ইরানের ২ পরমাণু স্থাপনায় হামলা: আইএইএ

তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় তেল পরিশোধনাগারে আগুন ধরে যায়। ছবি: এএফপি
তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় তেল পরিশোধনাগারে আগুন ধরে যায়। ছবি: এএফপি

টানা ছয়দিন ধরে ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলা চলছে। ইসরায়েলি হামলার মূল লক্ষ্য ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনা। আজ বুধবার ইরানের দুই পরমাণু স্থাপনায় হামলার তথ্য পাওয়া গেছে।

আজ বুধবার জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ'র বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরেনিয়াম পরিশোধনের গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ সেন্ট্রিফিউজ নির্মাণে ব্যবহৃত দুইটি ভবন ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। তেহরানের খুব কাছে কারাজ শহরে ওই দুই পরমাণু স্থাপনার অবস্থান।

আজ বুধবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, '৫০টিরও বেশি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান তেহরান ও আশেপাশের এলাকায় গত কয়েক ঘণ্টা ধরে ধারাবাহিক হামলা চালিয়েছে।'

এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর আইএইএ জানায়, দুই পরমাণু স্থাপনায় হামলা হয়েছে।  

সামাজিক মাধ্যম এক্সে পোস্ট করে সংস্থাটি জানায়, 'আইএইএর কাছে তথ্য এসেছে, ইরানের দুইটি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদনকারী স্থাপনা টেসা কারাজ কর্মশালা ও তেহরাণ গবেষণা কেন্দ্রে হামলা হয়েছে।'

'এর আগে উভয় স্থাপনাই আইএইএর নজরদারিতে ছিল এবং জেসিপিওএ চুক্তির আওতায় যাচাইকরণ প্রক্রিয়ার অংশ ছিল'।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ মোট ছয় দেশের সঙ্গে সম্পাদিত পরমাণু চুক্তির সংক্ষিপ্ত নাম জেসিপিওএ। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র সরে দাঁড়ালে ওই চুক্তি বাতিল হয়। ইসরায়েলের হামলার আগে ওমানের মধ্যস্থতায় ওয়াশিংটন-তেহরান পাঁচ দফায় নতুন পরমাণু চুক্তির বৈঠক করে। তবে ইসরায়েলি হামলা সূত্রে ষষ্ঠ বৈঠকটি বাতিল হয়।

সংস্থাটি এক্সে দেওয়া অপর এক পোস্টে জানায়, তেহরানের অপর এক অত্যাধুনিক সেন্ট্রিফিউজ রোটর উৎপাদন কারখানায় হামলা হয়।

ইসরায়েলি সেনা আরও জানায়, 'ইরানের পরমাণু অস্ত্র উৎপাদন প্রকল্পের উন্নয়নে বাধা দিতে তেহরানের একটি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদনকেন্দ্রে হামলা করা হয়েছে।'

ইউরেনিয়াম পরিশোধন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সেন্ট্রিফিউজ। এই সংবেদনশীল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পারমাণবিক চুল্লিতে ব্যবহৃত জ্বালানি উৎপাদন করা হয়। এমন কী, পারমাণবিক চুল্লীর অবকাঠামো তৈরিতেও সেন্ট্রিফিউজের ব্যবহার রয়েছে।

গত শুক্রবার নাতাঞ্জ ও ইসফাহান শহরের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরায়েল।

গতকাল আইএইএ'র প্রধান রাফায়েল গ্রোসি আল জাজিরাকে জানান, ইসরায়েলি হামলায় ইরানের ক্ষতিগ্রস্ত পারমাণবিক স্থাপনার মধ্যে নাতাঞ্জ থেকে তেজস্ক্রিয় ও রাসায়নিক দূষণের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

ভিয়েনায় আইএইএ বোর্ড অব গভর্নর্সের জরুরি সভায় গ্রোসি বলেন, হামলার পর নাতাঞ্জ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনার বাইরের তেজস্ক্রিয়তার স্তর স্বাভাবিক থাকলেও, সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছড়ানোর সম্ভাবনা বাড়ছে।

নাতাঞ্জে মাটির ওপরের কাঠামো ধ্বংস হলেও নিচের কিছু ইউনিট বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। এতে ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড গ্যাসযুক্ত সেন্ট্রিফিউজ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এই গ্যাস অতি দূষণকারী, ত্বকের জন্য ক্ষতিকর এবং নিঃশ্বাসের মাধ্যমে এটি শরীরে প্রবেশ করলে তা প্রাণঘাতীও হতে পারে।

আইএইএ প্রধান বলেন, এই পরিস্থিতিতে আমরা সময়মতো ও নিয়মিত তথ্য না পেলে সঠিকভাবে ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে বা সহায়তা দিতে পারব না।

Comments

The Daily Star  | English

US officials preparing for possible strike on Iran in coming days, Bloomberg reports

Iran and Israel continue to attack each other on Wednesday night, as Donald Trump weighs US involvement

9h ago