১০ বছর পর ইরান-সৌদি আরব হজ ফ্লাইট চালু

সৌদি আরব ও ইরানের পতাকা। ফাইল ছবি: রয়টার্স
সৌদি আরব ও ইরানের পতাকা। ফাইল ছবি: রয়টার্স

প্রায় ১০ বছর বন্ধ থাকার পর আবারও ইরান থেকে হজ ফ্লাইট চালু করেছে সৌদি আরবের বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা ফ্লাইনাস।

আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

বিশ্লেষকদের মতে, রিয়াদ-তেহরানের সম্পর্কের বরফ গলার সর্বশেষ উদাহরণ এই উদ্যোগ। 

দুই শহরে হজ ফ্লাইট

সৌদি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে এএফপিকে বলেন, 'ইরানি হজযাত্রীদের সৌদি আরবে আনতে শনিবার তেহরানের ইমাম খোমেনি বিমানবন্দর থেকে আবারও হজ ফ্লাইট চালু করেছে উড়োজাহাজ সংস্থা ফ্লাইনাস।'

কর্মকর্তা জানান, রাজধানী তেহরানের পাশাপাশি উত্তরপূর্ব ইরানের বড় শহর মাশহাদ থেকেও হজ ফ্লাইট চালু করা হবে। যার ফলে, ফ্লাইনাসের মাধ্যমে ৩৫ হাজার হজযাত্রী সৌদিতে পৌঁছাতে পারবেন।

ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ। ছবি: ফ্লাইনাস
ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ। ছবি: ফ্লাইনাস

ফ্লাইনাস একটি সৌদি ভিত্তিক সাশ্রয়ী উড়োজাহাজ সংস্থার। সংস্থাটি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক, উভয় ধরণের ফ্লাইটই পরিচালনা করে থাকে।

কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন, আপাতত দুই দেশের মধ্যে কোনো বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালু হচ্ছে না। শুধু হজযাত্রীদের আনা-নেওয়ার জন্যেই ফ্লাইনাসের ফ্লাইটগুলো চালু করা হয়েছে।

জুনের প্রথম সপ্তাহে হজ শুরু হবে। ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হজযাত্রীরা সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

চীনের মধ্যস্থতায় ইরান-সৌদি আরব সম্পর্ক পুন:স্থাপন

২০২৩ সালে চীনের মধ্যস্থতায় ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুন:স্থাপন হয়। সে সময় চীনের এই অর্জনকে বিশ্লেষকরা 'বিস্ময়কর' সাফল্য বলে অভিহিত করেছিলেন।  

বেইজিংয়ের কূটনৈতিক দক্ষতায় সাত বছর পর মধ্যপ্রাচ্যের ওই দুই শক্তিশালী ও ধনী দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

২০১৬ সালে তেহরানে সৌদি দূতাবাস ও মাশশাদের সৌদি কনসুলেটে হামলার ঘটনার ফলশ্রুতিতে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব।

ওই বছর সৌদি আরবে শিয়া সম্প্রদায়ের শীর্ষস্থানীয় নেতা শেখ নিমর আল নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রতিবাদে দূতাবাস ও কনসুলেটের সামনে বিক্ষোভ ও হামলার ঘটনা ঘটে।

২০১৬ সালে ইরান থেকে কোনো হজযাত্রীকে সৌদিতে আসতে দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে ইরান থেকে চার্টার্ড ফ্লাইটে করে হজযাত্রীদের আসার অনুমতি দেয় সৌদি কর্তৃপক্ষ।

তবে ২০২৩ সালে দুই পক্ষের সম্পর্ক খানিকটা উষ্ণ হওয়ার পর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে।

ইরান-সৌদি আরব একে অপরের ভূখণ্ডে নিজ নিজ রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও সফর বিনিময় করেন। ইরানের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ২০২৩ সালের নভেম্বরে গাজার যুদ্ধ নিয়ে এক যৌথ আরব-ইসলামিক সম্মেলনে যোগ দেন, যা ছিল ২০ বছর পর ইরানের কোনো প্রেসিডেন্টের সৌদি সফর।

ডিসেম্বরে ইরান এয়ার মাশশাদ থেকে সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় শহর দাম্মামে ফ্লাইট চালু করে। 

গত মাসে সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী যুবরাজ খালিদ বিন সালমান এক বিরল সফরে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সঙ্গে দেখা করেন।

এমন সময় এসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যখন পরমাণু চুক্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্র-ইরান চার দফা বৈঠকে অংশ নিয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্য সফরে থাকাকালীন সময়ে আশাবাদ প্রকাশ করে বলেছেন, উভয় পক্ষ চুক্তির 'কাছাকাছি পৌঁছে গেছে'।

তবে তিনি তেহরানকে হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, দ্রুত চুক্তিতে সম্মতি না দিলে 'খারাপ কিছু হতে পারে।'

গত সপ্তাহে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যের তিন দেশে সফর শুরুর কয়েকদিন আগেই ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি সৌদি সফর করেন।

 

Comments

The Daily Star  | English
Election in Bangladesh

Why are we trying to make the election uncertain?

Those who are working to prevent the election should question themselves as to how the people will be empowered without one.

3h ago