যে পরিসংখ্যানে ওয়ানডেতে রান তাড়ায় বাংলাদেশের সেরা ইনিংস রিশাদের

রিশাদের বিধ্বংসী ইনিংসের স্ট্রাইক রেট ছিল ২৬৬.৬৬।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে লক্ষ্য তাড়ায় চাপে ছিল বাংলাদেশ। সেই মুহূর্তে ক্রিজে যাওয়া রিশাদ হোসেনের ব্যাট হয়ে উঠল উত্তাল। তাইজুল ইসলামের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পাওয়া লেগ স্পিনারের তাণ্ডবে ৫৮ বল হাতে রেখেই ওয়ানডে সিরিজ নিজেদের করে নিল টাইগাররা। তার ইনিংসটি একটি পরিসংখ্যানে বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসের শীর্ষস্থান দখল করল।

সোমবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৩৬ রান তাড়ায় বাংলাদেশের ৪ উইকেটের জয়ে রিশাদ ফের তার ব্যাটিং সামর্থ্যের ছাপ রাখেন। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৪৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। আট নম্বরে নেমে মাত্র ১৮ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ৫ চার ও ৪ ছক্কা।

রিশাদের বিধ্বংসী ইনিংসের স্ট্রাইক রেট ছিল ২৬৬.৬৬। রান তাড়ায় কোনো ম্যাচে একজন ব্যাটার ৪০ বা এর চেয়ে বেশি রান করেছেন— এই বিবেচনায় ওয়ানডেতে এটি বাংলাদেশের সেরা ইনিংস। তিনি টপকে গেছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে। ২০১৯ সালে আয়ারল্যান্ডের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফাইনালে ২১০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় মোসাদ্দেক করেছিলেন অপরাজিত ৫২ রান। ২৭ বল খেলে তিনি মেরেছিলেন ২ চার ও ৫ ছক্কা। তার ইনিংসের স্ট্রাইক রেট ছিল ১৯২.৫৯।

এদিন ৩৭তম ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের আউটের পর রিশাদ যখন ক্রিজে যান, তখন ৮৩ বলে ৫৮ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের। আপাত দৃষ্টিতে এই সমীকরণ যতটা সহজ মনে হচ্ছে পরিস্থিতি বিবেচনায় ততটা ছিল না। তবে কোনো চাপই জেঁকে বসতে দেননি ২১ বছর বয়সী ক্রিকেটার। মাঠে নেমে প্রথম বলেই লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে স্লগ সুইপে ছক্কা মারেন তিনি। পরের বলে লঙ্কানরা রিভিউ নিলেও আম্পায়ার্স কলে এলবিডব্লিউ থেকে বেঁচে যান রিশাদ।

হাসারাঙ্গার পঞ্চম বলটি মিডউইকেট দিয়ে সীমানার বাইরে পাঠান রিশাদ। এর আগে চতুর্থ ডেলিভারিতে মারেন চার। সব মিলিয়ে ওই ওভার থেকে আসে ১৬ রান। ৪০তম ওভারে হাসারাঙ্গা আক্রমণে ফিরলে আবার তার ওপর চড়াও হয়ে ২৪ রান আনেন রিশাদ। টানা দুই ছক্কায় ওভার শুরুর পর টানা তিনটি চার মারেন তিনি। এতে স্রেফ ২১ বলেই মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে তার অবিচ্ছিন্ন সপ্তম উইকেট জুটির ফিফটি পূর্ণ হয়ে যায়।

স্মরণীয় পারফরম্যান্সের সুবাদে তানজিদ হাসান তামিমকে ছাপিয়ে রিশাদ জেতেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতে ৫১ রানে ১ উইকেট শিকার করেন তিনি। এর আগে বাংলাদেশকে শক্ত ভিত গড়ে দেন ওপেনার তানজিদ। সৌম্য সরকারের কনকাশন বদলি হিসেবে সুযোগ পেয়ে ৮১ বলে ৮৪ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলেন তিনি।

গত ৯ মার্চ সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড গড়েন রিশাদ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে কোনো চার না মারলেও তিনি হাঁকান ৭ ছক্কা। দল হারলেও সাজঘরে ফেরার আগে ৩০ বল মোকাবিলায় খেলেন ৫৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস।

Comments