রামপাল: হরতাল সমর্থকদের ওপর পুলিশের কাঁদানে গ্যাস

সুন্দরবন রক্ষার দাবিতে হরতাল সমর্থকদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে পুলিশ। ছবি: সুজিত সরকার

সুন্দরবনের পাশে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের দাবিতে ঢাকায় আধবেলা হরতাল পালিত হয়েছে। আজ সকাল সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ডাকে এই হরতাল পালিত হয়।

হরতালে প্রায় পুরোটা সময় জুড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পুলিশের সঙ্গে হরতাল সমর্থকদের থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। এ সময় প্রায় এক’শ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুঁড়েছে পুলিশ। এর জবাবে বিপরীত দিক থেকে কিছু ইট-পাটকেল মারা হয়।

শাহবাগ থেকে পাঁচ জন হরতাল সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ। এসময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দুজন সাংবাদিক আহত হন।

হরতালের সমর্থনে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। মিছিলটিকে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ বাধে। তখন থেকেই থেমে থেমে হরতাল সমর্থকদের ওপর টিয়ারগ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। অন্তত ৭০টি কাঁদানে গ্যাসের শেল ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক।

শাহবাগ থেকে পাঁচ জন হরতাল সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে তপু ও জিয়াউর জুয়েল সাংস্কৃতিক সংগঠন বেতালের সদস্য। ঘটনাস্থল থেকে শাহবাগ থানার ওসি আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এটিএন নিউজের ক্যামেরাপারসন আব্দুল আলিম দুপুরের দিকে শাহবাগ মোড়ে পুলিশের সঙ্গে হরতাল সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় আহত হন। তার মাথা ও হাত থেকে রক্ত ক্ষরণ হচ্ছিলো। চিকিৎসার জন্য তাকে পাশের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এছাড়াও মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউনের সাব এডিটর মোরশেদ জাহান মিঠুন ডিএমপির সহকারী কমিশনার মাহবুবের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। মিঠুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “ট্রাফিক পুলিশ সেখানে হরতাল সমর্থকদের ওপর বাস চালিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এ ব্যাপারে আমি তাকে (এসি মাহবুব) জিজ্ঞাসা করলে তিনি আমাকে লাঞ্ছিত করেন। আমার পরিচয়পত্র দেখালে তিনি বলেন ইংরেজি পত্রিকা পড়েন না তিনি।

অন্যদিকে পল্টনে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে মিছিল করেছেন। পুলিশের নজরদারিতে থাকা এই মিছিল শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে।

জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সুন্দরবন রক্ষা আন্দোলনে জনগণের সমর্থন রয়েছে। সবাইকে এই আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানাই আমরা।

তিনি আরও বলেন, পরিবহন শ্রমিকরাও আন্দোলনে সামিল হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি, যানবাহন বের করতে পুলিশ দিয়ে তাদের ভয়ভীতি দেখিয়েছে সরকার।

হরতালের সমর্থনে শান্তিনগর ও মোহাম্মদপুর এলাকাতেও মিছিল হয়েছে। তবে এসব জায়গায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

অন্যান্য দিনের অফিস সময়ের তুলনায় আজ রাজধানীতে কম যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়।

সুন্দরবনের কাছে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে পরিবেশগত ঝুঁকি ও এর বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলনের পরও নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছে সরকার। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদ হতে দেখা গেছে। ইউনেস্কোসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Life insurers mired in irregularities

One-fourth of the life insurance firms in the country are plagued with financial irregularities and mismanagement that have put the entire industry in danger.

6h ago