যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক স্থগিতের ঘোষণায় স্বস্তি বাংলাদেশের পোশাক খাতে

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক
ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশে দেশে প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ ৯০ দিন স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ায় বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।

গতকাল বুধবার এই স্থগিতাদেশ আসে।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই বিরতি বাংলাদেশকে প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট সময় দিচ্ছে।'

তার মতে, 'চীন শুল্কের মুখে পড়ায় আগামী ৯০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে পারে।'

দেশে এক শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তবে দীর্ঘমেয়াদে এই শিল্পের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে আগামী ৯০ দিনে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কতটা কার্যকরভাবে দরকষাকষি করতে পারছে এর ওপর।'

গতকাল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সামাজিকমাধ্যম এক্স-এ তাদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে শুল্ক আরোপ ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

তিনি লিখেন, 'আমরা আপনার বাণিজ্যনীতির সমর্থনে আপনার প্রশাসনের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।'

বেশ কয়েকজন পোশাক কারখানার মালিক ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, আগামী ৯০ দিনের বিরতিতে তারা স্বস্তি পেয়েছেন। তবে উদ্বেগ থেকেই গেছে।

ট্রাম্প ঘোষিত শুল্ক ৯০ দিন পর কার্যকর হলে বাংলাদেশের ৪০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক শিল্প সংকটে পড়বে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানিকারকদের ৫৩ দশমিক পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক গুণতে হবে।

সেই ঘোষণায় ২০ শতাংশের কম মার্কিন তুলার টি-শার্টে শুল্ক ছিল সাড়ে ১৬ শতাংশ। সর্বশেষ ৩৭ শতাংশ শুল্ক আগের শুল্কের সঙ্গে যোগ হওয়ায় তা ৫৩ দশমিক পাঁচ শতাংশে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন কয়েকটি শীর্ষ পোশাক কারখানার মালিক।

তারা আরও জানান, বাংলাদেশে তৈরি বেশিরভাগ পোশাকে ২০ শতাংশেরও কম মার্কিন তুলা ব্যবহার করা হয়।

গত ২ এপ্রিল হোয়াইট হাউস থেকে এক আদেশে বলা হয়, 'শুল্কের (নতুন) হার...অন্যান্য শুল্ক, ফি, কর বা চার্জের বাইরে।'

পণ্যভেদে শুল্কের হার ভিন্ন হবে। কারখানা মালিকরা গড় ৫০ শতাংশের মতো শুল্ক হারে আশঙ্কা করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা ১০৫ বিলিয়ন ডলারের পোশাক বাজারের নয় দশমিক তিন শতাংশ বাংলাদেশের দখলে। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে সাত দশমিক দুই বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে।

চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বহাল থাকায় চীন ইউরোপের বাজারে সস্তা কাপড়ের বন্যা বইয়ে দিতে পারে। এটি বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের জন্য আরেকটি সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহির ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকারের উচিত মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড় আলোচনা শুরু করা। যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি কমে যাওয়ার আশঙ্কায় এক বিদেশি ক্রেতা আগের কার্যাদেশ অর্ধেকে নামিয়ে এনেছেন।'

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ ৯০ দিনের বিরতি চেয়ে গত সোমবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে চিঠি দেন ড. ইউনূস।

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ১০০ পণ্য আমদানিতে শুল্ক সুবিধা চেয়ে বাণিজ্য প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত জেমিসন গ্রিয়ারকে আলাদা চিঠি দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

Comments

The Daily Star  | English

JnU second campus: Project stalled amid bureaucratic hurdles

The construction of Jagannath University’s long-awaited second campus in Keraniganj has stalled due to bureaucratic delays.

5h ago