৬ উইকেট হারিয়ে আফগানদের সামনে অসহায় বাংলাদেশ

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

প্রথম ১০ ওভারে ফজলহক ফারুকি ও মুজিব উর রহমান জ্বলে উঠলেন। পরের ১০ ওভারে তাদের জায়গা নিলেন রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবি। আফগানিস্তানের বোলারদের তোপের মুখে অসহায় হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। রেকর্ড গড়ার চ্যালেঞ্জের বিপরীতে ভেঙে পড়ে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে তারা।

শনিবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়েও চরম ব্যর্থতায় সিরিজ হারের জোরালো শঙ্কায় রয়েছে বাংলাদেশ। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩৩১ রান তুলেছে আফগানরা। এই প্রতিবেদন লেখার সময়, টাইগারদের সংগ্রহ ২৪ ওভারে ৬ উইকেটে ৯৭ রান। ক্রিজে আছেন মুশফিকুর রহিম ২২ বলে ১৪ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ১৭ বলে ১১ রানে।

ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ইংল্যান্ডে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে টন্টনে ৩২২ রানের লক্ষ্য তারা ছুঁয়েছিল ৫১ বল হাতে রেখে। দেশের মাঠে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রান তাড়ার রেকর্ড নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। ফতুল্লায় ২০১৩ সালে ৩০৮ রানের লক্ষ্য মিলিয়েছিল টাইগাররা। তবে জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে কখনোই দেখা যায়নি ৩০০ রান তাড়া করে জয়। ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৮৭ রানের লক্ষ্যে বাংলাদেশের জয়ই এই মাঠের রেকর্ড।

নবম ওভারে দলীয় ২৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন সাকিব আল হাসান। চতুর্থ উইকেটে তাদের ৫০ বলে ৪০ রানের জুটি ভাঙলে ফের এলোমেলো হয়ে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং। এবার টানা ৩ ওভারে পড়ে ৩ উইকেট, মাত্র ৭ রানের মধ্যে।

ইনিংসের ১৭তম আক্রমণে এসেই উইকেট তুলে নেন রশিদ খান। আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদির আস্থার প্রতিদান দেন তারকা লেগ স্পিনার। তার গুগলিতে বোকা বনে বোল্ড হন হৃদয়। ক্রিজে যাওয়ার পর থেকেই ডানহাতি ব্যাটার ছিলেন নড়বড়ে। ৩৪ বলে ১৬ রানে থামে তার ভোগান্তি।

দলের বিপদে ত্রাতা হতে পারেননি তারকা অলরাউন্ডার সাকিবও। নবির করা পরের ওভারেই ফ্লিক করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি। রিভিউ নিলেও রক্ষা পাননি সাকিব। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল গিয়ে আঘাত করত লেগ স্টাম্পের বাইরের দিকে। ২৯ বলে ৩ চারে ২৫ রান আসে সাকিবের ব্যাট থেকে।

আফিফ হোসেন আরেক দফা জাগান আক্ষেপ। গত মার্চের পর এই সিরিজ দিয়ে ওয়ানডে দলে ফেরা বাঁহাতি ব্যাটার এবার স্বাদ নেন গোল্ডেন ডাকের তিক্ত স্বাদের। লেগ ব্রেক ডেলিভারি ভেবে ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রশিদের গুগলি তার ব্যাট ছুঁয়ে চলে যায় স্লিপে নবির হাতে। আগের ম্যাচে ৮ বলে ৪ রান করেছিলেন আফিফ।

বড় লক্ষ্যের পেছনে ছুটতে যেখানে দরকার ছিল শক্ত ভিত, সেখানে শুরুতেই খেই হারায় স্বাগতিকরা। মাত্র ১৫ রানের উদ্বোধনী জুটির পর ৩ উইকেট পড়ে স্কোরবোর্ডে আর ১০ রান যোগ হতেই।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মুজিব উর রহমানের বলে আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দেওয়ার পর রিভিউ নিয়ে বাঁচেন লিটন। তবে জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। ক্রিজে ছটফট করতে থাকা ডানহাতি ওপেনার পঞ্চম ওভারেই ফজলহক ফারুকির শিকার হন। পুল করতে গিয়ে শর্ট মিডউইকেটে মোহাম্মদ নবির হাতে সহজ ক্যাচ দেন লিটন। ১৫ বলে ৩ চারে তার রান ১৩।

বাঁহাতি শান্ত ৫ বলে ১ রান করে বিদায় নেন। মুজিবের ১০০ কিলোমিটার গতির ডেলিভারিটি হালকা টার্ন করে। বলের ভাষা বুঝতে গড়বড় করা শান্ত অন সাইডে খেলতে গিয়ে হন বোল্ড।

দুই বছরের বেশি সময় পর ওয়ানডে খেলতে নামা নাইম করেন হতাশ। ২১ বলে ৯ রান করে ফারুকির দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। কিছুটা লাফিয়ে ওঠা বল স্টাম্পে টেনে আউট হন বাঁহাতি ওপেনার। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে কাট করতে চেয়েছিলেন নাইম। তবে বলের কাছেই পা নেননি তিনি।

তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে আফগানিস্তান। একই ভেন্যুতে বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম ওয়ানডেতে ডিএলএস পদ্ধতিতে ১৭ রানে জিতেছিল সফরকারীরা। তাদের সামনে রয়েছে এই সংস্করণে বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজ হারানোর হাতছানি।

Comments

The Daily Star  | English

Sheikh clan’s lust for duty-free cars

With an almost decimated opposition and farcical elections, a party nomination from the ruling Awami League was as good as a seat in the parliament.

7h ago