বিবর্ণ বোলিং-ব্যাটিংয়ে সিরিজ হারল বাংলাদেশের মেয়েরা

ছবি: আইসিসি টুইটার

শেষদিকের লাগামহীন বোলিংয়ে কঠিন লক্ষ্য সামনে পেল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। সেটা তাড়ায় কখনোই আশা জাগাতে পারল না নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বাধীন দল। আরেকটি হতাশাজনক হারে শ্রীলঙ্কা নারী ক্রিকেট দলের কাছে সিরিজ খোয়াল তারা।

শুক্রবার কলম্বোতে তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ৪৪ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। লঙ্কানদের ৩ উইকেটে ১৫৮ রানের জবাবে তারা করতে পারে ৭ উইকেটে ১১৪ রান।

সিরিজের শুরুটা অবশ্য স্মরণীয় ছিল বাংলাদেশের মেয়েদের জন্য। টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড স্থাপন করে তারা। তবে এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ঘুরে দাঁড়িয়ে টানা দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ জেতার উদযাপনে মেতেছে শ্রীলঙ্কার মেয়েরা।

দুই দল প্রথম দুটি টি-টোয়েন্টির একটি করে জেতায় এদিনের ম্যাচ পরিণত হয়েছিল সিরিজ নির্ধারণী লড়াইয়ে। সেখানে ব্যাটিং ও বোলিং– দুই ক্ষেত্রেই বিবর্ণ ছিল বাংলাদেশের পারফরম্যান্স। লম্বা সময় পর্যন্ত বোলাররা নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন প্রতিপক্ষের রান তোলার গতি। তবে শেষ তিন ওভারে এলোমেলো হয়ে গিয়ে তারা দেন ৫৩ রান! এরপর ব্যাটারদের ঢিমেতালে ব্যাটিংয়ে লক্ষ্য থেকে অনেক দূরে থামতে হয় সফরকারীদের।

দ্বিতীয় ওভারেই বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন রুবাইয়া হায়দার। রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। আরেক ওপেনার ফারজানা হক ধুঁকছিলেন। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর প্রথম বলে শেষ হয় তার সংগ্রাম। ১০ রান করতে ২০ বল খেলে ফেলেন তিনি।

সোবহানা মোস্তারি চালিয়ে খেলছিলেন। তবে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করা হয়নি তার। ২৫ বলে সমান দুটি করে চার ও ছক্কায় ৩০ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপরে অধিনায়ক জ্যোতি ও মুর্শিদা খাতুন পরিস্থিতির দাবি মেটাতে ব্যর্থ হন। ফলে ম্যাচ থেকে বেশ আগেই ছিটকে যায় বাংলাদেশ।

চারে নামা জ্যোতি ৩৩ বলে ৩১ রান করেন। ১৪ বল মোকাবিলায় মুর্শিদার ব্যাট থেকে আসে ৮ রান। শেষদিকে দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেন কেবল রিতু মনি। ৯ বলে ১১ রান করেন তিনি। লঙ্কানদের হয়ে সমান দুটি করে উইকেট নেন উদেশিকা প্রাবোধানি, কাভ্যিয়া কাভিন্দি ও ইনোকা রানাভিরা।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কার ইনিংসে প্রথম আঘাত হানেন স্পিনার রাবেয়া খান। তিনি সাজঘরে পাঠান ৮ বলে ২ করা ভিশমি গুনারত্নেকে। আরেক ওপেনার চামারি আতাপাত্তু ছিলেন আগ্রাসী মেজাজে। তাকে থামান নাহিদা আক্তার। ২৩ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে ৩২ রান আসে লঙ্কান অধিনায়কের ব্যাট থেকে।

আনুশকা সাঞ্জিওয়ানিকে টিকতে দেননি ফাহিমা খাতুন। ৮ বলে তার সংগ্রহ ৪ রান। দশম ওভারে ৫৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর জুটি বাঁধেন হার্শিথা সামারাবিক্রমা ও নিলাকশি ডি সিলভা। তাদেরকে আর বিচ্ছিন্ন করতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা।

১৭ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ১০৫ রান। এরপর নিলাকশি তাণ্ডব চালিয়ে দলের পুঁজি দেড়শ পার করান। ১৮তম ওভারে নাহিদা দেন ১৭ রান। ফাহিমার পরের ওভার থেকে আসে ১২ রান। সবচেয়ে বড় ঝড়টা যায় অভিজ্ঞ পেসার জাহানারা আলমের ওপর দিয়ে। তার করা শেষ ওভারে লঙ্কানরা নেন ২৪ রান।

হার্শিথা ও নিলাকশি দুজনই হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়ে অপরাজিত থাকেন। হার্শিথা ৪২ বলে ৬ চারে ৫১ রান করেন। নিলাকশি ৩৯ বলে ৬৩ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন। ১৮ জীবন পাওয়া ব্যাটার মারেন সমান ৪টি করে চার ও ছক্কা। ফাহিমার করা ১৬তম ওভারে তার ক্যাচ ছেড়েছিলেন জাহানার।

৪ ওভারে ৪৪ রান দিয়ে উইকেটের দেখা পাননি জাহানারা। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের পক্ষে সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের ঘটনা এটি।

Comments

The Daily Star  | English

Eid meat: Stories of sacrifice, sharing and struggle

While the well-off fulfilled their religious duty by sacrificing cows and goats, crowds of people -- less fortunate and often overlooked -- stood patiently outside gates, waiting for a small share of meat they could take home to their families

9h ago