বরগুনা হাসপাতালে প্রায় অর্ধেক পদ শূন্য, ১২ লাখ মানুষের জন্য মাত্র ১৬ চিকিৎসক

বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল। ছবি: সোহরাব হোসেন/স্টার

২৫০ শয্যার বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্সসহ মোট কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার কথা ২৩৩ জন। কিন্তু ১০০ থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হওয়ার পর ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও এই ২৩৩ পদের ১১০টিই এখনো শূন্য।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ হাসপাতালে ৫৫ জন চিকিৎসকের অনুমোদন দিলেও বর্তমানে এখানে কর্মরত ডাক্তারের সংখ্যা মাত্র ১৬ জন। যে কারণে ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। গুরুতর রোগীদের নিয়মিত পাঠানো হচ্ছে বরিশাল বা ঢাকার হাসপাতালগুলোতে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১০টি সিনিয়র কনসালটেন্ট পদের মধ্যে নয়টিই শূন্য। কেবল অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগে একজন সিনিয়র কনসালটেন্ট আছেন। কার্ডিওলজি, অর্থোপেডিক্স, গাইনি, মেডিসিন, শিশু, প্যাথলজি, সার্জারি, ইএনটি ও চক্ষু বিভাগের কোনো সিনিয়র কনসালটেন্ট নেই।

জুনিয়র কনসালটেন্টের ১২টি পদের মধ্যে সাতটিই শূন্য—যার মধ্যে আছে সার্জারি, কার্ডিওলজি, প্যাথলজি ও রেডিওলজির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ।

হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার ও সমমানের ২৯টি পদ থাকলেও এর মধ্যে ২২টিই শূন্য।

চিকিৎসকের তুলনায় নার্সের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি—১০১টি পদের মধ্যে ৭৯টি পূরণ হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনিক ও সহায়ক বিভাগগুলোতে জনবলের তীব্র সংকট আছে। চিফ অ্যাসিস্ট্যান্ট, হিসাবরক্ষক, স্টোরকিপার, কম্পিউটার অপারেটর ও মর্গ স্টাফের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো এখনো শূন্য।

জনবলের এই তীব্র সংকটের কারণে হাসপাতালের দৈনন্দিন কার্যক্রমই চলছে না ঠিকমতো।

গতকাল রোববার হাসপাতালে ভর্তি সদর উপজেলার হাজারাবিঘা গ্রামের রোগী নাসির উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ছয় দিন ধরে ভর্তি আছি, মাত্র একবার ডাক্তার দেখেছেন। ডাক্তার নাই, ওষুধ নাই। বললে কিছু ট্যাবলেট দেয়, রোগীর অবস্থা একটু গুরুতর হলেই বরিশাল বা ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়।'

আরেক রোগী ধলুয়া ইউনিয়নের রুবিয়া আক্তার বলেন, 'দিনে তিনবার খাবার দেয়—সকালে রুটি, কলা, ডিম; দুপুরে ও রাতে ভাত। খাবারের মানও বেশ খারাপ।'

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও এখানে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ রোগী ভর্তি হয়। কিন্তু সরকারিভাবে এখনো ১০০ শয্যার হাসপাতালের বাজেটই দেওয়া হয়। ১০০ শয্যার জন্য বছরে বরাদ্দ ১১ কোটি টাকা, যার মধ্যে খাবারের জন্য থাকে ৬৫ লাখ টাকা—অর্থাৎ প্রতিদিন রোগীপ্রতি ১৭৫ টাকা।

কিন্তু বর্তমানে রোগীদের খাবারের জন্যই বছরে ব্যয় হয় এক কোটি ৬০ লাখ টাকা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের বাজেট থেকে অর্থ নিয়ে এ খাবার সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছে।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রেজয়ানুল আলম জানান, হাসপাতালের শূন্য পদগুলো নিয়ে আজ সোমবার বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভা চলাকালে ফোনে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন জেলা প্রশাসক। 

'উপদেষ্টা মহোদয় হাসপাতালের শূন্য পদগুলোর তালিকা চাইলে সেটা তাকে হোয়াটসঅ্যাপে দেওয়া হয়েছে। শিগগির শূন্য পদগুলো পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি,' যোগ করেন রেজয়ানুল।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh Bank reduces cash reserve requirement

Three banks agree to merge, two oppose

Among the five Shariah-based banks slated for merger by the central bank, three have agreed to the regulator’s plan, while two have opposed it during separate meetings in the last three days..Those that agreed are First Security Islami Bank PLC (FSIB), Global Islami Bank PLC (GIB), and Uni

33m ago