আবারও বাংলাদেশে শ্রম পরিবেশ উন্নতির আহ্বান মার্কিন শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের

পোশাক শিল্প
প্রতীকী ছবি: স্টার ফাইল ফটো

পোশাক ও জুতা শিল্পে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ী সংগঠন আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ) ও ফেয়ার লেবার অ্যাসোসিয়েশন (এফএলএ) ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সফল শুল্ক আলোচনা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে শ্রম পরিবেশ উন্নয়নের ওপর জোর দিচ্ছে।

গত ২০ মে এএএফএ ও এফএলএ বাংলাদেশে শ্রম পরিবেশ উন্নয়নের অনুরোধ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী ব্যবসায়িক সম্পর্কের জন্য তা অত্যাবশ্যক।

এএএফএ এক হাজার ১০০টির বেশি শীর্ষ ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করে। এসব ব্র্যান্ডের কর্মী সংখ্যা সাড়ে তিন মিলিয়নেরও বেশি। বার্ষিক বিক্রি ৫০৯ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।

এএএফএ প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী স্টিভ ল্যামার এবং এফএলএ প্রেসিডেন্ট জেফ ভক্রড যৌথ বিবৃতিতে বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি, বর্তমান ও আগামীতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, জুতা ও ভ্রমণ শিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি শ্রমিকদের অধিকারের উন্নয়ন ঘটবে।'

গত বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের দুই শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন ড. ইউনূসকে চিঠি দেয় এবং ব্র্যান্ড প্রতিনিধিরা গত বছরের নভেম্বর ও জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সফর করে।

এতে আরও বলা হয়, এসব সমস্যার সমাধান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের বিষয়ে আলোচনাকে সফলভাবে উপসংহারের দিকে নিয়ে যেতে সহায়তা করবে।

'আলোচনার সময় পেরিয়ে গেছে' উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভালো বাণিজ্যের জন্য যত দ্রুত সম্ভব সমস্যা সমাধানের প্রকৃত অগ্রগতি দৃশ্যমান হতে হবে।

বিষয়গুলোর মধ্যে আছে—ন্যূনতম মজুরি নিয়ে ২০২৩ সালের বিক্ষোভ থেকে গ্রেপ্তারকৃতদের দ্রুত মুক্তি, তাদের বিরুদ্ধে সব ফৌজদারি অভিযোগ তুলে নেওয়া ও বিক্ষোভ সম্পর্কিত এফআইআর বাতিল করা।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতার ও বাংলাদেশ স্বাধীন গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়ন ফেডারেশনের শ্রমিক সংগঠক জুয়েল মিয়াসহ শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে আনা মামলা প্রত্যাহার ও নিষ্পত্তির জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এএএফএ ও এফএলএ।

২০২৩ সালে বেশি মজুরির পক্ষে কথা বলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই চলতি বছর পোশাক, জুতা ও ভ্রমণ শিল্পের জন্য স্বচ্ছ ও নিয়মিত বার্ষিক ন্যূনতম মজুরি পর্যালোচনার দিকে দ্রুত অগ্রসর হতে হবে। এতে সব অংশীদার-নিয়োগকর্তা, সরকার ও শ্রমিকদের (স্বাধীন ইউনিয়ন, শ্রমিক গোষ্ঠী/প্রতিনিধি) আলোচনায় আনতে হবে।

সরকারকে শিল্প সম্পর্ক উন্নয়নে ও ভবিষ্যতের অস্থিরতা রোধে কাজ করতে হবে। দ্রুত শ্রম আইন নিয়ে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা করতে হবে এবং আইনটিকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে।

সংস্কারের মাধ্যমে স্বাধীন ট্রেড ইউনিয়ন গঠন ও নিবন্ধকরণকে সহজতর করা উচিত। এ ছাড়াও, নিবন্ধকরণের শর্ত শিথিল করা উচিত।

অন্যায্য শ্রম অনুশীলনের জন্য জরিমানা অবশ্যই বাড়াতে হবে। রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে শ্রমিকদের পূর্ণ শ্রম অধিকার দিতে হবে।

'যেহেতু আপনারা এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করে নতুন যুগে প্রবেশ করছেন, তাই শ্রমিকদের সুরক্ষা ও এ শিল্পের বিকাশ নিশ্চিত করতে আমরা আপনাদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতে চাই।'

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনার মধ্যে এটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই শুল্ক বাংলাদেশের রপ্তানিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Rickshaw-puller picked up from Dhanmondi 32 gets bail

There is no legal bar for him to walk out of jail, his lawyer Advocate Farzana Yasmin Rakhi told The Daily Star

1h ago