন বারিধারায়। সেখানে পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠান হলে অংশ নিই।

নিজের অভিনীত সাদাকালো যুগের অনেক সিনেমার গান এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। এখনো টেলিভিশনে সেসব সিনেমা দেখানো হয়। ইউটিউবেও দেখা যায়। তিনি বলেন, আমার অভিনীত সিনেমা মাঝেমধ্যে দেখি। মনে পড়লে কিংবা দেখতে ইচ্ছে করলেই দেখি। ভালো লাগে হঠাৎ হঠাৎ দেখতে। নস্টালজিক হয়ে পড়ি।

ছবি: সংগৃহীত

এক প্রশ্নের জবাবে শবনম বলেন, কোথাও গেলে অনেকেই বলেন আপনাদের সময়ের সিনেমাগুলোই ভালো ছিল। সেগুলো এখনো দেখি। এখনকারগুলো সেভাবে টানে না। তখন মনে হয় কিছু ভালো কাজ তো করেছি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে শবনম বলেন, আমাদের সময়ে ভালো গল্প পেয়েছি, ভালো চরিত্র পেয়েছি, ভালো পরিচালক পেয়েছি। কাজগুলোও ভালো হয়েছে। দর্শকরা সেজন্য মনে রেখেছে।

'আম্মাজান' সিনেমার পর নতুন কোনো সিনেমা করেননি কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, মনে দাগ কাটার মতো কোনো স্ক্রিপ্ট পাইনি। তাই করিনি। আম্মাজানের পর ভালো  স্ক্রিপ্ট পাইনি বলেই নতুন কোনো সিনেমা করিনি।

'আম্মাজান মুক্তির পর ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। চারদিকে হইচই পড়ে যায়। দর্শকরা ব্যাপকভাবে এটি দেখেন। তারপর 'মায়ের পায়ের নিচে বেহেশত' সিনেমার স্ক্রিপ্ট পাই। সেভাবে পছন্দ হয়নি বলে করিনি। 'আম্মাজান' যে উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছিল, তার কাছাকাছি স্ক্রিপ্ট পাইনি', বলেন তিনি।

বিদেশে অনেক বড় বড় সম্মাননা পেলেও নিজ দেশে বড় কোনো পুরস্কার এই শিল্পী পাননি। সেজন্য আফসোস কাজ  করে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আফসোস কিংবা অতৃপ্তি নয়, দুঃখ কাজ করে। নিজের দেশে কিছু করতে পারলাম না। আমি তো বাঙালি। এই দেশের মানুষ। নিজের দেশকে বাইরের দেশে পরিচিতি পেয়েছি, নিজ দেশের সম্মান এনেছি।

'এসব যখন ভাবি তখন দুঃখ লাগে। একটু বলি, আম্মাজান করার পর বড় পুরস্কারে আমার নাম ছিল। পরে কেটে দেওয়া হয়। কারা কেটে দেয় তাও জানি। আমি কিছু বলিনি। চুপচাপ থেকেছি। যখন শুনতে পেয়েছিলাম যে আমার নাম কেটে দিয়েছে. তখন ভীষণ দুঃখ পাই।'

সবশেষ শবনম বলেন, মানুষের ভালোবাসা আমি পেয়েছি। এখনো পাচ্ছি। ওটাই বড় পুরস্কার। দর্শকরা যতদিন পছন্দ করবেন, ততদিন বেঁচে থাকব। তাদের ভালোবাসার সামনে কিছুই নেই। মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি কথাটি। মানুষের ভালোবাসা বড় পুরস্কার।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus promises election on time

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday reaffirmed his commitment to holding the 13th national election in the first half of February next year.

7h ago