সুদানের ২ বছরের যুদ্ধ শিশুদের জীবন তছনছ করে দিয়েছে : ইউনিসেফ

সুদানে দুই বছরের গৃহযুদ্ধের ফলে শিশুদের বিরুদ্ধে হত্যা থেকে অপহরণ পর্যন্ত বড় ধরনের অপরাধের সংখ্যা ১ হাজার শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক জরুরি শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)।
আজ সোমবার এ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
বার্তা সংস্থা এএফপি এই খবর জানিয়েছে।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, এ ধরনের ঘটনার মধ্যে পঙ্গুত্ব এবং স্কুল ও হাসপাতালে আক্রমণও অন্তর্ভুক্ত। যা আগে কয়েকটি অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল।
কিন্তু আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস ও সুদানের সেনাবাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘাতের ফলে আরো কিছু অঞ্চলে এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়েছে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'দুই বছরের সহিংসতা ও বাস্তুচ্যুতি সুদান জুড়ে লাখো শিশুর জীবনকে তছনছ করে দিয়েছে।'
উদাহরণস্বরূপ, ২০২২ সালে যাচাইকৃত ঘটনায় নিহত, পঙ্গু হওয়া শিশুর সংখ্যা ১৫০টি থেকে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে আনুমানিক ২ হাজার ৭শ' ৭৬টিতে পৌঁছেছে।
ইউনিসেফ এএফপিকে এসব পরিসংখ্যান জানিয়েছে।
স্কুল ও হাসপাতালে আক্রমণের যাচাইকৃত ঘটনাও ২০২২ সালের ৩৩টি থেকে বেড়ে প্রায় ১৮১টিতে পৌঁছেছে।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, মানবিক সহায়তা প্রয়োজন, এমন শিশুর সংখ্যা দুই বছরে দ্বিগুণ হয়েছে।
২০২৩ সালের শুরুতে ৭৮ লাখ থেকে আজ সংখ্যাটি এক কোটি ৫০ লাখেরও বেশি হয়েছে।
'সুদান আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু এটা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে না', যোগ করেন ক্যাথরিন।
তিনি বলেন, আমরা সুদানের শিশুদের কথা ভুলে যেতে পারি না। আমাদের দক্ষতা ও সহায়তা বৃদ্ধির সংকল্প আছে। তবে আমাদের প্রবেশাধিকার ও টেকসই তহবিল প্রয়োজন।
সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার সাবেক ডেপুটি, আরএসএফ কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান দাগালোর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে।
জাতিসংঘের মতে, তখন থেকে এই সংঘাতে হাজারো মানুষ নিহত ও প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
দারফুরের জমজম বাস্তুচ্যুত শিবিরসহ কমপক্ষে পাঁচটি স্থানে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে আরএসএফ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বন্যার ঝুঁকির কারণে সুদানের পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।
ইউনিসেফের মতে, এ বছরের বর্ষায় ৪ লাখ ৬২ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Comments