অনুশীলনে সৌম্যকে আলাদা গুরুত্ব দিলেন হাথুরুসিংহে

আফগানিস্তানের বিপক্ষে সীমিত সংস্করণের সিরিজের আগে স্কোয়াডে না থেকেও অনুশীলনে ছিলেন সৌম্য, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত আর শেখ মেহেদী হাসান। এদের মধ্যে সৌম্য যথেষ্ট গুরুত্ব পেলেন হাথুরুসিংহের।
Chandika Hathurusingha & Soumya SarkarChandika Hathurusingha & Soumya Sarkar
সৌম্যকে নিয়ে আলাদা কাজ করেছেন হাথুরুসিংহে। ছবি: বিসিবি

নেট বোলারের বলটা এক পা সামনে এসে লফটেড স্ট্রেট ড্রাইভ করলেন সৌম্য সরকার। তীব্র গতির শট থেকে শরীর বাঁচাতে উল্টে পড়ে গেলেন আম্পায়ারের পজিশনে থাকা রঙ্গণা হেরাথ। পাশেই ছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। হাত নেড়ে সৌম্যকে ইতিবাচক ঈশারা করলেন তিনি।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে সীমিত সংস্করণের সিরিজের আগে স্কোয়াডে না থেকেও অনুশীলনে ছিলেন সৌম্য, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত আর শেখ মেহেদী হাসান। এদের মধ্যে সৌম্য যথেষ্ট গুরুত্ব পেলেন হাথুরুসিংহের।

একটা শটে কোন একটা খামতি টের পেয়ে সৌম্যকে ডেকে কাছে আনলেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ। বেশ কিছুটা সময় নিয়ে তাক দিতে থাকলেন পরামর্শ। সৌম্য মাথা নেড়ে ফের ফিরে গেলেন নেটে।

এমন হয়েছে আরও একাধিকবার। নেট বোলারদের বল খেলার পাশাপাশি মোস্তাফিজুর রহমানদেরও সামলেছেন সৌম্য। সহজাত পুল শটে সাবলীল দেখা গেছে তাকে। আবার ভেতরে ঢোকা বলে ভুগেছেনও। 

বুধবার আনুষ্ঠানিক অনুশীলনের প্রথম দিনে জাতীয় দলের নিয়মিতদের বাইরে আলাদা করে নজরে ছিলেন সৌম্য। জাতীয় দলে নেই বেশ কিছুদিন। ঘরোয়া ক্রিকেটেও রান করতে পারছেন না তিনি। কোথাও রান না করায় কয়েকদিন আগে ২৬ জনকে নিয়ে শুরু হওয়া অনুশীলনেও ছিলেন না তিনি।

Soumya Sarkar
অনুশীলনে ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন সৌম্য। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

তবে আচমকাই যুক্ত হয়েছেন তিনি। ওয়ানডে দলের স্কোয়াডের সঙ্গে বাড়তি তিনজন হিসেবে চালিয়ে যাচ্ছেন কাজ। সম্প্রতি ঘোষিত ইমার্জিং এশিয়া কাপের দলেও সৌম্যকে রাখা হয়েছে। নির্বাচকদের ব্যাখ্যা টিম ম্যানেজমেন্টের চাওয়াতে আড়ালের বাইরে যেতে না দিতে সৌম্যকেও সেটআপের মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে।

সৌম্য সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০২১ সালের মার্চে। টি-টোয়েন্টি খেলছিলেন গত বিশ্বকাপে। দুই সংস্করণেই বিবর্ণ পারফরম্যান্সে জায়গা হারান। বাদ পড়ার পর ফেরার মতও কিছু করেননি।

লিস্ট-এ সংস্করণের গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ১২ ম্যাচে ২৬.৬৩ গড়ে ২৯৩ রান করেছেন, সেঞ্চুরি আর ফিফটি স্রেফ একটি করে।  গত বিপিএলে ১২ ম্যাচ খেলে স্রেফ ১০৮.০৭ স্ট্রাইকরেটে করেন ১৭৪ রান, কেবল একটাই ফিফটি আসে তার ব্যাটে।

ঘরোয়া ক্রিকেটে বলার মতো কিছু না করলেও হাথুরুসিংহের আগের মেয়াদে সৌম্য ছিলেন জাতীয় দলের টপ পারফর্মারদের একজন। ২০১৫ বিশ্বকাপে আলো ছড়ানোর পর ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা তিন সিরিজ জয়ে রাখেন বড় ভূমিকা।

আগ্রাসী ব্যাটিং, দারুণ ফিল্ডিং আর কার্যকর বোলিং দিয়ে মূল খেলোয়াড়দের একজন হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তবে ২০১৯ বিশ্বকাপ পরবর্তী সময়ে রঙ হারিয়ে ফেলেন এই বাঁহাতি। ধারাবাহিকতার অভাবে ক্রমশ আড়ালে পড়ে যান তিনি। জাতীয় দলে বাদ পড়ে আবার কয়েকবার ফিরলেও জায়গা থিতু করতে পারেননি। কোথাও কিছু না করলেও তাকে আবারও ফেরার একটা সুযোগ দেওয়া হচ্ছে আগের রেপুটেশনের কারণে।

৬১ ওয়ানডে খেলা সৌম্য ৩২.১৪ গড়ে ১ হাজার ৭৬৮ রান করেছেন ৯৭.৩৫ স্ট্রাইকরেটে। এক হাজার রান করেছেন এমন ব্যাটারদের মধ্যে ওয়ানডেতে এখনো তার স্ট্রাইকরেটই বাংলাদেশের সেরা। হাথুরুসিংহেও হয়ত সৌম্যের মাঝে এখনো দেওয়ার মতো কিছু খুঁজে পাচ্ছেন।

Comments