কোন পরিস্থিতি জঙ্গিবাদকে আবার উৎসাহিত করছে
যখন কোথাও 'জঙ্গি' শব্দটি শুনি, চোখের সামনে ভেসে ওঠে হলি আর্টিজানের নৃশংস ঘটনার কথা। এর আগে ও পরে জঙ্গি সংশ্লিষ্ট অনেক ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু এরকম ভয়াবহ পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড আমরা আগে দেখিনি।
শুধু তাই নয়, কিছু বিপদগামী সন্তানের হাতে যেসব দেশি-বিদেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, তাদের পরিবার-পরিজনদের কান্নার পাশাপাশি আমরা দেখেছি এমন কিছু মানুষের গোপন আর্তনাদ, যাদের সন্তান এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে।
তরুণ হামলাকারীদের বাবা-মা, পরিবার, বন্ধুরা একদিকে যেমন লজ্জা ও ভয়ে কুঁকড়ে ছিল, তেমনি সন্তান হারানোর বেদনায় নীল হয়ে গিয়েছিল। সন্তান হারানোর পাশাপাশি তাদের সবচেয়ে বড় বেদনার জায়গাটা ছিল, যে সন্তানকে তারা পড়াশোনা শিখিয়ে বড় করেছেন, সেই সন্তান জঙ্গি হয়ে মানুষ হত্যা করেছে।
হলি আর্টিজানে নিহত জঙ্গি সন্তানের একজন মা, যিনি নিজে শিক্ষিকা, কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, 'আমার সন্তান এত জঘন্য কাজ করতে গিয়ে নিহত হলো, মানুষ খুন করলো, দেশকে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল, সেই সন্তানের জন্য আমি কাঁদতে চাই না, চাই না দুঃখ করতে। কিন্তু পারি না। কারণ আমি তো মা। পেটে ধরে ওকে আমি বুকে করে বড় করেছি। এখন বুঝতে পারি, সঠিক শিক্ষাটা আমরা দিতে পারিনি ওকে। বুঝতেই পারিনি কেন, কখন, কবে আমাদের সন্তান বিপথে পা বাড়িয়েছে।'
সেই মায়ের কান্না ও দুঃখ যেন অন্য মা-বাবাদের জীবনে না ঘটে, এ জন্য সরকার কঠিন হাতে জঙ্গিবাদী তৎপরতা ঠেকানোর কার্যক্রম নিয়েছে এবং সফলও হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করেই বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অবস্থার দোদুল্যমানতা, দেশের ভেতরে অন্তহীন সমস্যা, নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সচল হয়ে ওঠার চেষ্টা এবং জনগণের নানামুখী ক্ষোভকে সামনে রেখে কিছু জঙ্গিবাদী সংগঠন মাথাচাড়া দেওয়ার সুযোগ খুঁজছে। তাদের বিভিন্ন অপতৎপরতার সংবাদ চোখে পড়ছে।
দুর্গম পাহাড়ে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ শিবির স্থাপন করেছে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া। নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেশের ১৯টি জেলা থেকে 'হিজরতের' নামে ৫৫ জন তরুণ ঘর ছেড়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকে কেএনএফের প্রশিক্ষণ শিবিরে আছেন বলে র্যাব মনে করছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে সশস্ত্র জঙ্গিবাদ উত্থানের সবচেয়ে বড় উদাহরণ দেখেছি ২০০৫ সালে, যখন জেএমবি ৬১টি জেলায় একযোগে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। এরপরে সারা দেশে ছোট-বড় আরও অনেক সশস্ত্র জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে সবচেয়ে ভয়াবহ ও নৃশংস ঘটনাটি ছিল হলি আর্টিজানের, সেখানে ৫ জঙ্গিসহ ২৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল।
বেশ কয়েক বছর বিরতি দিয়ে, যেসব তরুণ নতুন করে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন, তাদের মধ্যে অধিকাংশই সাধারণ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। কেউ রংমিস্ত্রীর কাজ করছেন, কেউ বৈদ্যুতিক মিস্ত্রী, রাজমিস্ত্রী, কেউ মাদ্রাসা বা স্কুল শিক্ষক, কেউবা কুরিয়ার সার্ভিসে ডেলিভারি বয়। তারা বয়সে তরুণ এবং একটা গোষ্ঠী তাদেরকে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ করেছে। সাহায্য-সহযোগিতার নামে, আশ্রয় দেওয়ার কথা বলে এবং ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েমের কথা বলে কিশোর-তরুণদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে।
কিন্তু কেন আবার দেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেওয়ার পথ খুঁজছে? বরাবরই যে প্রশ্নটির উত্তর মানুষ জানতে চায় তা হচ্ছে, জঙ্গিবাদ বা ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ কি শুধু ধর্মকেন্দ্রিক? নাকি এর সঙ্গে যোগ আছে দারিদ্রের? সুযোগবঞ্চিত মানুষই কি শুধু মনে করে, ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ কায়েম করতে হবে? এগুলো একসময়ের ধারণা হলেও, পরে এই ধারণার পরিবর্তন হয়েছে।
কারণ, আমরা দেখেছি শুধু দরিদ্র ঘরের সুযোগবঞ্চিত তরুণ-তরুণীই এই পথে যাচ্ছে না। আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীরা শুধু দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত কিংবা ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষিত নয়। একটা বড় অংশ এসেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ইংরেজি মিডিয়াম স্কুল, বিদেশে পড়া শিক্ষার্থী এবং ধনী ও শিক্ষিত পরিবারের।
বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) বেশ দীর্ঘমেয়াদে কাজ করেছে জঙ্গিবাদ ও উগ্র সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায়। মূলত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এবং যারা পড়াশোনা করার সুযোগ পায়নি, এমন তরুণ-যুবকদের সঙ্গে, তাদের পরিবার ও শিক্ষকদের সঙ্গে কাজ করা হয়েছে। সেই কাজ করতে গিয়ে এমজেএফ দেখেছে, শুধু কিছু সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণেই সন্ত্রাসী তৈরি হয় না এবং জঙ্গিবাদ বিস্তার লাভ করে না। অন্যভাবে বলা যায়, একই রকমের আর্থসামাজিক অবস্থা থেকে এসেও সবাই সন্ত্রাসী হয়ে ওঠে না।
মনে করার কোনো কারণ নেই যে ধর্মীয় মৌলবাদ প্রতিষ্ঠার জন্যই তরুণ-তরুণীরা সন্ত্রাসী কাজে যুক্ত হয়। এর পেছনে নানা ধরনের লোভ, মোহ, সামাজিক চাপ বা বন্ধুদের চাপও কাজ করে। আমরা দেখেছি, তাদের এমন সব বিষয়ে আকৃষ্ট করা হয়, যা থেকে তারা ধারণা করে যে, জঙ্গিবাদী সংগঠনের কাছ থেকে তারা লাভবান হবে; এই সংগঠনগুলো তাদের এমন কিছু দিতে পারে, যা তাকে সমাজের অন্য কোনো সংস্থা, পরিবার বা বন্ধু দিতে পারছে না। এরকম নানা ধারণা মানুষকে সন্ত্রাসের পথে ঠেলে দেয়। এভাবে তারা জঙ্গিবাদকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করে এবং একসময় সন্ত্রাসী সংগঠন তৈরি করে।
অতীতেও দেশের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন পাহাড়ে আস্তানা বা ঘাঁটি স্থাপনের চেষ্টা করেছিল। কেউ জমি কিনে, কেউ মাদ্রাসা স্থাপন করে চেষ্টাটি করে। আবার কখনো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের (এনজিও) আড়ালেও সেই চেষ্টা হয়েছে। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর আস্তানায় ধর্মভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ নেওয়ার এমন খবর আগে জানা যায়নি।
এই তথ্যটি কিন্তু সরকারের জন্য মারাত্মক। কারণ পাহাড়িদের কিছু বিপ্লবী সংগঠন আছে এবং তারা নানাভাবে পাহাড়ে অস্থিরতা সৃষ্টির পায়ঁতারা করেছে ও করে। তাদের সঙ্গে যদি জঙ্গি সংগঠন জুটি বাঁধে, তা হবে ভয়াবহ। কারণ, নিয়ম অনুযায়ী পাহাড়ি কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর আস্তানায় ধর্মভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ নেওয়ার কোনো কারণ নেই। তাহলে কেন এরকম একটি মোর্চা গড়ে উঠলো?
সহিংস উগ্রবাদীদের লক্ষ্য কারা, এটা নির্ধারণ করতে পারলেই খুব সহজে বোঝা যাবে আমাদের সমাজের কারা এই ভুল পথে যেতে পারে? নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্যের মানুষকে উগ্রবাদীরা তাদের দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে লক্ষ্য করে থাকতে পারে। যেমন: তরুণ ও যুবক, ধর্মভীরু মানুষ, হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তি, সমাজ ও পরিবারবিচ্ছিন্ন ব্যক্তি, অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল, ধনী বা প্রভাবশালীদের সন্তান, ঝরে পড়া শিক্ষার্থী, পারিবারিক অশান্তিতে থাকা নারী ও পুরুষ কিংবা তাদের সন্তান, ইন্টারনেটে আসক্ত ব্যক্তি ও মাদকাসক্ত ব্যক্তি। একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, এ ধরনের মানুষের সংখ্যা বাড়ছে নানা কারণে। ফলে এই বড় গ্রুপকে জঙ্গিবাদের পথে নেওয়া সহজ হবে।
উগ্রবাদে জড়িয়ে পড়ার কারণ ৩ ধরনের। কাঠামোগত, ব্যক্তিগত ও সামাজিক। রাজনৈতিক বৈধতা লাভের জন্য যখন মানুষ চেষ্টা করে, যখন দেশে দারিদ্র্য, বেকারত্ব, বৈষম্য ও দুর্নীতি বাড়তে শুরু করে এবং শিক্ষাব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন কাঠামোগত কারণ কাজ করে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে কাঠামোগত কারণগুলোর অবস্থান এখন দেশে বেশ প্রত্যক্ষ।
ব্যক্তিগত কারণের মধ্যে আছে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষোভ, বঞ্চিত হওয়া, সামাজিক অপমান ও মানসিক আঘাত, আত্মসম্মানহানি, নিজেকে বড় বলে মনে করা ও দুঃসাহসিক কাজের দিকে ঝোঁক।
আর সামাজিক কারণের মধ্যে রয়েছে, বন্ধু ও সমাজের প্ররোচনা এবং শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্ররোচনা।
জঙ্গিবাদ বিষয়ের গবেষকরা মনে করেন, রাজনৈতিক চালকগুলোর মধ্যে আছে রাজনৈতিক অধিকার ও নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়া, দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজদের দায়মুক্তির ব্যবস্থা থাকা। সরকারের কঠোর নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন যখন উপস্থিত থাকবে, তখনই জঙ্গিবাদ বিকাশের ক্ষেত্রে তা অনুকূল বিষয় হিসেবে কাজ করবে।
সাংস্কৃতিক চালকের মধ্যে এই ধারণা আছে যে, ইসলাম বিপদের মুখোমুখি, তাই নিজের ইসলামী সংস্কৃতির বিকাশ বা সমাজে অন্যদের ওপরে নিজের ইসলামী সংস্কৃতিকে চাপিয়ে দিতে হবে। আজকের বাংলাদেশে এইগুলোর প্রকাশ দেখতে পারছি। গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো সীমিত হওয়া, ভিন্নমত প্রকাশের ক্ষেত্রে বাধা, সরকারের শক্তি প্রয়োগের প্রবণতা, এগুলোই অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে জঙ্গিবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে, ইসলামিক মহফিলে, সংবাদমাধ্যমের খবরের নীচে মন্তব্য প্রদানকালে যখন উগ্রপন্থি বক্তব্য দেওয়া হয়, তখন সেটাও একটা বড় ধরনের উপাদান হিসেবে কাজ করে। সেদিন বিএনপির জনসভায় রাজাকার সাকা চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী যখন উদ্ধত স্বরে বক্তব্য রাখলো এবং বিএনপি সেই বক্তব্যকে মেনে নিলো, তখন সেটাও বড় ধরনের উপাদান হতে পারে জঙ্গিবাদ বিস্তারে।
একটি সমাজের বা দেশের অনেক মানুষ যখন জঙ্গিবাদী মনোভাব পোষণ করেন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও নারীর পোশাকের ও চলাফেরার অধিকারকে খর্ব করতে চান, অন্য ধর্ম ও মতের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন এবং নিজের মত ও পথকেই সেরা ভাবেন, তখন দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হতে খুব একটা কষ্ট করতে হবে না।
জঙ্গিবাদের সঙ্গে এর আগে জড়িত অনেক আধুনিক তরুণের মা-বাবারা স্বীকার করেছেন যে, তাদের সন্তান হঠাৎ করেই যখন বাইরের জগতে মেলামেশা কমিয়ে ধর্মকর্মে অত্যাধিক মনোযোগ দিয়েছিল, তখন তারা একটু অবাক হলেও খুব খুশি হয়েছিলেন। তারা গোড়া ধর্মীয় পরিবার না হলেও, তাদের মনে কোনো প্রশ্ন দেখা দেয়নি, কেন ছেলের এই বড় পরিবর্তন?
সাধারণত ইংরেজি মিডিয়ামে পড়াশোনা করা, ধোপদুরস্ত পোশাক পরিহিত একজন তরুণ একেবারে ঝট করে একটা পরিবর্তিত জীবনে প্রবেশ করলে, তা একটু অস্বাভাবিক। পরিবারের মনে একটু প্রশ্ন জাগা উচিৎ ছিল। তাহলেই হয়তো তারা তাদের সন্তানের সহিংস উগ্রবাদে জড়ানোর প্রাথমিক লক্ষণ ধরতে পারতেন।
উগ্রবাদী কোনো ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর সঙ্গে কেউ মেলামেশা করলে সঙ্গে সঙ্গেই সহিংস আচরণ শুরু করবে, তা নয়। বরং তার মধ্যে কিছু আচরণগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
সেলিম (ছদ্মনাম) গাইবান্ধা জেলার এক তরুণ, যে ছিল পরিবারের প্রাণ। যৌথ পরিবারে সবাই মিলে হাসি, ঠাট্টা, আনন্দ করে দিন পার করতো। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার আগে থেকে সবাই লক্ষ্য করলো যে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সেলিমের দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। সে সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চাইছে না। এমনকি একা একা সময় কাটাচ্ছে এবং তার দীর্ঘদিনের পরিচিতজন ও বন্ধুদের কাছ থেকে স্বেচ্ছায় বিচ্ছিন্নতা তৈরি করেছে। ২-১ জন নতুন বন্ধুও তৈরি হলো। জানতে চাইলেও কিছু বলেনি। পরে একদিন চিঠি লিখে ঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। বলে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য বিপ্লব করবে, তাই যাচ্ছে।
পুরোনো উদাহরণ দেওয়ার কারণ হচ্ছে, বাবা-মা, পরিবার ও শিক্ষকদের মধ্যে সচেতনতা বোধকে জাগ্রত করা এবং তারা যেন সহিংস উগ্রবাদে জড়ানোর প্রাথমিক লক্ষণ ধরতে পারেন।
ধর্মীয় শিক্ষা হতে হবে ইনক্লুসিভ, যেখানে সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। আমরা অধিকাংশ মানুষই ধর্ম, বিজ্ঞান, নৃবিদ্যা, প্রত্নতত্ত্ব, দর্শন, বিবর্তন, সংস্কৃতি, আধ্যাত্মিকতা— এসব নিয়ে পড়াশোনা করি না। যে যেই ধর্মের অনুসারী, সে যদি সেই ধর্মের আলোকেই সবকিছু দেখতে চায়, তাহলে সে চাইবে নিজ ধর্মীয় বিশ্বাসের আলোকে সারা দুনিয়াকেই দেখতে। তখনই তারা আগ্রাসী ও উন্নাসিক হয়ে পরিবেশ পরিস্থিতিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে, বা প্রকারান্তরে জঙ্গিবাদকেই উৎসাহিত করে।
শাহানা হুদা রঞ্জনা, সিনিয়র অর্ডিনেটর, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন
(দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, দ্য ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার দ্য ডেইলি স্টার নেবে না।)
Comments