পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের রেল অবরোধ ‘স্থগিত’, ১১টায় মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে নতুন কর্মসূচি

খুলনায় পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধ। ১৬ এপ্রিল ২০২৫। ছবি: হাবিবুর রহমান/ স্টার

ছয় দফা দাবি আদায়ে আজ বৃহস্পতিবার সারাদেশে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের রেল অবরোধ সাময়িক 'স্থগিত' করা হয়েছে।

আজ প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপে ও শিক্ষা উপদেষ্টার আহ্বানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবে 'কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ'র প্রতিনিধিরা। এই বৈঠক চলাকালীন সময়ে রেল অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত থাকবে।

'কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ'র কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি জুবায়ের পাটোয়ারী দ্য ডেইলি স্টারকে আজ সকালে বলেন, 'সকাল ১১টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমার বৈঠক রয়েছে। বৈঠক শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সারাদেশে রেল অবরোধ করা হবে না। বৈঠকের সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।'

তিনি বলেন, 'সারাদেশে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হবে এবং সে অনুযায়ী পরবর্তী কর্মসূচিতে সবাই অংশ নেবেন।'

এর আগে আন্দোলনরত ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকার সাতরাস্তা এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, বৃহস্পতিবার সারাদেশে রেল অবরোধ কর্মসূচি চলবে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

'কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়' নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও কারিগরি শিক্ষার্থীদের জন্য টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ ছয় দাবিতে গতকাল ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন জেলার প্রধান সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিগুলো হলো, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।

দ্বিতীয় দাবি, ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।

তৃতীয় দাবি, উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

চতুর্থ দাবি, কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোয় অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ ও সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।

পঞ্চম দাবি, স্বতন্ত্র 'কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা' মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও 'কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন' গঠন করতে হবে।

ষষ্ঠ দাবি, পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

3h ago