চলমান বন্যা ও বাঁধের রাজনীতি

সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার জন্য ভারতকে যেমন বাংলাদেশের প্রয়োজন, তেমনি বাংলাদেশকেও ভারতের প্রয়োজন। সেটা শুধু নদীর পানি বণ্টন কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলাই নয়, বরং সব ক্ষেত্রেই।

কোনো একটি দেশ কি চাইলেই বন্যা সৃষ্টি করে তার প্রতিবেশী দেশকে ডুবিয়ে মারতে পারে? অথবা উজানের দেশ কি এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে, যাতে ভাটির দেশের মানুষেরা শুকনো মৌসুমে পানির জন্য হাহাকার করবে; আর বর্ষায় সেই পানিতেই তলিয়ে যাবে?

এই প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ এবং না—দুটিই। উত্তরটি হ্যাঁ হয় যখন সেই উজানের দেশটি বন্ধুসুলভ না হয়। যদি সে ভাটির দেশকে তার অধীনস্ত মনে করে। যদি উজানের দেশটি কর্তৃত্ববাদী হয় এবং ভাটির দেশের মানুষের অর্থনীতি ও জীবন-জীবিকার ব্যাপারে তার সংবেদনশীলতা না থাকে। যদি সে অভিন্ন নদী ও পানিকেও রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে গণ্য করে।

সেই প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে দেশের একটি বিরাট অংশে বন্যা পরিস্থিতির দিকে একটু নজর দেওয়া যাক।

গণমাধ্যমের খবর বলছে, বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলসহ ১৩টি জেলায় আকস্মিক বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। ত্রিপুরার দুম্বুর হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্রজেক্ট (দুম্বুর গেট) খুলে দিয়েছে ভারত সরকার। এর প্রভাবে বাংলাদেশ অংশে দ্রুতগতিতে পানি বাড়ছে।

একাধিক বিদেশি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বন্যায় সেখানে বুধবার পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে প্রশাসন। এমন পরিস্থিতিতে খুলে দেওয়া হয়েছে ত্রিপুরার 'ডুম্বুর গেট'।

বন্যা আক্রান্ত ১৩ জেলার মধ্যে সবেচয়ে নাজুক পরিস্থিতি ফেনীতে। বিশেষ করে ছাগলনাইয়া উপজেলার অনেক এলাকায় ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। উদ্ধার কাজ করা যাচ্ছে না। স্রোতের তীব্রতা অনেক। হেলিকপ্টার ছাড়া উদ্ধার কাজ সম্ভব নয়। স্থানীয়রা বলছেন, ত্রাণ বিতরণের চেয়ে মানুষকে উদ্ধার করা বেশি জরুরি।

সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জে বেশকিছু এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। সেখানে পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে চেঙ্গী ও মাইনী নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে এ মৌসুমে চতুর্থবারের মতো বন্যা দেখা দিয়েছে খাগড়াছড়ি জেলায়। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাঘাইহাট এলাকায় সড়ক ডুবে যাওয়ায় সাজেকে আটকা পড়েছে দুই শতাধিক পর্যটক।

কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। সেখানকার মানুষ বলছেন, এর আগে গোমতিতে এত তীব্র স্রোত তারা কখনো দেখেননি। তিতাস উপজেলার আসমানিয়া বাজারে স্থানীয়ভাবে কাঠ ও স্টিল দিয়ে করা সেতুটি পর্যন্ত পানির তোড়ে ভেঙে গেছে।

বাস্তবতা হলো, ভারতের ত্রিপুরায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ভারতের সরকার দুম্বুর হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্রজেক্ট (দুম্বুর গেট) খুলে দিয়েছে। যার ফলে ফেনী, কুমিল্লাসহ আশেপাশের এলাকায় ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

প্রশ্ন হলো, ভারত যদি দুম্বুর গেট খুলে না দিতো, তাহলে কী হতো? সহজ উত্তর, ত্রিপুরায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতো এবং সেখানে আরও বেশি প্রাণহানি হতো। তার মানে ভারত সরকার তার নিজের দেশের মানুষের জানমাল বাঁচানোর জন্য গেট খুলে দিয়েছে। এটা তার দিক থেকে দেখলে যৌক্তিক। কিন্তু আন্তর্জাতিক নদীর পানি বণ্টন ও ব্যবস্থাপনার কিছু নিয়ম-কানুন আছে।

ভারত বছরের পর বছর ধরে তার দেশের ভেতরে অনেক অভিন্ন নদীর পানি নিয়ন্ত্রণের জন্য বাঁধ দিয়েছে, যাতে সে শুকনো মৌসুমে বিভিন্ন রাজ্যের অভ্যন্তরীণ নদীগুলো সচল রেখে মানুষের জীবন-জীবিকা ও ফসল উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারে। আবার অতি বৃষ্টি বা বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিলে ওই বাঁধের গেট খুলে দিয়ে নিজের দেশে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারে। উজানের দেশ হিসেবে এটি তার সুবিধা। কিন্তু ভাটির দেশ হওয়ায় বাংলাদেশ বরাবরই ভারতের এই পানি প্রত্যাহার এবং পানি ছেড়ে দেওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ফারাক্কা বাঁধের কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলোয় প্রবাহ কমে গিয়ে সেখানের জীবন-জীবিকায় কী মারাত্মক প্রভাব পড়ছে তা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। ভারতের সঙ্গে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে বাংলাদেশের চুক্তি আছে। কিন্তু সেই চুক্তির অনেক শর্তই যে বাংলাদেশের স্বার্থের পরিপন্থি এবং বাংলাদেশ যে তার সময়মতো চুক্তিতে উল্লিখিত পানিও পায় না, সেটিও ওপেন সিক্রেট।

বাংলাদেশ-ভারতের অন্যতম প্রধান অভিন্ন নদী তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে বছরের পর বছর বা যুগের পর যুগ ধরে যে কী চলছে, তাও সবার জানা। তার মানে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে পারস্পরিক সম্পর্ক থাকার কথা ছিল; অভিন্ন নদীর পানি ব্যবহারে উজান ও ভাটির দেশের মধ্যে যে ধরনের যৌক্তিক, মানবিক ও বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা থাকার কথা ছিল, তা অনুপস্থিত।

মুদ্রার অন্যপিঠ হলো, অতিবৃষ্টি বা বন্যায় ভারত নিজেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেমন: সিকিমে পাহাড়ধসে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে পাশের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের গজলডোবা বাঁধে পানির চাপ অস্বাভাবিক বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গেও বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অর্থাৎ প্রাকৃতিক কারণে যেমন অতিবৃষ্টি হতে পারে, তেমনি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কারণেও সেই দুর্যোগ বড় আকার ধারণ করতে পারে। অতিবৃষ্টি বা পাহাড়ি ঢলের পানি যদি নদী-নালা হয়ে সমুদ্রে চলে যেতে পারতো এবং নদীগুলো যদি পলি জমে ভরাট না হয়ে যেতো; নদীগুলো দখল করে সেখানে নানারকম অবকাঠামো গড়ে তোলা না হতো, তাহলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই অতিবৃষ্টি বন্যা সৃষ্টি করতো না। কিংবা বন্যা হলেও সেটি দুর্যোগ নয় বরং কৃষি ও মৎস্য সম্পদের জন্য আশির্বাদ হতো।

কিন্তু বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশেই নদী দখল, দূষণ ভরাট একটি বিরাট সমস্যা। যার ফলে বন্যা এখন আশির্বাদের বদলে অভিশাপে পরিণত হয়েছে।

এটি হচ্ছে স্ব স্ব দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, রাষ্ট্রকাঠামো আর উন্নয়ন পরিকল্পনার সমস্যা। কিন্তু কোনো একটি অভিন্ন নদী, অর্থাৎ যে নদী একাধিক দেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে, সেই নদীতে উজান কিংবা ভাটি—কোনো দেশের সরকারই নিজের ইচ্ছামতো বাঁধ তৈরি করতে পারে না। কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে উভয় দেশের সম্মতি থাকতে হয়। উভয় দেশের মানুষের ‍সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় নিতে হয়—যা বাংলাদেশ-ভারতের ক্ষেত্রে বরাবরই অনুপস্থিত।

ফেনী ও কুমিল্লা অঞ্চলে চলমান বন্যাকে অনেকেই 'রাজনৈতিক বন্যা' বলে অভিহিত করছেন। যেমন: গতকাল বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে একটি শিক্ষার্থী সমাবেশে বক্তাদের অনেকে অভিযোগ করে বলেছেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের চলমান বন্যা ভারত রাজনৈতিকভাবে তৈরি করেছে। এ সময় তারা ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন। সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমম্বয়ক হাসিব আল ইসলাম বলেন, নদী একটি প্রাকৃতিক সম্পদ। তা নিজস্ব নিয়মে চলবে। সেখানে বাধা দেওয়া অপরাধ। ভরা মৌসুমে পানি না দিয়ে ভারত আমাদের খরায় রাখে। আর এখন বাঁধ ছেড়ে দিয়ে মানুষকে বন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছে।

গতকাল রাতে একটি ফেসবুক পোস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ লিখেছেন, 'পৃথিবীর ইতিহাসে নিকৃষ্টতম গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা কে আশ্রয়, নোটিশ ছাড়াই ওয়াটার গেইট খুলে দিয়ে বন্যার সৃষ্টি করা ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতির কারণ হতে পারে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের জনগণের কাছে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে।'

বৃহৎ প্রতিবেশীর সঙ্গে শত্রুতা করে খুব বেশি কিছু অর্জন করা যায় না, এটি যেমন ঠিক, তেমনি বন্ধুত্বও একপাক্ষিক হয় না। বন্ধুত্ব একটি দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা, ভালোবাসা ও পারস্পরিক সম্মান ও আস্থার বিষয়। দুজন বন্ধুর মধ্যে একজন যদি সব সময় 'বড় ভাইসুলভ' আচরণ করতে থাকেন, সেটি আর বন্ধুত্ব হয় না। বরং সেটি বড়-ভাই ছোট ভাই অথবা ঊর্ধ্বতন-অধস্তন সম্পর্কে পরিণত হয়।

প্রতিবেশি রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে বড় ও শক্তিশালী রাষ্ট্রের দায়িত্ব অনেক বেশি। কর্তৃত্ববাদ প্রতিবেশীর সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায়। মনে রাখা দরকার, প্রতিবেশী ছোট রাষ্ট্রগুলো ভালো না থাকলে অপেক্ষাকৃত বড় রাষ্ট্রের পক্ষেও ভালো থাকা কঠিন।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুক্তি, তথ্য-উপাত্ত, ফ্যাক্ট ও বাস্তবতার চেয়ে আবেগ ও পারসেপশন বেশি শক্তিশালী। আবার যেসব পারসেপশন তৈরি হয়েছে, সেখানেও অনেক যুক্তি ও ফ্যাক্ট রয়েছে। এটি বেশ জটিল সমীকরণ, যা একদিনে তৈরি হয়নি। মনে রাখা দরকার, প্রতিটি সরকারে কাছে তার নিজের দেশের জনগণ, অর্থনীতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এক নম্বর অগ্রাধিকার। তার দেশে যদি বন্যা হয়, যদি তার দেশে পানির সংকট দেখা দেয়, তাহলে তাকে প্রথমে নিজের দেশের মানুষ ও অর্থনীতি বাঁচানোর চেষ্টা করতে হবে। সেক্ষেত্রে অন্য কোনো দেশ কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হলো বা হবে, সেটি তার দ্বিতীয় চিন্তা।

মুশকিল হলো, বাংলাদেশ-ভারত অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন নীতিতে ভারত বরাবরই নিজের স্বার্থে যতটা সোচ্চার থেকেছে, বাংলাদেশের স্বার্থ সেভাবে দেখেনি। অথচ আন্তর্জাতিক বা অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের নিয়মই হচ্ছে পারস্পরিক সমঝোতা এবং পানির ন্যায্য বণ্টন ও অববাহিকাভিত্তিক ব্যবস্থাপনা।

নদীর অববাহিকাভিত্তিক ব্যবস্থাপনা (River Basin Management) হলো এমন একটি সমন্বিত পদ্ধতি, যেখানে একটি নদীর অববাহিকার (যেখানে নদীর প্রধান ধারা এবং তার শাখা-প্রশাখাগুলো থাকে) প্রাকৃতিক সম্পদ, বিশেষ করে জলসম্পদ, মাটি, বন ইত্যাদি সুষম ও টেকসইভাবে ব্যবহার এবং সংরক্ষণ করা হয়।

এই ব্যবস্থাপনার মূল লক্ষ্য হলো প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবহার, যেমন: নদীর পানির পরিমাণ ও গুণগত মান বজায় রাখা এবং অববাহিকার অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদ, যেমন: বন, মাটি, জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা। অববাহিকার জলাধারে দূষণ রোধ করা এবং পানি পরিষ্কার রাখা, যাতে তা জনস্বাস্থ্য এবং পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে। অববাহিকার পানির সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বন্যা ও খরার প্রকোপ কমিয়ে আনা।

এটি এমন এক ব্যবস্থাপনা যাতে অববাহিকার পানি সম্পদ এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের জীবিকা ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো যায়। এই পদ্ধতিতে নদীর উজান থেকে ভাটি পর্যন্ত পুরো অববাহিকার প্রাকৃতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিকগুলো বিবেচনা করে একটি সামগ্রিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ-ভারতের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলোর পানি বণ্টন ও ব্যবস্থাপনায় বরাবরই এটা উপেক্ষা করা হয়েছে।

মনে রাখা দরকার, ভারতের সঙ্গে শত্রুতা করে বাংলাদেশের জন্য যেমন খুব লাভ হবে না, তেমনি বাংলাদেশকে ভুগিয়ে কিংবা অধীনস্ত করে রাখার চেষ্টা করেও ভারত কূটনৈতিকভাবে লাভবান হবে না। সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার জন্য ভারতকে যেমন বাংলাদেশের প্রয়োজন, তেমনি বাংলাদেশকেও ভারতের প্রয়োজন। সেটা শুধু নদীর পানি বণ্টন কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলাই নয়, বরং সব ক্ষেত্রেই।

অতএব এই মুহূর্তে ভারতের ত্রিপুরার যে মানুষেরা বন্যায় আক্রান্ত, তাদের জন্য আমাদের সমবেদনা। একইভাবে বাংলাদেশের মানুষকে যাতে ভারতের বন্যার কারণে ভিকটিম হতে না হয়, সেজন্য নদীর অববাহিকাভিত্তিক ব্যবস্থাপনার বিষয়টি নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে জোর আলোচনা শুরু করা উচিত। অভিন্ন নদীতে ভারত যেসব বাঁধ দিয়েছে সেগুলো নিয়ে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা করা দরকার। কেননা অভিন্ন নদীতে কোনো একটি দেশের একক খবরদারি থাকার সুযোগ কোনো নেই।

আমীন আল রশীদ: সাংবাদিক ও লেখক

Comments