সিলেটে খাসিয়াপুঞ্জির ১৭০০ পান গাছ কে বা কারা কেটে দিয়েছে

পরিপক্ব পান গাছগুলো কেটে দেওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার লামা খাসিয়াপুঞ্জি এলাকার প্রায় এক হাজার ৭০০ পান গাছ কে বা কারা কেটে দিয়েছে।

গত সোমবার গভীর রাতে পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের প্রতাপপুর সীমান্ত বিজিবি ক্যাম্পের কাছে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, পান গাছগুলো লামা খাসিয়াপুঞ্জির হেডম্যান রিসন কংওয়াং ও প্রতাপপুর পুঞ্জির পরমা ডিখারের।

এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে তারা একটি মামলা দায়ের করেছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর অভিযোগ, এটি সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ। 

ছবি: সংগৃহীত

এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকায় প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছে আদিবাসী অধিকার ও যুব সংগঠনগুলো।

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে খাসিয়া সম্প্রদায়ের এক নেতা বলেন, 'এটি কোনো এলোমেলো ভাঙচুরের ঘটনা নয়, বরং একটি বিশাল, সমন্বিত ও বৃহৎ ষড়যন্ত্রের অংশ।'

ভুক্তভোগী রিসন কংওয়াং জানান, এ ঘটনায় ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৫ লাখ টাকা। 

তিনি বলেন, 'একটি পান বাগান পরিপক্ব হতে প্রায় দুই বছর সময় লাগে। আমাদের বাগানটি ফসল তোলার জন্য প্রস্তুত ছিল। এখন সব শেষ।'

ছবি: সংগৃহীত

স্থানীয়রা জানান, লামা পুঞ্জিতে ৪৭টি ও প্রতাপপুর পুঞ্জিতে ২৫টি খাসিয়া পরিবারের বাস। পান চাষ কেবল তাদের আয়ের উৎসই নয় বরং সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতীকও।

প্রতিটি পান বাগানে ১৫-২০ জন শ্রমিক কাজ করেন। এতে খাসিয়া সম্প্রদায়ের অনেকেই উপকৃত হন। তবে এভাবে নিজেদের প্রধান আয়ের উৎস হারিয়ে তারা এখন দিশেহারা।

আরেক ভুক্তভোগী পরমা ডিখার বলেন, 'আমাদের আর্থিকভাবে দুর্বল ও স্থানচ্যুত করার জন্য একটি ইচ্ছাকৃত কৌশল বলে মনে হচ্ছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও প্রশাসনিক অবহেলাকে কাজে লাগিয়ে বহিরাগতরা আমাদের জমির নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়।'

ছবি: সংগৃহীত

খাসিয়া সম্প্রদায়ের নেতা ওয়েলকাম লাম্বা বলেন, 'যদি ন্যায়বিচার না পাওয়া যায়, তাহলে ঐতিহ্যবাহী পান চাষের ভবিষ্যৎ এবং এই অঞ্চলের খাসিয়া জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব হুমকিতে পড়বে।'

খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের তথ্য ও প্রকাশনা সম্পাদক সাজু মার্ছিয়াং বলেন, 'আমরা প্রকৃতির সন্তান, তবু আমাদের হয়রানি অব্যাহত রয়েছে। আমাদের জীবিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে কে?'

এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. কবির হোসেন বলেন, 'আমাদের পুলিশের টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

How Dhaka’s rickshaw pullers bear a hidden health toll

At dawn, when Dhaka is just beginning to stir, thousands of rickshaw pullers set off on their daily grind.

19h ago