৮৯ বছরের মধ্যে টেস্টে বৃহত্তম জয়ের রেকর্ড বাংলাদেশের

Taskin Ahmed
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

এই টেস্টের যা অবস্থা ছিল আগেরদিন ইনিংস ছেড়ে না দিলে বিশ্ব রেকর্ডও গড়তে পারত বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষকে সবচেয়ে বড় লক্ষ্য দিয়ে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জেতার হাতছানি ছিল। রেকর্ড নিয়ে হয়ত অতটা ভাবেননি লিটন দাসরা। তবে যা হয়েছে তাতেও রেকর্ড বইয়ে উঠে গেল বাংলাদেশের নাম। আফগানিস্তানকে বিধ্বস্ত করে ১৪৬ বছরের টেস্ট ইতিহাসে রানের দিক থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৩৪ সালের পর এটাই সবচেয়ে বড়।

শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চতুর্থ দিনে অনেকটা সারার মিশন ছিল। সেই কাজে বেশি দেরি হয়নি। এক সেশনেই আফগানদের গুঁড়িয়ে ৫৪৬ রানের রেকর্ড জয় পেয়েছে লিটন দাসের দল।

৬৬২ রান তাড়ায় নেমে বাংলাদেশের বোলারদের ঝাঁজে স্রেফ ১১৫ রানে শেষ হয়ে যায় আফগানরা।  দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার তাসকিন আহমেদ। শরিফুল ইসলাম ২৮ রানে পান ৩ উইকেট।

১৪৬ বছরের টেস্ট ইতিহাসে পাঁচশো রানের বেশি ব্যবধানে জেতার নজির আছে কেবল তিনটি।

১৯২৮ সালে অস্ট্রেলিয়াকে ৬৭৫ রানে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড, ১৯৩৪ সালে ইংল্যান্ডকে আবার ৫৬২ রানে হারায় অস্ট্রেলিয়া। পরেরটিও অজিদের। ১৯১১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫৩০ রানে হারিয়েছিল তারা।

করিম জানাতের স্টাম্প উড়িয়ে দেন তাসকিন আহমেদ। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

টেস্টে রানের দিক থেকে এর আগে বাংনাদেশের সবচেয়ে বড় জয় ছিল ২২৬ রানের। ২০০৫ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে নিজেদের প্রথম টেস্ট জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।

সকালে  ২ উইকেটে ৪৫ রান নিয়ে নামা আফগানিস্তান দিনের তৃতীয় ওভারেই হারায় উইকেট। ইবাদতের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরত যান নাসির জামাল।

কিপার ব্যাটার আফসার জাজাই নেমেও প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। দারুণ ডেলিভারিতে স্লিপে তার ক্যাচ বানান শরিফুল।

অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শহিদি আগেরদিন তাসকিনের বাউন্সারে মাথায় আঘাত পেয়ে ছিটকে যান ম্যাচ থেকে। তার জায়গায় কনকাশন বদলি হিসেবে নেমে অভিষেকে সুবিধা করতে পারেননি বাহির শাহ। অ্যাঙ্গেল ও বাউন্সে বিপাকে পড়েন তিনিও। নিচু হয়ে ক্যাচ হাতে জমান তাইজুল ইসলাম। 

আফগানদের অন্যতম সেরা ব্যাটার রহমত শাহও বাউন্স সামলাতে নিজের দক্ষতা দেখাতে পারেননি। তাসকিনের বাড়তি বাউন্সে কাবু হয়ে তার ক্যাচও যায় লিটনের গ্লাভসে। তাসকিন পরের ওভারেই পান আরেক উইকেট। দারুণ ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে উড়িয়ে দেন করিম জানাতের স্টাম্প।

লাঞ্চের ঠিক আগে মেহেদী হাসান মিরাজের বল সুইপ করতে গিয়ে গ্লাভসে লাগিয়ে ক্যাচ দিয়ে দেন হামজা হোটাক। খানিক পর ইয়ামিন আহমেদজাইকে আউট করার পর  আর জাহির খানকে উপড়ে ফেলছিলেন। দুবার বেঁচে যাওয়ার পর তাসকিনের বলে হাতে ব্যথা পেয়ে আর খেলা চালাতে পারেননি তিনি। ম্যাচ শেষ হয়ে যায় তাতে।

প্রথম ইনিংসে ৩৮২ রান করার পর আফগানদের ১৪৬ রানে গুটিয়ে দিয়েই খেলা কার্যত শেষ করে দেয় বাংলাদেশের পেসাররা। 

চরম ব্যাকফুটে থেকে সফরকারীদের ফেরার সুযোগ না দিয়ে ২৩৬ রানের লিডের সঙ্গে তাদের উপর আরও ৪২৫ রান চাপিয়ে দেয় স্বাগতিকরা। দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। খরা কাটিয়ে সেঞ্চুরি পান মুমিনুল হক। 

প্রতিপক্ষকে ৬৬২ রানের অবিশ্বাস্য লক্ষ্য দিয়েই দ্রুত দুই উইকেট তুলে নিলে ম্যাচের গতিপথ পরিষ্কার হয়ে যায়। চতুর্থ দিনে কেবল আনুষ্ঠানিকতা সারল লিটন দাসের দল। ২০১৯ সালে আফগানিস্তানের কাছে বড় ব্যবধানে হারের ক্ষত দারুণভাবে ফিরিয়ে দিল স্বাগতিক দল। 

 

Comments

The Daily Star  | English

Life insurers mired in irregularities

One-fourth of the life insurance firms in the country are plagued with financial irregularities and mismanagement that have put the entire industry in danger.

7h ago